somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপেক্ষা (ছোটগল্প)

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অপেক্ষা
অনিরুদ্ধ চৌধুরী


১.
অরিত্রি আজ অষ্টাদশী হলো। তাকে আর এই এতিমখানায় থাকতে দেওয়া হবেনা। সে আজ এতিমখানার জীবন থেকে মুক্ত। এতিমখানাতেই অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু অরিত্রির তেমনটি হয়নি। তাকে এ ব্যাপারে কেউ জোরও করেনি। এখানে সবাই এতিম কিন্তু প্রত্যেকেরই কেউ না কেউ আছে কিন্তু অরিত্রির কেউ নেই , বাবা-মা আছে কিনা সে জানেনা। এতিমখানার গেটে তাকে কে বা কারা ফেলে রেখে গিয়েছিল কাপড়ের পুটলির মধ্যে। এতিমখানার তত্বাবধায়ক ফাদার রোজারি তাকে জায়গা দিয়েছিলো এই এতিমখানায়। অরিত্রি নামটিও তাঁরই দেয়া।
আজ এই এতিমখানা ছেড়ে যেতে হবে তাকে।কিন্তু কোথায় যাবে সে তার জানা নেই।দেশের অবস্থাও ভালো নয়। বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন গড়ে উঠেছে।খ্রিস্ট্রান-মুসলমান এক বড় রকমের বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। এক দল আরেক দলকে সুযোগ পেলে কুকুরের মত করে মারছে। প্রতিদিন বোমা হামলা, গুলিতে লোক মারা যাচ্ছে। এতিমখানাতেই সে একমাত্র নিরাপদে ছিল। কিন্তু সেই নিরাপত্তার মেয়াদ তার শেষ হয়ে গেছে।দেশ আরো ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই পাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে। অনেকে মুক্তির জন্য সশস্ত্র সংগঠনে জড়িয়ে পরছে। কিন্তু সে তো মুসলিম বা খ্রিস্ট্রান কিছুই না তবে সে কোন দলে ভিড়বে।রাজধানী আল্টা থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিনে সীমান্তে গড়ে উঠেছে উদ্বাস্তু শিবির।কিন্তু কেন সে এই দেশ, এই শহর ছেড়ে যাবে। এই গোল্ডল্যান্ড তো তারও। সে এই দেশের আলো বাতাসেই বড় হয়েছে। এই দেশেই সে থাকবে সংগ্রাম করে বাঁচবে।


২.
দুই মাস হলো এন্টি-বালাটা ক্ষমতা দখল করেছে। রাজধানী আল্টা এখন তাঁদের নিয়ন্ত্রনে। প্রেসিডেন্ট এন্টি-বালাটার প্রধান তাহের অর্ন্তবর্তী সরকার চালাচ্ছেন। দেশে মুসলমানের সংখ্যাই বেশী তাই এন্টি-বালাটা খ্রিস্ট্রান প্রধান দল হওয়াই দেশ চালানো বেশ শক্ত তবে অস্ত্রের মুখে সবই সম্ভব। তাই গির্জায় প্রার্থনার সময়ও অস্ত্রে সজ্জিত থাকেন তাহের। যেকোন সময় শেলেকার মুসলিমরা আঘাত হানতে পারে। ইসলামী দল শেলেকার হাতে একটা বিরাট অস্ত্রের চালান আছে সে খবর আছে তাহেরের কাছে।তবে তাহেরও পৃথিবীর অন্যতম শক্তিধর দেশ এজরাইলের সাথে ভালো সম্পর্ক রেখেছে আর এই এজরাইলই এন্টি-বালাটা কে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে।
তাহের তাঁর ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য দেশের নাজুক সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তুলছেন। প্রচুর পরিমান অস্ত্র ও লোক নিয়োগ করে তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলার ব্যবস্থা করেছেন।গোল্ডল্যান্ড এর ৫ টি প্রদেশেই নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়েছেন। বিদ্রোহীরা এখন শান্ত আছে। তবুও প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অন্তত দু একজন বোমা হামলায় নিহত হচ্ছেন।


