জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির অপকর্ম ফাঁস করেছে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপার ও উত্তেজনা। ছাত্রলীগের ফাঁস করা ভিসির এ অপকর্মের ডকুমেন্টটি হুবুহু ব্লগরে সকলের জন্য তুলে ধরা হলঃ
(ব্যক্তি স্বার্থে জাবি ভিসি তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির নামে জামাত ও জাতীয়তাবাদী পুনর্বাসনে লিপ্ত)
প্রিয় বঙ্গবন্ধুর সৈনিক,
আপনারা জানেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ও উপাচার্য প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবিরের মধ্যে ব্যাপক দন্দ্ব। কিন্তু প্রশ্ন হল আওয়ামী লীগের নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্যের সাথে ছাত্রলীগের এই দন্দ্ব কেন ? দ্বন্দ হল স্বার্থের দন্দ্ব। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেখেছেন ছাত্রলীগ তথা আওয়ামী লীগের স্বার্থ অপরদিকে উপাচার্য দেখেছেন তার ব্যক্তিস্বার্থ। ফলে উপাচার্য ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একের পর এক চক্রান্ত করেছেন এবং সর্বশেষ ৫ জুলাই নিজে উপস্থিত থেকে নির্দেশ দিয়ে আল-বেরুনী হলের মারামারি সৃষ্টি করে তার মিশন সফল করেন। প্রকৃতপক্ষে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। দন্দ্বের বিস্তারিত কারণ হল-
১. ব্যক্তিস্বার্থে সিনেটে জামাত ও জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠা করা এবং ছাত্রলীগের বাঁধা (জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীতাকারীরাও বাদ যায়নি)। ২. নিয়োগ দুর্নীতি ও ছাত্রলীগের বাঁধা। ৩. ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা ও অঞ্চলভিত্তিক একটি গ্র“পকে মদদ দিয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা।
চক্রান্তের ধাপ ঃ ১. সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংবাদ প্রকাশ করানো।
২. ৫ জুলাই নিজে নির্দেশ দিয়ে মারামারি সৃষ্টি করা এবং দায়ভার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের উপর চাপিয়ে দেওয়া।
১. ব্যক্তিগত স্বার্থ সিনেটে জামাত ও জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠা করা এবং ছাত্রলীগের বাধা (জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীতাকারীরাও বা যায়নি) গত ২৯ এপ্রিল ২০১০ বিশ্বদ্যিালয়ের সিনেটে শিক্ষক ¬¬¬প্রতিনিধি নির্বাচনে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির নামে ড. শরীফ আওয়ামী লীগের প্যানেলে নির্যাতিত আওয়ামীলীগ শিক্ষকদের উপেক্ষা করে জামাত ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের নির্বাচিত করেছেন। তারা হলেন- ফিরোজা হোসেন, ফাহমিনা আহমেদ, মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান খান, মোঃ আব্দুর রব, মোঃ আব্দুস ছালাম, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ রফিকুজ্জামান, সৈয়দা শাহানারা হক।
এমনকি তাদের মধ্যে ডঃ ফিরোজা হোসেন, ডাঃ মোঃ রফিকুজ্জামান ও মোঃ আব্দুর রব, ২০০০ সালের ১৮ই নভেম্বর বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী ও দেশরতœ শেখ হাসিনা জাবিতে আগমন ও বঙ্গবন্ধু হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানকে বর্জন করে অকথ্য ভাষায় ১৬ নভেম্বর ২০০০ তারিখে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের (সাদা দল) বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। সেই বিবৃতিদানকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন প্রফেসর জসীম উদ্দিন আহমেদ যিনি ২০০১ সালে বি এন পি ক্ষমতায় এলে উপাচার্য হয়েছিল। বর্তমানে জসীম উদ্দিন উপাচার্য ড. শরীফ এর অন্যতম পরামর্শক। (সূত্রঃ জাবিসাস, বিবৃতির কপি সংরক্ষিত আছে)।
এদের মধ্যে অধ্যাপক ফাহমিনা আহমেদ, ফিরোজা হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান খান, ডঃ সৈয়দা শাহারা হক, মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, মোঃ গোলাম মোস্তফা ১৮ আগষ্ট ২০০৫ সালে ১৭.০৫.০৫ তারিখে দেশব্যপী বোমা হামলার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ (সাদা দল) এর বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। (সূত্র: জাবিসাস, বিবৃতির কপিসংরক্ষিত আছে)।
