সং গৃ হি ত
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সমগ্র সৃস্টির মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত করা হয়েছে মানুষকে। যে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষ অন্যান্য প্রাণী হতে আলাদা তা হল তার চিন্তাশক্তি।এ ছাড়া অন্যান্য প্রানীর সাথে মানুষের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।তাই নিজের মধ্যে জীবন সম্পর্কে একটি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি যা কিনা শুধুমাত্র একটি সঠিক চিন্তার মধ্যে দিয়ে সম্ভব তার সূত্রপাত ঘটানোর জন্য মানব প্রকৃতি (reality) সম্পর্কে ধারনা লাভ করা প্রয়োজন।
মানুষের জীবনী শক্তি (life energy) দুই ধরনের উপাদান নিয়ে গঠিত। যেমন- জৈবিক চাহিদা (organic need) এবং প্রবৃত্তি (instinct)।
জৈবিক চাহিদা (organic need) হল সেই সকল প্রয়োজন যেগুলো পূর্ণ না হলে মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না। যেমন- খাদ্য, পানি, ঘুম, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া ইত্যাদি।
প্রবৃত্তি (instinct) মূলত তিন ধরনেরঃ বেঁচে থাকার প্রবৃত্তি (survival instinct), বংশবৃদ্ধির প্রবৃত্তি (procreational instinct), উপাসনার প্রবৃত্তি (religeous instinct)।
টিকে থাকার প্রবৃত্তি(survival instinct) হতে উৎসারিত কাজগুলোঃ ভয়, মালিকানার ইচ্ছা, সমাজবদ্ধ হয়ে থাকা, অহমিকা, জাতীয়তাবাদ ,কর্তৃত্ব স্থাপনের মোহ ইত্যাদি। বংশবৃদ্ধি বা প্রজনন প্রবৃত্তি হতে মানুষের পারিবারিক আবেগ গড়ে ওঠে। যেমন -বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ , বাবা-মার প্রতি সম্মান , সন্তানের প্রতি ভালবাসা ইত্যাদি। মানুষ তার উপাসনার প্রবৃত্তির কারণেই সৃষ্টির পর থেকে কারো না কারো উপাসনা করে বা নিজের চেয়ে উন্নত কারো নিকট আত্মসমর্পণ করতে চায়। তাই পৃথিবীতে এমন কনো জাতি পাওয়া যায় না যারা উপাসনা করে না।
জৈবিক চাহিদা ও প্রবৃত্তির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে জৈবিক চাহিদা পূরণ না হলে কোন প্রাণী বাঁচে না, কিন্তু প্রবৃত্তি পূরণ না হলে বাঁচতে পারে। তবে এই প্রবৃত্তি গুলো পূরণ না হলে মানুষ মানসিক প্রশান্তি লাভ করতে পারে না। জৈবিক চাহিদা ও প্রবৃত্তিগুলো মানুষের অন্তর্নিহিত গুনাবলী হিসেবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ বলেন,” (হে নবী), তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। যিনি (সৃষ্টিকূলকে) তৈরী করেছেন, অতঃপর তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন।“ –( সূরা আল আলাঃ ১-২।)
অন্যান্য বস্তুর যেমন অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য থাকে তেমনি এগুলো হলো মানুষের বৈশিষ্ট্য। মানুষের প্রতিটি কাজ এই বৈশিষ্ট্যগুলো হতে উৎসারিত। এগুলো পূর্ণ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পারস্পারিক সর্ম্পক গড়ে ওঠে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও বিদ্যমান, অন্যান্য প্রাণী এবং মানুষ মধ্যে এ প্রবৃত্তিগুলো পূরণের উপায়ের ধরনের ক্ষেত্রে মৌলিক পার্থক্য দেখা যায়। অন্যান্য প্রাণীরা এই প্রবৃত্তি পূরণের উপায়গুলো নিজের ইচ্ছায় নির্ধারণ করতে পারে না বরং সবসময় একই রকম থাকে তার কারণ তাদের চিন্তাশক্তি নেই।কিন্তু মানুষ তার চিন্তাশক্তি ব্যবহার করে এই প্রবৃত্তিগুলো পূরণের পদ্ধতি নির্ধারণ করে থাকে।
