✍️ সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ এর দাবীতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। তবে আমি মনে করি, চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকেও আরো কমানো উচিত, যাতে ছেলেমেয়েরা ক্যারিয়ারের দিকে লক্ষ্য রেখে পড়াশুনায় আরো সিরিয়াস হতে পারে। কি অবাক হচ্ছেন? আমার মতে, সরকারি চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২৮ করা উচিত।
✍️ সত্যি বলতে আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যপ্তি আরো কমানো উচিত। গ্রাজুয়েশনের জন্য ২৪/২৫ বছর বয়স পর্যন্ত পড়ালেখার কোনো মানে নেই। মানে কথাটা এইরকম যে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন কিংবা বিশেষায়িত সাবজেক্টে সবার পড়ার দরকার নাই। একটু ভেবে বলুন, সবার কি আসলেই স্নাকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রী অর্জন করা প্রয়োজন? আমরা যারা অফিস-আদালতে, ফ্যাক্টরীতে, মাঠে, ময়দানে কাজ করি আমাদের সবারই কি সর্বোচ্চ একাডেমিক নলেজ দরকার পড়ে? যদি দরকার না হয় তাহলে সবাইকে গণহারে স্নাতক করানোর মানে কি?
✍️ আমার মতে, সকল শ্রেণীর চাকরিতে প্রবেশের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি হওয়া উচিত। সুচিন্তিত উদ্যোগ নিলে এইচএসসি সিলেবাসেই দুনিয়ার যাবতীয় জ্ঞানের বেসিক ধারণা পাওয়া সম্ভব। সুতরাং সাধারণ পড়াশোনার ব্যপ্তিটা এইচএসসি পর্যন্ত রাখাটাই যুক্তিযুক্ত। আমাদের দেশে স্নাতক বা স্নাকোত্তরের অর্জিত জ্ঞান কোন কোন পেশায় সফলভাবে প্রয়োগ হয়? হয়না। এজন্যই এখন অহরহই দেখা যায় মাস্টার্স করে ফুটপাতে হকারী ব্যবসা কিংবা অনলাইনে মধু ও কালোজিরার তেল বেচতে। আমি কোন পেশাকে ছোট করছি না। তবে এখানে ব্যাপকভাবে একাডেমিক অর্জনের অসাড়তা (উপযোগহীনতা) অনুভব করছি।
✍️ এইচএসসি শিক্ষাগত যোগ্যতায় প্রথম শ্রেণীর চাকুরীতে প্রবেশ করলেও নতুন উদ্যম ও কর্মস্পৃহার কারনে তরুন পেশাজীবীরা অচিরেই পেশাগত দক্ষতা অর্জন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। এ জন্য প্রয়োজনে প্রবেশনারি পিরিয়ডে পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক/স্নাকোত্তর করানো যেতে পারে। আমাদের দেশের মিলিটারিতে যেভাবে এমআইএসটি কিংবা বিইউপিতে স্নাতক ও স্নাকোত্তর করানো হয়ে থাকে। এই অনুশীলন যদি দেশের অন্যান্য বেসামরিক চাকুরীজীবীদের পেশাগত উ্ন্নয়নের জন্য করা হয় তাহলে এর সুফল ভোগ করা সম্ভব হবে।
✍️ প্রায় ২০ বছরের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেও যদি কেউ তার যোগ্য পেশা নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এর চেয়ে বড় হতাশার আর কি হতে পারে? এখন আমার প্রস্তাব হচ্ছে, এই পেশা নির্বাচনী প্রক্রিয়াটা আরো আগে কেন শুরু করছি না আমরা? আমি চাই ১২ বছরের শিক্ষা সমপনান্তে ছেলেমেয়েদের নিজ পেশা নির্বাচনের অপশন দিতে। তার আসল দক্ষতা কোথায় তাকে নিজেকেই তা আবিষ্কারের সুযোগ দিতে। পেশা নির্বাচন ব্যতিরেখে শুধুমাত্র স্নাতক ও স্নাকোত্তর ডিগ্রীর পিছনে সময় নষ্ট করার কোন মানে হয় না।
✍️ পড়ালেখা নিয়া আমাদের দেশে এই যে মিসকনসেপশন, এর দায় কি শুধু স্টুডেন্টদের? এর দায় আসলে অভিভাবকদের, সমাজের এবং রাষ্ট্রের। সর্বোপরি শিক্ষা ব্যবস্থার গলদের কারনেই আমাদের সমাজে বেকারত্ব, হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৩৫ এর আন্দোলন হালে পানি পাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




