পরিচিতি :
জাম এর ইংরেজি নাম Java plum, Malabar plum এবং বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium cumini যা Myrtaceae পরিবারভুক্ত একটি ফল। এই জামকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। সাধারণত জাম খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। জাম হালকা টক ও মিষ্টি হয়ে থাকে। এছাড়াও জাম কবিরাজী এবং ইউনানী চিকিৎসাতেও ব্যবহৃত হয় ভারত উপমহাদেশ, চীন ও ইন্দোনেশিয়াতে। জামগাছ সাধারণত ৩০ মিটাার বা ৯৮ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। জামের উৎপত্তিস্থল ভারতীয় উপমহাদেশ এছাড়াও দক্ষিন এশিয়া মিয়ানমার শ্রীলংকা ও আন্দামান দীপপুঞ্জে প্রচুর পরিমানে জাম উৎপন্ন হয়। এপ্রিল মাসে জামগাছে ফুল ধরে আর মে-জুন মাসে জাম পরিপক্ব হতে শুরু করে এবং খাওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়।
জামের পুষ্টি উপাদানসমূহ :
আকারে ছোট হলেও জাম পুষ্টিমানে পরিপূর্ণ। প্রতি ১০০ গ্রাম জামে পুষ্টিমান হলো - শক্তি ৬০ কিলোক্যালরী, শর্করা ১৫.৫৬ গ্রাম, স্নেহ পদার্থ ০.২৩ গ্রাম, প্রোটিন ০.৭২ গ্রাম, ভিটামিন এ ৩ IU, থায়ামিন (বি১) ০.০০৬ মিগ্রা, রিবোফ্লাভিন (বি২) ০.০১২ মিগ্রা, নায়াসিন (বি৩) ০.২৬০ মিগ্রা, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫) ০.১৬০ মিগ্রা, ভিটামিন বি৬ ০.০৩৮ মিগ্রা, ভিটামিন সি ১৪.৩ মিগ্রা, ক্যালসিয়াম ১৯ মিগ্রা, লৌহ ০.১৯ মিগ্রা, ম্যাগনেসিয়াম ১৫ মিগ্রা, ফসফরাস ১৭ মিগ্রা, পটাসিয়াম ৭৯ মিগ্রা, সোডিয়াম ১৪ মিগ্রা এবং পানি ৮৩.১৩ গ্রাম।
সুস্বাস্থ্য গঠনে পুষিট উপদানসমূহের অবদান :
১) হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় - জামে উপস্থিত পটাসিয়াম এবং ফসফরাসজাতীয় প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানসমূহ ধমনীগুলোকে শক্ত হতে দেয় না ফলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। ২) রক্ত পরিশোধনে - জামে আয়রন এবং ভিটামিন সি থাকে যা রক্ত পরিশোধন করতে সহায়তা করে। ৩) শরীর ঠান্ডা রাখতে - জামে ফসফরাস এবং আয়োডিন আছে যা গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। ৪) রোগ প্রতিরোধে - জামে ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ এবং বি-৬, ভিটামিন সি এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা ফ্রি রেডিক্যালের আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।৫) হাড় শক্তিশালী করতে - জামে আছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম আছে যা হাড় এবং দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে। ৬) ক্যান্সার প্রতিরোধে - জামে থাকা পলিফেনলের কারণে এটি অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত যা ক্যান্সার সারাতেও ভুমিকা রাখে। ৭) সংক্রমণ রোধে - জামে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফেকটিভ এবং অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া বৈশিষ্ট্য যা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোধে কাজ করে। ৮) হজমক্ষমতা বাড়াতে - জামে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার আছে, যা লিভারকে সক্রিয় করে এবং হজমক্ষমতা বাড়ায় এবং কোষ্ঠ কাঠিন্যের মতো সমস্যাও দূর করে। ৯) ব্রণ দূর করণে - জামে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা ব্ল্যাকহেডস, পিম্পলস এবং ব্রণসহ ত্বকের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভুমিকা রাখে।
তথ্যসূত্র : অন্তর্জাল/উইকিপিডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:৫১