এদের মধ্যে অধ্যাপক ফিরোজা হোসেন, ফাহমিনা আহমেদ, আব্দুর রহম ও তারেক চৌধুরী ২৯-০৭-২০০৯ তারিখে বেগম খালেদা জিয়া হলের সামনে স্থাপিত খালেদা জিয়ার ভাস্কর্য ভাঙ্গার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের (সাদা দল) বিবৃতিতে স্বাক্ষর আছে। (সূত্র: জাবিসাস, সংরক্ষিত আছে)।
গত ৩১ মে ২০১০ তারিখে জাবি সিন্ডিকেট নির্বাচনে কবিরুল বাশারকে উপাচার্য নিজের পছন্দে আওয়ামী লীগের প্যানেলে নির্বাচন করিয়েছেন। যিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিদেশে তাঁর দুই পুত্রের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবীতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতিতে তার নাম দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি এসিষ্ট্যান্ট প্রোক্টর।
আরো দুঃখের বিষয় হল ২১ জানুয়ারী ২০১০ ডীন নির্বাচনে উপাচার্য ড. শরীফ , মোঃ আব্দুল জব্বার হাওলাদারকে আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে ডীন নির্বচিত করেছেন। এই জব্বার হাওলাদার কে ? তিনি হলে ৭২’এর দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত, বাগেরহাটের জেলা বদর বাহিনীর প্রধান কুখ্যাত রাজাকার তোফাজ্জল হাওলাদার ওরফে তোফা রাজাকারের পুত্র। তিনি আব্দুল্লাহ হেল বাকী ও ইলিয়াস মোল্লার একনিষ্ঠ শিষ্য।
উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিদের আওয়ামী লীগের প্যানেলে নাম অন্তর্ভূক্ত করার পর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে উপাচার্যের কাছে বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলেছিলেন। তাতে কোন লাভ হয়নি বরং তিনি উল্টো ছাত্রলীগের উপর নারাজ হন এবং চক্রান্ত করেন।
২. নিয়োগ-টেন্ডার দূর্নীতি ও ছাত্রলীগের বাঁধা।
জাবি উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির জাবি ক্যাম্পাসকে ছাত্রলীগ শূন্য রাখতে চান, কারণ তার নিয়োগ দূর্নীতি ও টেন্ডার দুর্নীতিতে বাঁধা দেওয়ার কেউ থাকবে না। ড. শরীফ দলীয়দের উপেক্ষা করে অর্থের বিনিময়ে জাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দেন। ৩মে ২০১০ তারিখ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ড. শরীফ ঢাকার শেরাটন হোটেলে মোঃ মিজানুর রহমান, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (প্রভাষক) প্রাণীবিদ্যা, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা, আইডি নাম্বার ৭০৯৫ নামে একজন ব্যক্তির সাথে মিটিং করেন এবং তাকে জাবিতে শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দেন। ঐ মিটিং-এর অডিও টেপ জাবির অনেক সাংবাদিকের কাছে আছে। প্রশ্ন হল-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ যদি শেরাটন হোটেলে হয় তা হলে সেখানে অর্থের লেনদেন আছে কিনা ভেবে দেখুন। আবার হঠাৎ করে ড. শরীফ ৫ মে ২০১০ জনাব মোঃ মিজানুর রহমানের নামে আশুলিয়া থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং ৩১০। কারণ লেনদেন গড়মিল হলে মিজানুর রহমান তার রেকর্ড করা কথা ফাঁস করে দেয়ার হুমকী দেন। জাবি ছাত্রলীগের জেবিন-সিরাজী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মহীবুর শৈবাল (ভূমি মন্ত্রীর ভাতিজা) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষকের জন্য আবেদন করলে (সমস্ত যোগ্যতা পূরণ করে) সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের স্বার্থ বিবেচনা করে উপাচার্যের কাছে তার নিয়োগের জন্য দাবী জানালে উপাচার্য তাকে নিয়োগ দেন নি। কিন্তু উপাচার্য ড. শরীফ শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের(জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম) সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরীর মেয়ে মাশহুরা শাম্মীকে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগ দেন। মাশহুরা শাম্মীর নিয়োগের ব্যাপারে সভাপতি সধারণ সম্পাদক উপাচার্যকে বিবেচনা করতে বলেছিলেন। ফলে তাদের উপর শুধু উপাচার্যের ক্ষোভের মাত্রাই বৃদ্ধি পায়; কার্যত কোন ফল হয়নি।