বিভিন্ন মানূষের দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন হওয়ার কারণে তাদের প্রবৃত্তি পূরণের উপায়ের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়।কোন জাতির দৃষ্টিভঙ্গি হতে উদ্ভুত আবেগ তাদের মধ্যকার সম্পর্ক বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করে এবং উপায়গুলোর সমন্বয়ে একটি ব্যবস্থা গড়ে ওঠে যার মাধ্যমে তারা পরিচালিত হয়।যেমন- পুজিঁবাদী সমাজে কোন ব্যক্তি যেকোনো কিছুর মালিক হতে পারেঃ প্রাকৃতিক সম্পদ সহ যেকোন কিছু। সমাজতান্ত্রিক সমাজে ব্যক্তি মালিকানা নিষিদ্ধ। ইসলামী সমাজে মানুষ কোন প্রাকৃতিক সম্পদের মালিক হতে পারবে না কিন্তু ব্যক্তি মালিকানা নিষিদ্ধ নয় অর্থাৎ মালিকানার খাতগুলো নির্দিষ্ট।
প্রবৃত্তি পূরণের কোন উপায়গুলো সঠিক তা নির্ধারণ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন কারণ এর উপর ভিত্তি করেই একটি সঠিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।এই উপায়গুলোর উৎস দুটি হওয়া সম্ভব -মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত অথবা ঈশ্বর প্রদত্ত।
স্বাভাবিকভাবেই, মানুষ তার পরিবেশ, প্রবৃত্তি, অবস্থা ইত্যাদি কারণে সীমাবদ্ধ তাই উপায়গুলো নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সে অবশ্যই সীমাবদ্ধতা ও সুবিধাবাদীতার পরিচয় দিবে।
আল্লাহ বলেন,” এমনতো হতে পারে যা তোমাদের ভালো লাগে না, তাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, আবার এমন কোন জিনিস যা তোমাদের খুবই ভালো লাগবে, তা হবে তোমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আল্লাহ সবচাইতে ভাল জানেন, তোমরা কিছুই জানো না।(সূরা বাকারাহঃ২১৬)
তাই উৎস যদি মানব মন হয় তবে তা অবশ্যই ভুল হবে।সুতরাং উৎস হবে এমন যার কনো সীমাবদ্ধতা নেই।আর তিনি হলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা।একমাত্র তার নিকট হতে আমাদের ভালো -মন্দ, সঠিক -ভুল এর সংজ্ঞা নিতে হবে এবং সঠিক পথে চলার জন্য তার আদেশ নিষেধকে মাপকাঠি হিসেবে ধরতে হবে ।
“ শপথ মানব প্রকৃতির (নাফস) এবং যিনি তার যথাযথ বিন্যাস স্থাপন করেছেন, অতঃপর তিনি তাকে কোনটি তার জন্য মন্দ এবং কোনটি তার জন্য ভাল তা প্রদর্শন করেছেন ” (৯১ ,৭ -৮)
চিন্তা করার পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে চিন্তাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।যথা-বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে চিন্তা(rational thinking),বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিন্তা(scientific thinking),যৌক্তিক চিন্তা(logical thinking)।
বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা(Rational thinking):
তাই জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রয়োজন একটি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি।আর এই দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠে সঠিক চিন্তার মাধ্যমে। সুতরাং, চিন্তা এবং কিভাবে মানুষ চিন্তা করে তা অনুধাবন করা অবশ্যম্ভাবী। যে বিষয়টি ব্যতীত মানুষের চিন্তার উদ্ভব হয় না তা হল বস্তু বা বাস্তবতা(reality)। তাই চিন্তার জন্য যে সকল উপাদান প্রয়োজন তার মধ্যে একটি হল বস্তু বা বাস্তবতা (Reality)। বাস্তবতা ২ রকম হতে পারে। যেমনঃ প্রথমত বস্তুগত উপাদান (Tangible Reality),অবস্তুগত উপাদান (Intangible Reality)।
শুধুমাত্র কোন উপাদানের অস্তিত্বই মানুষের মধ্যে চিন্তার উদ্রেগ ঘটায় না বরং বাস্তবতাকে অনুভব করা প্রয়োজন, যা মানুষ তার ইন্দ্রিয়ের(sense) মাধ্যমে করে থাকে।বাস্তবতা এবং অনুভব করা এই দুই এর সাথে চিন্তা করার জন্য প্রয়োজন পূর্বলব্ধ জ্ঞান(previous information)।মানুষের মস্তিষ্ক কনো বাস্তবতার উপলব্ধি করে তখনিই চিন্তা করতে পারে যখন তার সাথে পূর্বলব্ধ জ্ঞান এর সমন্বয় ঘটে।এই ধরনের চিন্তা পদ্ধতিই হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা।
