somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন বীরঙ্গনার কথা

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
১৯৭১ সালে যিনি ছিলেন এক নির্ভীক যোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, তিনিই আজ স্বাধীন দেশে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি জয়নব বেগম। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পরে জয়নব বেগম এখন মৃত্যু পথযাত্রী। জীবনের শেষ সময়ে এসেও অভাব-অনটনের কারণে ভালো খাবার এবং শারীরিক চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত এই রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার পৌরসভা সংলগ্ন বাওয়ার কুমার জানী গ্রামে জয়নব বেগমের বাড়ি।

বাওয়ার কুমার জানী গ্রামে সরেজমিন গিয়ে বীরাঙ্গনা জয়নব বেগমের সঙ্গে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে সে দিনের স্মৃতি তুলে ধরেন। যুদ্ধের আগেই তাঁর স্বামী মারা যান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর আব্দুল সিদ্দিকীর কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগ দিয়ে ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে নামেন জয়নব বেগম।

১৯৭১ সালেন ১৭ই নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী যখন ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত তখন জয়নব বেগমের গোপন সংবাদের উপর ভিত্তি করেই কাদেরিয়া বাহিনী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন ব্রিজ বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। নিজের জীবন বাজি রেখে জয়নব বেগম মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গোপন সংবাদ প্রেরণ, খাবার সংগ্রহ, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা সহ নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। নির্যাতিত হয়েছেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক। তালিকাভুক্ত এই মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগম সরকারি দেওয়া মাসিক ভাতা ১৫০০ টাকা ছাড়া আজ পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাননি। স্থানীয় প্রশাসনও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগমের জন্য কোন সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। মির্জাপুর উপজেলার একমাত্র তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগম। তারপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলার কারণে অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মরতে চলেছেন জয়নব বেগম। প্রশ্ন করেছিলাম, জীবনের কাছে কী চান তিনি? ক্ষোভের স্বরে বললেন, মৃত্যুর আগে ঘৃণ্য পশু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে চান। এদিকে বীরাঙ্গনা এই মুক্তিযোদ্ধার কেউ খোঁজ খবর না রাখলেও একটি মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো মির্জাপুর প্রেস ক্লাব। শেষ জীবনের জয়নব বেগমকে প্রেসক্লাব প্রাণঢালা অভিন্দন ও সংবর্ধনা দিয়েছে। অনুষ্ঠানে জয়নব বেগম বলেন এটাই আমার জীবনের বড়ো পাওয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন ভাষা সৈনিক ও একুশে পদক প্রাপ্ত প্রতিভা মুৎসুদ্দি।

মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, ইত্তেফাক
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×