কেমন আছি আমি
ডাঃসোহেল
প্রাণঘাতী সেপটিসেমিয়া আর ফেলসিফরামের বিরুদ্ধে লড়াই করে এখনও সুস্থ হতে পারলাম না।হাসপাতালে থাকাকালীন সময় গুলো সময়ে মনে হয়েছে আর ফিরব না এই সুন্দর পৃথিবীর সব সুন্দর মানুষ গুলোর কাছে।মনে হয়েছে আমার মত একজন অসুন্দর মানুষ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলে বুঝি পৃথিবীর খুব বেশি ক্ষতি হবে না।একেকটি রির্পোট যখন আসতে লাগল তখন নিজ চোখে রিপোর্ট গুলো পড়ে খুব বেশি আশাবাদী আমি ছিলাম না।তবে যাকে বেশি মনে পড়েছিল সে হলো আমার প্রিয়তম সন্তান।যার সাথে আমার হাসতে খেলতে সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে।মনে হচ্ছিল আমার লেখালেখি আর আমার সন্তান যেন আমার জন্য অঝোরে কাদঁছে। আর নিজের প্রতি সবচেয়ে বেশি ঘৃণা হত আমি একজন চিকিৎসক বলে।কারন যখন হাসপাতালে প্রায় ক্ষীণ প্রাণ নিয়ে কোন কথা বলতে পারছি না।আমার চারপাশে যখন স্বজনদের কান্নার আওয়াজ একটু একটু শোনতে পারছি ঠিক সেই মূহর্তেও হাসপাতাল থেকে এক ডাক্তার ভাই মেসেজ পাঠাচ্ছে আমার ডিউটি ম্যানেজ করার জন্য।হায়রে আমার চিকিৎসক সমাজ।যেখানে চিকিৎসকের জীবন বিপন্ন সেখানে উনি ম্যাসেজ পাঠান ডিউটিতে না গেলে হাসপাতালের রোগী মারা গেলে এর দায়ভার কে নিবে।সবচেয়ে অবাক হয়েছি উনি আমার রোগটি সম্পর্কে জেনে কিভাবে আমাকে আবার ডিউটি ম্যানেজ করতে বলেন।আজ দুইদিন হলো হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলাম।এখনও খেতে পারি না।শরীরটা যেন একেবারে নিস্তেজ হয়ে গেছে।তবু কোর্স বাচানোর জন্য আজ সাহস করে সিক বেডে পরীক্ষা দিতে গেলাম।স্যারকে সব কাগজ দেখালাম উনি পরীক্ষা দিতে দিলেন।এই অসুস্থায় যাওয়া হয়নি বই মেলায়।কেনা হয়নি প্রিয় বইগুলো।আজ পনেরওদিন হলো দেখতে পারি না প্রিয় সন্তানের মুখ।তবু আল্লাহর কাছে হাজারও শোকরিয়া যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং এই প্রানঘাতী রোগ থেকে আস্তে আস্তে সুস্থ করে তুলছেন-সবাই দোয়া করবেন