উদাহরণসরূপ, কোন ব্যাক্তিকে দুটি বই দেওয়া হলো ,একটি বাংলা ও অন্যটি আরবী।বইটি বা বইয়ে ছাপানো লেখা হচ্ছে বাস্তবতা।এখন মানুষ তার ইন্দ্রিয় বা দর্শনশক্তির মাধ্যমে এই বাস্তবতা হতে অনুভূতি গ্রহণ করতে পারে কিন্ত শুধুমাত্র ইহা তার মধ্যে কোন চিন্তা তৈরী করবে না যদি না ভাষা সম্পর্কে তার কাছে কোন পূর্বলব্ধজ্ঞান না থাকে।সুতরাং, লোকটির যদি বাংলা সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকে তবে সারা জীব্ন অনুভূতি গ্রহণ করলেও বা দেখলেও কোন চিন্তা করতে পারবে না।
অনূরূপ, আরেকটি শিশুর কথা বিবেচনা করি যার ইন্দ্রিয় সমূহের মাধ্যমে অনূভুতি গ্রহণের ক্ষমতা আছে কিন্তু কোন পূর্বলব্ধ জ্ঞান নেই। এখন যদি তার সামনে একখন্ড স্বর্ণ এবং একখন্ড তামা রাখি ও তার ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বস্তুগুলো অনুভব করাই, শিশুটি বস্তুগুলো বুঝতে পারবে না।যদি এ সম্পর্কে তাকে কিছু জ্ঞান দেওয়া হয় তবে সে বোঝার জন্য জ্ঞান ব্যবহার করতে পারবে।যদি শিশুটিকে বিশ বৎসর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত কোনরূপ জ্ঞান না দিয়ে রেখে দেওয়া হয় তবে সে তার প্রথম দিনের অবস্থায় রয়ে যাবে যদিও বা তার মস্তিষ্কের জৈবিক বয়স বৃদ্ধি হয়েছে।
মানুষের কিছু আচরণ কেবলমাত্র প্রবৃত্তিগত ও জৈবিক চাহিদার প্রতিক্রিয়া মাত্র, যা পশুদের মাঝেও উপস্থিত।কিন্তু কোন বুদ্ধিবৃত্তিক প্রক্রিয়া নয়। যেমন – একটি শিশুকে বার বার আপেল ও পাথর দেওয়ার ফলে সে বুঝতে পারে আপেল খাওয়া যায় ও পাথর খাওয়া যায় না। এভাবে গরু বুঝতে পারে ঘাস খাওয়ার উপযুক্ত কিন্তু মাটি নয়।এ ধরনের পৃথকীকরণ চিন্তার মাধ্যমে হয় না বরং প্রবৃত্তির জৈবিক চাহিদার প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে।
অনূরূপভাবে , অবস্তুগত উপাদান যেমন -একটি সমাজ ভাল বা মন্দ এ বিষয়ে ক্ষেত্রে প্রথমে সমাজের বাস্তবতা সম্পের্কে ভালভাবে অনুভূতি গ্রহণ করতে হবে এবং ভালমন্দ বিষয়ে পূর্বলদ্ধ জ্ঞান থাকতে হবে। এর মধ্যে দিয়ে সিদ্ধান্তে পৌছাতে হবে।একইভাবে , কোন জীবন আদর্শ সঠিক তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে চিন্তা করতে হবে।
বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার মাধ্যমেই কেবলমাত্র সকল বিষয়ে সঠিক চিন্তার উন্মেষ ঘটানো সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি (Scientific thinking):
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিন্তা বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা কাছাকাছি কিন্ত এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে।এ পদ্ধতিতে কোন একটি বিষয়ের সরূপ বা প্রকৃতি নির্ণয়ে মনোনিবেশ করা হয় কিন্ত কোন সার্বিক চিন্তা করা হয় না।আবার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় একটি অংশ থাকে যা হল ভূল -ত্রুটি নির্ণয়।এ পদ্ধতিতে শুধুমাত্র বস্তুগত উপাদান নিয়ে চিন্তা করা যায় কিন্তু অবস্তুগত উপাদান নিয়ে চিন্তা করা যায় না।
যৌক্তিক পদ্ধতি (Logical thinking):
যৌক্তিক চিন্তার ক্ষেত্রে যে কাঠামোর অনুসরণ করা হয় তার দুটি অংশ থাকে।একটি অংশে থাকে একটি সাধারণ নিয়ম ও অপর অংশে থাকে যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে তা।উদাহরন – টেবিল কাঠের তৈরী, কাঠ আগুনে পুড়ে।সুতরাং, টেবিলটি আগুনে পুড়ে।এ ধরনের চিন্তার ক্ষেত্রে বস্তু বা বাস্তবতার বিশ্লেষণের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয় না বরং চিন্তার কাঠামোকে অপরিবর্তনশীল ধরা হয়।