ফার্মেসী বিভাগে নোয়াখালীর তানিয়া নামের এক মেয়েকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যিনি এলাকায় প্রত্যক্ষ জামাত হিসাবে পরিচিত। (সূত্র: আওয়ামীলীগের একজন সম্পাদক/নাম প্রকাশ করা হল না)। বিষয়টি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক জানতে পেরে উপাচার্যকে আবার বিবেচনার কথা বললে তিনি উল্টাপ্রশ্ন করেন-তোমরা আমাকে বলার কে ? (তখনও ছাত্রলীগের কমিটি হয়নি)।
আশরাফুল ইসলাম (ঢাবি ছাত্র) নামে একজনকে লোক প্রশাসন বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যিনি ঢাবিতে প্রত্যক্ষ জামাত হিসেবে চিহ্নিত । শামীম আল মামুন’কে আই আই টিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যিনি ২০০১ সালে জাবিতে প্রত্যক্ষ ছাত্রদল করেছে (সূত্র: তৎকালীন সময়ের ছাত্রলীগ নেতারা)। মীর মোশাররফ হোসেন হলে জামাত-আজমতের (জাবি মেডিকেলে কর্মরত) ছেলে শাহদাৎ কে হল কর্মকর্তা হিসেবে কোন পরীক্ষা ছাড়াই উপাচার্য নিজ ক্ষমতাবলে নিয়োগ দেন। এ সব বিষয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বার বার বলার পরেও উপাচার্য আমলে নেয় নি। আর কমপক্ষে জামাত ও বিএনপি’র ২০ জন শিক্ষক ও অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যার তথ্য ও প্রমাণ সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও তিনি জাবিতে বিভিন্ন টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে দেন। শহীদ রফিক জব্বার হলের ঠিকাদারদের কাছ থেকে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা নেন। ফলে নিয়মানুযায়ী ছাত্র সংসদের প্রাপ্য টাকার হিসাব আজ অবধি মেলেনি।
দলীয় স্বার্থ বিবেচনা করার কারণেই ছাত্রলীগের জন্য কাল হয়ে দাড়ায় মাননীয় উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির।
৩। ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা ও অঞ্চল ভিত্তিক একটি গ্র“পকে মদদ দিয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা :
ড. শরীফ উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার কারণে একক ডমিনেশন চালিয়ে অভ্যস্ত এবং তিনি এই আধিপত্য বিস্তার করতেন ছাত্রলীগের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এবং অঞ্চলভিত্তিক একটি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ গ্র“পকে মদদ দিয়ে। সেই গ্র“পকে তিনি কমিটিতে স্থান পাইয়ে দিবেন বলে আস্বস্তও করেছিলেন। ক্যাম্পাসে উপাচার্যের গ্র“পের বিপক্ষে যাবে এমন কোন মারামারির ঘটনার তদন্ত আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। (সূত্র : দৈনিক সমকাল/০১/১১/২০১০/পৃ:৯, দৈনিক জনকণ্ঠ/৩১/১০/২০১০/পৃ: শেষ, দৈনিক জনত/৩১/১০/২০১০/পৃ: প্রথম, দৈনিক সমকাল/১/২০/২০১০/পৃ: ৩য়, দৈনিক কালের কণ্ঠ/১/১০/২০১০/পৃ: ২০)। চক্রান্তঃ-
১। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংবাদ প্রকাশ করা:-
উপাচার্য ড. শরীফ অর্থের বিনিময়ে কিছু সংবাদপত্রে সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফীন কে নব্য ছাত্রলীগ, সাধারণ সম্পাদক নির্ঝর আলম সাম্যকে ছাত্রদল হিসাবে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন। অথচ-সভাপতি বিগত সোহেল-জনি কমিটির উপ-পাঠাগার সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সহ সম্পাদক (সূত্র: সোহেল পারভেজ-মাহমুদ নাসের জনি)
সাধারণ সম্পাদক নির্ঝর আলম সাম্য ২০০৪ সালে আগষ্ট মাসে জাবিতে ক্লাশ শুরু করেন এবং ২০০৫ সালের ৪ঠা জানুয়ারী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শংসপ্তক ভাস্কর্যের সামনে বিগত কমিটির সভাপতি সোহেল পারভেজ এবং সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ নাসের জনির মুখে কেক তুলে দিয়ে জাবিতে ছাত্রলীগের যাত্রা শুরু করেন। (সূত্র: মাহমুদ নাসের জনি-০১৭১১৯৮৪১৫৭, সোহেল পারভেজ-০১৭১২৭৬৬০৭৫)।
২০০৬ সাল ১৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার, (আওয়ামীলীগ তখন বিরোধীদলে) ছাত্রলীগের শোডাউন বের করার কারণে সাধারণ সম্পাদক নির্ঝর আলম সাম্যকে ছাত্রদল ব্যাপক মারধর করে ফলে তিনি দীর্ঘদিন সাভারের এনাম মেডিক্যালে ভর্তি ছিলেন। (সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক/১৬ নভেম্বর ২০০৬/পৃ:৩, দৈনিক নয়াদিগন্ত/১৫ নভেম্বর ২০০৬/পৃ:১৫)।
