আপনারা নিশ্চয়ই জানেন সরকার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা/চট্টগ্রাম মহানগরীতে নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে এবং অন্যান্য জেলা/উপজেলায় ডিসেম্বরের ৩১ তারিখের মধ্যে সকল ক্যাবল টিভির পুরাতন অ্যানালগ লাইন বন্ধ করে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেও সেই ২০০৬ সালে পাশ করা ক্লিনফিড আইন অবশেষে ২০২১ সালের অক্টোবরের ১ তারিখেই বাস্তবায়ন করে ফেলে। যদিও অনেক লোকাল ক্যাবল অপারেটররা ক্লিনফিড ঠিকমতো বাস্তবায়ন করছে না। যাই হোক, সেট টপ বক্স কি এবং কেনই এটা দরকারী?

চিত্র : jadoo এর সেট টপ বক্স
সেট-টপ বক্স হলো এমন এক রিসিভার যা কেবল টিভির গ্রাহক প্রান্তে থাকে। এই রিসিভার অ্যানালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করে। এতে গ্রাহক ঝকঝকে ছবি ও ভালো মানের শব্দ উপভোগ করতে পারেন।
আমি এখানে শুধু কার কি সুবিধা এবং অসুবিধা হবে, সেটাই আলোচনা করছি।
গ্রাহকদের সুবিধা:
১. গ্রাহকরা HD (হাই ডেফিনিশন) কোয়ালিটির পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠান দেখতে পাবেন। অ্যানালগ লাইনের মতো ঝিরঝিরে ছবি হবে না।
২.পছন্দ মত অনুষ্ঠান এবং চ্যানেলের তালিকা তৈরি করা হবে, যাতে করে দর্শক তার পছন্দের অনুষ্ঠান বা চ্যানেল সহজেই দেখতে পাবেন। বিভিন্ন প্যাকেজে ভাগ করা থাকবে। মানে যারা কম চ্যানেল দেখতে চায়, তারা কম বিল দিবে। আর যারা বেশি চ্যানেল দেখতে চায়, তারা বেশি বিল দিবে। এছাড়াও বাসায় ছোট বাচ্চা থাকলে অ্যাডাল্ট চ্যানেল/প্রোগ্রাম লক্ করে রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে।
৩. বিদ্যুৎ চলে গেলেও ঘরে আইপিএস/জেনারেটর সংযোগ থাকলেও টিভি উপভোগ করা যাবে (শুধুমাত্র ডিটিএই সিস্টেম এ)।
গ্রাহকদের অসুবিধা:
১. যাদের বাসায় একাধিক টিভি রয়েছে, তারা একটু ঝামেলায় পড়বেন। কারণ তারা আগের মতো আর স্প্লিটার বসিয়ে একই লাইন একাধিক টিভির সাথে শেয়ার করতে পারবেন না। আলাদা টিভির জন্য আলাদা সেট টপ বক্স লাগবে। ফলে ডাবল বিল হবে।
২. বাসা পাল্টালে বা ক্যাবল অপারেটর পাল্টালে সেট টপ বক্স অকার্যকর হয়ে যাবে। নতুন জায়গায় গেলে আবার নতুনভাবে কিনতে হবে। অবশ্য ডিটিএইচ সিস্টেম (নিজস্ব ডিশ) হলে আবার এই ঝামেলা নেই।
৩. পুরনো আমলের টিভি মানে HDMI অথবা AV পোর্ট না থাকলে সেই টিভিতে সেট টপ বক্স কাজ নাও করতে পারে।

চিত্র : আকাশ ডিটিএইচ
সরকারের সুবিধা:
১. সেট টপ বক্স সংযুক্ত করার ফলে সরকার কেবল অপারেটরদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করতে পারবে। অনেক ক্যাবল ব্যাবসায়ী আছে যারা ২০টা বাসায় কেবল সংযোগ দেন কিন্তু সরকারকে বলেন ১০টা বাসা। এক্ষেত্রে সেটা ক্যাবল অপারেটররা করতে পারবে না।কোন এলাকায় কতজন কেবল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছেন সেটা সরকার জানতে পারবে। তাই টাকা ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থাকবে না।
২. কে কোন চ্যানেল দেখছে, সেটা সরকারিভাবে মনিটর করা সম্ভব। তখন সঠিক টিআরপি ডেটা পাবে সরকার। এর সাহায্যে সঠিকভাবে বিজ্ঞাপন এর রেট কার্যকর করা সম্ভব।
কেবল অপারেটরদের অসুবিধা:
১. যারা ২০টা বাসায় কেবল সংযোগ দেন কিন্তু সরকারকে বলে ১০টা বাসা। এক্ষেত্রে সেটা তারা করতে পারবে না। কারণ সেট টপ বক্স নিলে অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল হবে প্রক্রিয়াটা।
২. ডিভিডি চ্যানেল বা পাইরেট চ্যানেল সম্প্রচার করতে পারবে না। এমনিতেও এটা আইন অনুসারে অবৈধ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