যৌক্তিক চিন্তার ক্ষেত্রে সবসময় সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছানো সম্ভব নয়।যা যুক্তিবিদ্যার ভাষায় ভ্রান্তযুক্তি নামে পরিচিত।
যেমন-গরু ঘাস খায়, আমরা গরু খাই।সুতরাং, আমরা ঘাস খাই।
কোরআন হচ্ছে আল্লাহর বাণী; আল্লাহর বাণী যা তাঁর গু্ণ এবং তা চিরন্তন; সুতরাং ,কোরআন শাশ্বত বা চিরন্তন।অনুরূপভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছেন, আরবী ভাষা হচ্ছে সৃষ্টি বা সৃষ্ট, সুতরাং কোরআন হচ্ছে সৃষ্টি বা সৃষ্ট।
মানুষ বিভিন্ন কারণে টাকা ধার নেয়। হজ্জ একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় যা মুসলিমদের পালম করতে হয়। অতএব হজ্জ পালনের জন্য টাকা ধার নেয়া উচিত।
প্রতেক সৃষ্টি চিরন্তন নয়। তাই জান্নাত ও জাহান্নাম আল্লাহর সৃষ্টি। সুতরাং জান্নাত বা জাহান্নাম চিরন্তন নয়।
আমেরিকা ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর মাঝে একতা চায় না। বৃটেন এবং আমেরিকার নীতি একই। সুতরাং বৃটেনও ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর মাঝে একতা চায় না।
উপরোক্ত সকল সিদ্ধান্ত ভুল। কারণ যৌক্তিক চিন্তার ক্ষেত্রে কোন বাস্তবতাকে বিশ্লেষন করা অনুধাবন করাকে গুরুত্ব দেয়া হয় না বরং সাধারণ একটি নীতির আওতায় দুটি বিষয়ের মধ্যে তুলনা করে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
একইভাবে চিন্তা করার পরিধি বা ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে তিন ধরনের চিন্তা রয়েছে। যথা-অগভীর চিন্তা(shallow thinking),গভীর চিন্তা(deep thinking), গভীর-আলোকিত চিন্তা(deep enlighten thinking)।
অগভীর চিন্তার অধিকারী ব্যক্তিরা কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করতে চায় না।বরং,জীবিকা ও প্রবৃত্তি পূরণের আকাঙ্ক্ষা তার সকল কাজের উৎস হয়।এরা, অন্ধভাবে প্রবৃত্তির অনুসরণ করে ও হুজুগের বশে সব কিছু করে।
গভীর চিন্তার অধিকারী ব্যক্তিরা কোন বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং শুধুমাত্র বিষয়টিকে অনুধাবনের মধ্যেই নিজের চিন্তাকে সীমাবদ্ধ রাখে।যেমন-বৈজ্ঞানিক চিন্তা।
গভীর-আলোকিত চিন্তার অধিকারী ব্যক্তিরা কোন বিষয় নিয়ে শুধুমাত্র গভীরভাবে চিন্তা করে বিষয়টিকে অনুধাবনের মধ্যেই নিজের চিন্তাকে সীমাবদ্ধ রাখে না বরং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে বিষয়টিকে নিয়ে একটি সার্বিক চিন্তা করে।
উদাহরণস্বরূপ-ধরে নিলাম কোন ব্যক্তি ঘরের জন্য একটি টেবিল কিনতে চায়।এখন সে আসবাবপত্রের দোকানে গেল ও একটি টেবিল কিনল।লোকটি যদি অগভীর চিন্তার মানুষ হয় তবে শুধুমাত্র টেবিলটি দেখেই কিনে ফেলবে এবং প্রকৃতপক্ষে টেবিলটি ভাল কি মন্দ তা বিচার করবে না।গভীর চিন্তার ব্যক্তি টেবিলটির উপাদান ভালভাবে বিশ্লেষনের মাধ্যমে তা ভাল কি মন্দ সিদ্ধান্ত নিবে কিন্তু সে যখন টেবিলটি বাসায় নিয়ে আসল তখন এমন সমস্যায় পড়ল যা সে আগে চিন্তা করে নাই।যেমন-টেবিলটি তার ঘরের দরজা দিয়ে ঢুকছে না অথবা তার রুমের সাথে মানানসই হচ্ছে না।অন্যদিকে, একজন গভীর-আলোকিত চিন্তার ব্যাক্তি শুধুমাত্র টেবিলটির উপাদান ভালভাবে বিশ্লেষনের মাধ্যমে তা ভাল কি মন্দ সিদ্ধান্ত নিবে না বরং তা তার রুমের সাথে মানানসই হচ্ছে কিনা তাও চিন্তা করে নিবে অর্থাৎ, বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে একটি সার্বিক চিন্তা করবে।এভাবেই, একজন মানুষ আলোকিত চিন্তার মধ্য দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





