দ্বিতীয় বারের মত আমি জেগে উঠে দেখি
তুমি নেই, তুমি নেই।
চোখ বুজে রাখি কিছুটা সময়
অনন্ত বৎসরকাল কমনীয় হয়।
স্বপ্নাচ্ছন্ন তন্দ্রালতাকে জোর করে সরিয়ে
প্রথম বারের মত চোখ খুলে দেখি
তুমি নেই, তুমি নেই।
কায়মনোবাক্যে শুনতে ইচ্ছা করে
কয়েক পেয়ালা প্রশংসাবাণী।
ঈশ্বরের একান্ত প্রচ্ছন্নতায়
এই মাটির পৃথিবী আর
জলবায়ু, এমনকি রূপকথা
কল্পকাহিনী রচনার আগে,
পুঞ্জীভূত মেঘমালা, মরুদ্যান,
এমনকি সাগরের সুগভীর উত্তাল
জলরাশি সৃজনের অনেক অনেক আগে
যখন এই ভাটিয়ালী আবেগের
মর্মার্থ বোঝা ছিল নিতান্তই কষ্টকর।
যখন নিবিঢ় শূন্যতায় ঘেরা জীবনবৃক্ষের
শাখায় লাগেনি কোন উদ্দামতার ছাপ।
যখন মহাকালের সমগ্র আধারজুড়ে
ধ্বনিত হতো পবিত্র আহবান।
কেবলি একটা প্রকাশ্য নিস্তব্ধতা যখন
গ্রাস করেছিল সময়ের প্রতিটা প্রহর।
ঠিক তখনই একটা অদৃশ্য হাত
অকম্পনীয়, প্রশান্ত সুবিশাল
প্রতিভাত হল, সহসা উদ্বোধন
রহস্যের চাদরে মোড়া অমোঘ নির্দেশে
বেজে উঠল সংকেত - জীবনের পূর্বাভাস
রচিত হল আমার জনমের ইতিহাস।
হৃদয়ের অলিন্দে অলিন্দে জাগল স্পন্দন
ছড়িয়ে যেতেই শুনি আত্মার ক্রন্দন।
মর্চে ধরা পুরনো স্মৃতি, মিথ্যা মোহমায়া
কাটিয়ে উঠতে চাই আবেগের বর্ণহীন ছায়া।
প্রাণপনে চেষ্টা করি মাড়াতে মাড়াতে
ক্ষুদ্র স্মৃতি সামান্য আলো চাইনা হারাতে।
এভাবেই করতে থাক এক ভাষাহীন সংগ্রাম
অবশেষে সূর্যরশ্মি যখন রক্তিম আভার
সতেজ বর্ণচ্ছটা নিয়ে আঘাত করলো এসে
আমার চেতনালোকের প্রতিটা কোণায়
ঠিক তখনই আমি জেগে উঠে
এই অন্তহীন উত্তপ্ত বালুকাবেলায়
সূর্যাস্তের প্রশ্রয় পেয়ে নিরীহ আকাশে ওঠা
অবাধ্য তারকার দিকে চোখ মেলে চেয়ে
উদ্ভ্রান্তের মত দৃষ্টি বদল করে
হতাশ হবার মত জটিল আবেগে
আক্রান্ত হওয়ার আগে টের পেয়ে যাই
তুমি নেই।
উযাইরের মৃত ঘোড়াটির দেহে তখন
রক্তমাংস জোড়া লাগা কেবলি হয়েছে শুরু।
কিন্তু বাসনা আমার পানি হয়ে গেছে জন্মলগ্নেই।
তথাপি বিধাতার কাছে আর জানতে চাইনা আমি
এই জন্মের সার্থকতা-
যা ছিল আবশ্যক
তোমাকে খুঁজতে গিয়ে।
নিরুপায় হয়ে আমি ক্ষান্ত দেবার আগে
প্রতিধ্বনি শুনি তাই
তুমি নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




