*** প্রথমেই বলে রাখি দিবস কেন্দ্রিক যে কোন আচার অনুষ্ঠানে ভিষন এলার্জী আমার (তবে ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসগুলোর কথা আলাদা) : এই যেমন ভালোবাসা দিবস, বাবা দিবস, মা দিবস, বন্ধু দিবস ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রিয়জনদের প্রতি ভালোবাসা, ভক্তি, শ্রদ্ধা, মায়া মমতা প্রদর্শন দিবস কেন্দ্রিক হতে হবে কেন? বছরের বাকীটা সময় ভালোবাসার খড়া চাপিয়ে, ভক্তি-শ্রদ্ধার নিকুচি করে, মায়া-মমতার হাহাকার ফেলে কেন নির্দিষ্ট দিবসের অপেক্ষা করতে হবে বুঝি না। এটা আমার যুক্তিতে মেলে না, বিশ্বাসের সাথেও যায় না।
*** আমার মতে, সুস্থ্য পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ কোন মানুষের এইসব দিবসের প্রয়োজন নাই। কারন বাবা-মা আত্মীয় স্বজন আপনার হাতের কাছেই থাকছে (একসাথে থাকা না হোক)। গ্রামীন ফোনের বদৌলতে (দুরত্ব যতই হোক কাছে থাকুন) আপনি ইচ্ছা করলেই আপনার নিকটাত্মীয়দের সাথে দুরত্ব ঘুচাতে পারেন। এক্ষেত্রে আমাদের স্বদিচ্ছাই যথেষ্ট। কিন্তু বাস্তবৃদষ্টে মনে হয় আত্মীয় বন্ধুবান্ধবদের সাথে দুরত্ব ঘুচানোর পরিবর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই হা-হুতাশ করতে বেশি পছন্দ করছি আমরা।
*** সর্বশেষ গত 10 মে 2020 তারিখে মা দিবস চলে গেল। মাকে নিয়ে অনেকেই আবেগঘন স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। লক্ষ্য একটাই আপনি মাকে কতটা ভালবাসেন তা ফেসবুকবাসীকে জানানো। ভাল কথা, জানলাম আপনার মায়ের প্রতি ভালবাসার কথা। তাতে আমার বা আপনার লাভ কি হলো? আপনি যাকে এতটা সম্মান করেন, ভালোবাসেন সে কি বিষয়টা জানে বা অনুভব করে। ভালোবাসা, শ্রদ্ধা-ভক্তি জানানোর বিষয়ও না, এটা হলো অনুভবের বিষয়, উপলব্ধির ব্যপার। হিসাব মিলিয়ে দেখুন, গত এক বছরে এমন কি কোন কাজ করেছেন যাতে আপনার মা কষ্ট পেয়ে থাকতে পারে, আপনার আচরনে তার মন খারাপ হতে পারে?
*** অনেকেই হয়তো জানেন না, অনুভবও করেন না, সন্তান হিসেবে পিতা-মাতা আমাদের কাছে কি আশা করে আর কতটুকু আশা করে। অস্পষ্ট ধারনার কারনেই পাশ্চাত্যের (যেখানে বৃদ্ধাশ্রম অগনিত) ফেরি করা বাবা দিবস, মা দিবস পালনের জন্য উঠেপড়ে লাগেন। সোজা কথায় লোক দেখানো ভন্ডামীতে মেতে ওঠেন। বাবার জন্য, মায়ের জন্য কি বোর্ডের ভার্চুয়াল যুদ্ধে নেমে পড়েন। সবচেয়ে বড় কথা, এসব দিবস উদযাপন আর বিলিয়ন ডলারের বানিজ্য যে একই মুদ্রার দুই পিঠ এ কথা বোঝার সাধ্য কয়জনের আছে?
https://bit.ly/2WtxhrY
https://bit.ly/2WwXrtC
https://bit.ly/2WYxEd5