৩.
বাবার মুদির দোকানে বসতে হয় ২১ বছরের আহসানকে। এ সময় তাঁর ভার্সিটিতে পড়ার কথা ছিল।অথচ দেশের এই পরিস্থিতি যেখানে প্রতিদিন বোমা হামলা হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, মানুষ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে সেখানে বিদ্যা অর্জন শুধু বিলাসিতার পর্যায়েই পড়ে। তার চেয়ে দোকানদারিই ভালো।আহসানরা মুসলিম কিন্তু স্থানীয় এন্টি-বালাটার প্রধান আম্মানের সাথে তার বাবার ভালো সর্ম্পক থাকায় তাদের তেমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছেনা।তবে সব সময় একটা আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মধ্যে। যদিও তেমন বেচাবিক্রি নাই আর কেইবা কিনবে সবাই আতঙ্কের মধ্যে থাকে অনেকে আবার দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। তবুও যেটুকু হয় সেটুকু দিয়েই চলতে হবে।সম্প্রতি একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে, আম্মান আহসানের বাবা হাশেমকে অনুরোধ করেছে তার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে।
৫ ফিট ১০ ইঞ্চি লম্বা, সুদীর্ঘ গ্রীবা, টকটকে ফর্সা গায়ের রং, জোয়ান ছেলে এমন ছেলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে খুব ভালে হবে। আর লোকজন বুঝতে পারবে এই সরকার শুধু খ্রিস্ট্রানদের নয় মুসলমানদেরও। কিন্তু আহসানের এসব ভালো লাগেনা। সে যুদ্ধ, অস্ত্রের ঝনঝনানি পছন্দ করেনা। তাই সে এই প্রস্তাবে হ্যাঁ বা না কিছুই বলেনি।নিরবে দোকানদারিটা চালাচ্ছে।


৪.
অরিত্রিকে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয়। বাড়ির সব কাজ তাকেই করতে হয়। রান্নাবান্না, ঘর পরিস্কার থেকে শুরু করে বাজারও তাকে করতে হয়। তবে সে কখনোই মন খারাপ করেনা। তার কাজ ভালো লাগে। আর তার প্রভুও চমৎকার মানুষ। এতিমখানার ফাদারের অনুরোধে সে এই বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ পেয়েছে। এটি এন্টি-বালাটার এক প্রভাবশালী নেতার বাড়ি। বাড়িতে নেতা আর তাঁর স্ত্রী থাকেন । দুজনের বয়সই পঞ্চাশের কাছাকাছি। দুই ছেলেকে দেশের বাহিরে রেখেছে সেখানেই তারা পড়াশুনা করে। এই বাড়িটিতে অরিত্রি এখন তৃতীয় প্রাণী।
আহসানের দোকানে প্রথম যেদিন সে বাজার করতে গিয়েছিলো সেদিন আহসানকে দেখে সে ধাক্কার মতো খেয়েছিলো। পুরুষমানুষ এত সুন্দর হয় তার জানা ছিল না । কি নিস্পাপ মুখ!অরিত্রির বুকের ভিতর চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সেই চাঞ্চল্যকে সে বেশী প্রশ্রয় দেয়নি।সে জানতো তার মতো শ্যামা মেয়েকে আর যেই পছন্দ করুক এরকম সুদর্শন ছেলে কখনো করবেনা। তার চেয়েও বড় কথা সে এতিম। তবুও প্রতিদিন বাজারে একঝলক দেখতে বেশ ভালো লাগতো তার।

এন্টি-বালাটা ক্ষমতা দখলের পর তাদের আচরন বেশ ভালো ছিলো কিন্তু ক্রমশই তাদের আসল চেহার বেড়িয়ে আসছে।বেড়িয়ে আসছে তাঁদের রক্তপিপাসু চেহারা। বিশেষত: মুসলমান হওয়াই তাদের কাছে সবচেয়ে বড় অপরাধ।মুসলমানদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার, কারাগারে অত্যাচার, হত্যা নিয়মিত রুটিনে পরিনত হয়ে উঠছিল।যেন মুসলমান কোন মানুষ নয়।
আহসান এর তরুন হৃদয় এসব দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। সে চিন্তা করতো সে যোগ দিবে শেলেকাতে।এদেশের মানুষের মুক্তি দরকার।কিন্তু পরক্ষনেই সে দমে যায়।সে ভাবে শেলেকাওতো সশস্ত্র তাঁরাও তো মানুষ মারে।কিন্তু মুক্তির কি কোন উপায় নেই? তাকেও তো হয়তো কোনদিন বলি হতে হবে এন্টি-বালাটার হাতে।