২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারী তৎকালীন বিএনপি প্রশাসনের চক্রান্তের শিকার হয়ে তখনকার ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ নাসের জনি ছাত্রদলের দ্বারা ব্যাপক প্রহৃত হয়। ঐ ঘটনায় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নির্ঝর আলম সাম্য বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ছাত্রদলের প্রায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। (সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো/১২-১০-২০০৮/ পৃ:০৪, দৈনিক ইত্তেফাক ১২-১০-২০০৮/পৃ:০১) পরবর্তীতে সোহেল জনি সহ বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও আরো কিছু নেতাকর্মী ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়। দীর্ঘ এক বছর ক্যাম্পাসে তারা ক্লাস পরীক্ষা কিছুই করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য ড. শরীফ সোহেল-জনিকে হসপিটালে একদিন দেখতেও যাননি। ঐ একই ঘটনায় ছাত্রদলের নেতা আনিসুর রহমান লিঙ্কন আশুলিয়া থানায় ছাত্রলীগের নেতাদের নাম দিয়ে আর একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় নির্ঝর আলম সাম্যকে ৩নং আসামী করা হয়। (সূত্র: সৈনিক সংবাদ/১২/০১/০৮/পৃ:১, দৈনিক জনকণ্ঠ/১৪-০১-২০০৮/পৃ:০১, দৈনিক প্রথম আলো/১৪-০১-২০০৮/ পৃ: শেষ)
২০০৮ সালের ১জুন নির্ঝর আলম সাম্য তার তৃতীয় বর্ষের চুড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ছাত্রদলের বাধার কারণে। (সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো/০২-০৬-২০০৮/পৃ:৪)
২০০৮ সালে ৪ নভেম্বর ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানকারী নির্ঝর আলম সাম্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যাতায়াত কালে তাকে ছাত্র দলের ক্যাডাররা রাস্তা থেকে ধরে এনে ক্যাম্পাসে ব্যাপক প্রহার করে ফলে তার বাম পা ভেঙ্গে যায় এবং দীর্ঘদিন পঙ্গু হাসপাতাল ও এনাম মেডিক্যালে ভর্তি থাকে। (সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো/০৫-১১-২০০৮/পৃ:০৬, দৈনিক ভোরের কাগজ/৬-১১-২০০৮/পৃ:৭) এই ঘটনা ড. শরীফ এনামুল কবির নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেন এবং পরবর্তীতে উপাচার্য প্রফেসর আব্দুল বায়েস, বর্তমান উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর আমির হোসেন খান সহ আওয়ামীলীগের ৪৫ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত ১১ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে সাম্যর নাম উল্লেখ করে বিগত প্রশাসনের কাছে বিচার দাবীকরে বিবৃতি দেন। দুঃখের বিষয় আজ এই উপাচার্য ড. শরীফ নিজেই নির্ঝর আলম সাম্যর বিরুদ্ধে অপপ্রচার দেন।
২০০৭ সালের ১৬ ই জুন বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী ও দেশরতœ শেখ হাসিনা যখন গ্রেফতার হন সকাল ৮টা-৯টার মধ্যে সোহেল-জনির নেতৃত্বে বর্তমান সভাপতি শাফীন ও সাধারণ সম্পাদক সাম্য সহ ছাত্রলীগের ২৫-৩০ জন কর্মী জরুরী অবস্থা ভঙ্গ করে নেত্রীর মুক্তির দাবীতে মিছিল করেছিলেন। (সূত্র ঃ ইটিভিতে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ)। ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ হেল কাফী, বিগত কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দ আব্দুল মতিন বাপ্পি ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাম্য আওয়ামীলীগের প্রার্থী নির্বাচনে (সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী) জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ জেলার জরিপ করেছিলেন। পরবর্তীতে ঐ জরিপের ভিত্তিতে আওয়ামীলীগের নমিনেশন দেওয়া হয়। তথাপিও সাম্য’র বিরুদ্ধে মাননীয় উপাচার্য অপপ্রচার দেন।
গত ২৩ মে ২০১০ ইং তারিখে রাত্র ৩.৩০ মিঃ মওলানা ভাসানী হলে উপাচার্যের গ্র“প (ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল মিক্সড্) ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাশেদ রেজা ডিকেনসহ ১৫-২০ জন ছাত্রলীগ কর্মীকে ব্যপক ভাবে প্রহার করে হল থেকে বিতাড়িত করে। ