বাওয়ার কুমার জানী গ্রামে সরেজমিন গিয়ে বীরাঙ্গনা জয়নব বেগমের সঙ্গে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে সে দিনের স্মৃতি তুলে ধরেন। যুদ্ধের আগেই তাঁর স্বামী মারা যান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর আব্দুল সিদ্দিকীর কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগ দিয়ে ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে নামেন জয়নব বেগম।
১৯৭১ সালেন ১৭ই নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনী যখন ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত তখন জয়নব বেগমের গোপন সংবাদের উপর ভিত্তি করেই কাদেরিয়া বাহিনী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন ব্রিজ বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। নিজের জীবন বাজি রেখে জয়নব বেগম মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে গোপন সংবাদ প্রেরণ, খাবার সংগ্রহ, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা সহ নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন। নির্যাতিত হয়েছেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক। তালিকাভুক্ত এই মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগম সরকারি দেওয়া মাসিক ভাতা ১৫০০ টাকা ছাড়া আজ পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাননি। স্থানীয় প্রশাসনও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগমের জন্য কোন সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। মির্জাপুর উপজেলার একমাত্র তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা জয়নব বেগম। তারপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলার কারণে অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মরতে চলেছেন জয়নব বেগম। প্রশ্ন করেছিলাম, জীবনের কাছে কী চান তিনি? ক্ষোভের স্বরে বললেন, মৃত্যুর আগে ঘৃণ্য পশু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যেতে চান। এদিকে বীরাঙ্গনা এই মুক্তিযোদ্ধার কেউ খোঁজ খবর না রাখলেও একটি মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো মির্জাপুর প্রেস ক্লাব। শেষ জীবনের জয়নব বেগমকে প্রেসক্লাব প্রাণঢালা অভিন্দন ও সংবর্ধনা দিয়েছে। অনুষ্ঠানে জয়নব বেগম বলেন এটাই আমার জীবনের বড়ো পাওয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন ভাষা সৈনিক ও একুশে পদক প্রাপ্ত প্রতিভা মুৎসুদ্দি।
মীর আনোয়ার হোসেন টুটুল, ইত্তেফাক

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