৫.
আফসারী প্রতিদিন নামাজ শেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে ভুলের ক্ষমা চান। নিশ্চয় তাঁর কোন গোপন পাপ আছে নইলে সে এই দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও পলাতক জীবন যাপন করতে হচ্ছে কেন।নতুবা প্রভু হয়তো তাঁর কাছ থেকে পরীক্ষা নিচ্ছেন।প্রেসিডেন্ট প্যালাস হতে পালানোর কথা মনে হলে তিনি এখনো শিউরে উঠেন।আর একটু হলেই এন্টি-বালাটা তাঁকে ছিন্নভিন্ন করে দিতো।তবু বেঁচে আছেন সেজন্য প্রভুকে ধন্যবাদ জানান। সেদিনের পর শেলেকা অনেকটাই এলোমেলো হয়ে পড়েছিলো।আবার শেলেকাকে সংঘবদ্ধ করেছেন। তিনি আর ভুল করতে চান না।সেনাবাহিনীর অনেক অফিসারকে হাত করে নিয়েছেন।আবার তিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, এদেশ আবার শেলেকার অধীনে আসবে এমনটাই স্বপ্ন দেখেন ।তাই বড় কোন অপারেশনের আগে যতটা পারা যায় গুপ্ত হামলার মাধ্যমে এন্টি-বালাটাকে ক্ষতিগ্রস্থ করা।তারা একটা হিটলিস্ট তৈরী করেছে যেটাতে এন্টি-বালাটার প্রধান প্রধান নেতাদের নাম আছে।শেলেকার অন্যতম ভরসা পাশ্ববর্তী দেশ আয়ামান তাদের সর্মথন দিচ্ছে। তবে এজরাইল একটা বড় সমস্যা। তাই এবার ক্ষমতায় যেতে হবে সমস্ত আটঘাট বেঁধেই এবং খুবই সুচিন্তিতভাবে।


