একটি জনাকীর্ণ হাসপাতালে শত শত রোগীর ভীড়। হঠাৎ করে একটা খুব সিরিয়াস রোগী আসলো।তার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট!কোনো চিকিৎসা ভাল করে দেয়ার আগেই সে মৃত্যু বরন করল।তার কিছুদিন পরে একজন মেডিকেল স্টাফ যখন সেই একই লক্ষন দেখিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ল তখন থেকেই শুরু হলো আতংক, সাহস আর আত্মত্যাগের এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান।
বলছিলাম ভারতের মালায়ালাম ঘরানার মুভি 'ভাইরাস' এর কথা।গত কোরবানী ঈদের ছুটিতে কাজিনদের সাথে দেখেছিলাম মুভিটি।ভারতের আমার দেখা সব ভাষার মুভির মধ্যে মালায়লাম ভাষার মুভিগুলোই সেরা।ওদের কাহি, চরিত্র চিত্রন অভিনয় সবকিছু এতটাই নিখুঁত যে প্রেমে পড়ে যেতে হয়।মুভিগুলো ওরা খুব যত্ন করে বানায়।সিনেমা যে একটা শিল্প,এটা তাদের বানানো সিনেমা দেখলে বোঝা যায়।রুচিশীলতা রয়েছে বলেই কিন্ত মুভিগুলো প্যানপ্যানানি বোরিং টাইপ না।শেষ পর্যন্ত আপনার আগ্রহটা ধরে রাখবে।
ভাইরাস মুভিটি পরিচালনা করেছেন আশিক বাবু।এটি মূলত একটি মেডিকেল থ্রিলার।মুভিটি মুক্তি পেয়েছে জুন ২০১৯ এ। দুই ঘন্টা বত্রিশ মিনিটের মুভিটি আপনার মনোযোগ টেনে রাখবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।কেরালায় হঠাৎ দেখা দেয়া নিপাহ ভাইরাসের আক্রমণ এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ-- এটিই মুভিটির পটভূমি।সত্যি ঘটনার উপরে তৈরি মুভিটির আই এম ডি বি রেটিং ৮,১।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে নিপাহ ভাইরাস খুবই মারাত্মক ভাইরাস।এটি অসুস্থ বাদুর বা শুকর থেকে মানুষে ছড়ায়।আবার মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে মহামারী ঘটাতে পারে। এই ভাইরাসের মৃত্যুর হার ৭৫℅ পর্যন্ত হতে পারে।এ পর্যন্ত যত লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তার ৫৮% মানুষ মারা গিয়েছে। ২০০১ এ বাংলাদেশে এর সংক্রামন হয় যা আবার ২০০৪ এ বেশ বড় আকারে। মৃত্যুর ক্ষেত্রে আমরাই চ্যাম্পিয়ন! অর্থাৎ এই ভাইরাসে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি রোগী মারা গেছে।WHO এর রেডলিস্টেড ডিজিজের মধ্যে এটা একটা।
২০১৮ সালে ভারতের কেরালায় এই রোগ দেখা দেয়।স্থানীয় প্রশাস, ডাক্তার, পুলিশ এবং জনগন কিভাবে যে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে রোগটাকে নিয়ন্ত্রণে এনেছিল তা এই সিনেমা না দেখলে বোঝা যাবেনা।আজ করোনা ভাইরাসের সময় আমরা যা করছি তার সাথে মুভিটির তুলনা করলেই বুঝতে পারবেন যে আমরা কতটা ঝুঁকিতে আছি। সেই সাথে আমাদের কি কি করা কর্তব্য ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৩৬