এক সপ্তাহ যাবত মনটা ভীষণ খারাপ, বুকের ভেতর কেমন যেন যন্ত্রণা, কোন কিছু গুছিয়ে বলার বা লেখার মতো মানসিক অবস্থা এই মুহূর্তে নেই।
টিভি দেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় কয়েকশ খেটে খাওয়া শ্রমিক ভাইবোনের মৃত্যু, আটকে পরা সেই সব ভাই বা বোন দের বেঁচে থাকার প্রবল আকুতি, মিনতি, তাদের স্বজন দের গগন বিদারী কান্না, আর্তনাদ, আহাজারি, চোখের জল- আমার দুর্বল হৃদয় সইতে পারেনা।
এত্ত সব মৃত্যু, কান্না, চোখের জল, এসবের মাঝেও মৃত্যু কুঠুরিতে আটকে থাকা শাহীনার বেঁচে থাকার মিনতি-বন্ধু মহলে শক্তমন আর কঠিন হৃদয় বলে পরিচিত এই আমি দু’ চোখের জল থামাতে পারিনি, হু হু কেঁদেছি।
শাহীনা, যে মেয়েটি দেড় বছর বয়সী ফুটফুটে সন্তানের মা, যে সন্তান তার বাবাকে দেখেনি, তার জন্মের আগেই তার মাকে ফেলে চলে গেছে, সেই নাড়ি ছেঁড়া ধনকে মায়ের মমতা দিয়ে বুকের দুধ খাওয়াতে চেয়েছিল। এখনো তার সেই আকুতি আমার কানে বাজে, প্রতি মুহূর্তে ।
আমি গুমরে উঠি, কাঁদি।বুকের ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা হয়।
আমরা আমাদের এই বোন টাকে শত চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারিনি।
শাহীনা, আমার রক্তের সম্পর্কিত কেউ নয়, নয় পরিচিতজন। তবুও কেন তার জন্য আমার এমন লাগে, কষ্ট হয়, বুকের ভেতর টা হু হু করে।জানি না...
তবে, কেন জানি-এই অপরিচিত, অদেখা মেয়েটিকে আমার নিজের বোন মনে হয়।
শাহীনা, প্রিয় বোন আমার, ক্ষমা করিস আমাদের, আমাদের মতো অক্ষম, দুর্বলদের।
আর,যারা তোকে বাঁচতে দেয়নি, আদরের সন্তানের কাছে যেতে দেয়নি,তাদের ক্ষমা করিস না... কোন দিন না...
জানি,প্রিয় সন্তান-মা-বাবা-বোনএর জন্য তোর মন খারাপ,তবুও কামনা করি, কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি, ভালো থাকিস শাহীনা, প্রিয় বোন আমার...