৬.
রাজধানী আল্টার অবস্থা কিছুদিন থেকেই বেশ উদ্বেগজনক।৯ দিনে প্রায় ৫৭ জন এন্টি-বালাটার নেতা নিঁখোজ। সেই নিঁখোজের তালিকায় অরিত্রির মালিকিও আছে। শহর ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকেই। মা হারা ছেলে আহসানকে নিয়ে ভরসা পাচ্ছেন না বাবা হাশেম।কখন কোন পক্ষের বলি হতে হয় তার ঠিক নেই। তাই এই জাহান্নাম থেকে পালিয়ে যেতে চাইছেন তিনি। সিদ্ধান্ত হলো খুব ভোরে ঠিক ফজরের আযানের আগেই বেড়িয়ে পড়বেন তারা।অবশেষে খুব ভোরে পিতা-পুত্র প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তাদের বাড়ি, প্রিয় দোকান, আর সবচেয়ে প্রিয় শহর আল্টা ছেড়ে অজানার উদ্দেশ্য পাড়ি দিলো। এই শহরেই জন্মেছে আহসান কত স্বপ্ন কত ভালোবাসা কত স্মৃতি সব কিছু জড়িয়ে আছে এই শহরকে ঘিরে, হয়তো চলে যেতে হচ্ছে চিরদিনের মতো এই শহর ছেড়ে, আর কোনদিন ফিরে আসা হবে না।নেওয়া হবে না এর বাতাসের ঘ্রান।তাই শেষ বারের মতো বাতাসের ঘ্রানে নাক রাখলো আহসান।পথে আরো তিনটি পরিবারের সাথে দেখা হলো তাদের।তারা সবাই একই পথের পথিক।একটি পরিবারে ১৫ বছরের একটি ছেলে আর তার মা, ছেলেটির বাবাকে এন্টি-বালাটার লোকেরা বাড়িতে এসে ছেলের সামনেই বুক ঝাঁঝরা করে দিয়েছে, তার বাবার প্রথম অপরাধ ছিল তার বাবা মুসলিম দ্বিতীয় তার বাবা শেলেকার অসুস্থ একজনকে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলো।
দ্বিতীয় পরিবারে যুবক বাবা-মা আর তাদের ৮ বছরের কন্যার, মেয়েটার মুখে ক্লান্তির ছাপ, রাজ্যের সমস্ত ভয় যেনো তাকে গ্রাস করেছে,কারন সে দেখেছে মানুষ নামের জীব কত ভয়ংকর।
আর তৃতীয় পরিবার যেটিতে অরিত্র আর তার মলিকিন, মালিক নিখোঁজ হওয়ার পর তারাও শহর থেকে পালাতে পা বাড়িয়েছে, এছাড়া বেঁচে থাকার যে কোন উপায় নেই।এখন এই চারটি পরিবার এক হয়ে যেনো একটি পরিবারে দাঁড়ালো।এরা সাবই চলেছে অজানার পথে কেউ কাউকে ভালো করে জানেনা তবে এদের একটাই উদ্দেশ্য বেঁচে থাকা।অরিত্রিকে দেখে আহসানের চেনা চেনা মনে হয়েছিলো কিন্তু মেলাতে পারছিলো না। একবার দেখার পরই মেয়েটা তাকে যেনো চুম্বকের মতো টানছে। বিশেষ করে টানছে তার কাজল কালো চোখ।মেয়েটার চোখের মাঝে একটা মায়া আছে । যা কেউ একবার দেখলে কখনো ভুলতে পারবেনা।অপূর্ব একজোড়া চোখ।
বিপদগ্রস্থ কয়েকটি পরিবার একটি পরিবারে রুপান্তুরিত হয়েছে। যাদের হেঁটে হেঁটে পারি দিতে হচ্ছে শহর।সবাই সবাইকে যতটুকু পারছে সাহায্যে করছে।তাদের এখন মূল লক্ষ্য শহর, গ্রাম, নদী জঙ্গল পার হয়ে সীমান্তে পৌঁছানো।ওখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের খোলা আশ্রয় শিবির গুলোই শেষ ভরসা।আল্টা শেষ প্রান্তে চলে এসেছে তারা এখন নৌকা করে কাছাকাছি একটি গ্রামে পৌঁছানো তারপর সেখান থেকে আবার সীমান্তের পথে যাত্রা করা।এরই মাঝে অরিত্রির সাথে আহসানের কথা হয়েছে তারা অনেকটাই সহজ হতে পেরেছে।এখনো কিছুই হয়নি তবুও কেমন যেন এক মুগ্ধতা ছুঁয়ে যাচ্ছে দুজেনর মাঝে।

তারা যখন গ্রামে পৌছালো তারা ভাবেলো তারা এখন বিপদ মুক্ত কিন্তু এবারই প্রথম ভয়াবহ বিপদের মধ্যে পড়লো। এন্টি-বালাটার টহল দলের সামনে পড়লো তারা।সবাইকে এক এক করে অনেক কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করলো।সবার কথাতেই সন্তুষ্ট হলেও দ্বিতীয় পরিবারের ৮ বছরের মেয়েটির বাবার কথায় সন্তুষ্ট হতে পারলো না।তারা সেই লোকটি ছাড়া সবাইকে ছেড়ে দিলো।৮ বছরের মেয়েটি তার বাবাকে ছেড়ে যাবেনা।সে আকাশ পাতাল চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো আর তাঁর প্রানপ্রিয় স্ত্রী তখন প্রায় মুর্ছা। তবুও কিছুই করার ছিল না কারন পশুদের সাথে যুদ্ধ করতে অস্ত্র লাগে সেখানে আবেগের কোন মূল্য নেই।আহসানের রক্ত টগবগ করে উঠছিল , তার এতো কষ্ট সহ্য হচ্ছেনা সে প্রতিবাদ করবে কিন্তু পরক্ষনেই দমে যায় কারন সে নিরস্ত্র। আর নিরস্ত্ররা হলো ভীতু। এখন তার একটাই ইচ্ছা সেও অস্ত্র ধরবে, শেষ করে দিবে এই জালিমদের।তারা সেই দু:খী স্ত্রী ও কন্যাটিকে নিয়ে পথ বাড়ালো সীমান্তের পথে। পথে সবাই খুব ক্লান্ত হয়ে পরেছিল। অরিত্রি আহসান কাধে কাধ মিলিয়ে সবার সেবা করেছে।পথের মাঝে যতটুকু পারা যায় সাহায্য করেছে। ৬ দিন পর ওরা পৌছালো সীমান্তের আশ্রয় কেন্দ্রে।৬ দিনে সবাই যেন নি:শেষ হয়ে পড়েছে। এত কষ্টের মধ্যেও অরিত্রি - আহসান দুজন দুজনাকে কখন ভালোবেসে ফেলেছে বুঝতে পারেনি, বুঝতে পেরেছে শিবিরে যখন নারী পুরূষ আলাদা আলাদা থাকতে দিয়েছে তখন।তারা এই ৬ দিন এত কাছাকাছি ছিল যে দুজন অপরিচিত নারী-পুরষ হয়ে পড়েছিলো পরিচিত, জন্ম জন্মান্তরের পরিচিত।যেনো একটা পরিবার। ভালোবাসা বা ভালোলাগা, যুদ্ধ দুর্ভিক্ষ কিছুই মানেনা।শিবিরে আলাদা থাকার যাতনা বুঝতে শিখিয়েছিলো তারা দুজন দুজনাকে ভালোবাসে।যেন এক প্রনয়উপাখ্যান।

আহসান অরিত্রির হাত ধরে বলেছিলো অরিত্রি চলো আমরা আবার আল্টাতে ফিরে যাই। আমরা এ দেশটাকে নতুন করে গড়বো।এ দেশটাতো আমাদেরই।অরিত্রির মনে সুপ্ত বাসনা জেগে উঠেছিলো সত্যিই তো এদেশ আমাদেরই। আমরা কেন ক্ষমতার দ্বন্দ্বে মার খাবো আর কেনইবা উদ্বাস্তু শিবিরে থাকবো।তার পরিকল্পনা করে উদ্বাস্তু শিবিরি থেকে পালাবার।তারা শিবিরেই রাতের আধাঁরে ঘনিষ্ট হয়। দুজন দুজনাকে মুগ্ধ করে।অরিত্রর ঘনিষ্টতা আহসানকে আরো উদ্দীপ্ত করে তোলে। সে সিদ্ধান্ত নেয় সে একাই ফিরে যাবে, যোগ দিবে শেলেকাতে।এ দেশটাকে বাঁচাতে হবে ।শান্তি ফিরে আনবে সে ।তারপর অরিত্রিকে নিয়ে যাবে আল্টাতে তার নিজের শহরে তার নিজের ঘরে। সে তার সিদ্ধান্তের কথা জানায় অরিত্রিকে।অরিত্রি বিচলিত হয়ে পড়ে তবে ভেঙ্গে পড়ে না।অরিত্রিরা সারাজীবনই যে আহসানদের সাহস যোগায় তাই তার ভেঙ্গে পড়া চলে না।সে বলে আহসান তুমি ফিরে যাও কিন্তু ফিরে এসো বিজয়ীর বেশে আমি তোমার প্রতীক্ষায় থাকবো।তোমার মূল্যবান আমানত আমি আমার জীবন দিয়ে রক্ষা করবো। আহসান বুঝতে পারেনা কি সেই আমানত। আল্টার পথে পা বাড়ায় আহসান।তার ফিরে আসার প্রতীক্ষায় থাকে অরিত্রি।তাকে যে প্রতীক্ষায় থাকতেই হবে তার গর্ভে যে আহসানের অনাগত সন্তান।


সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×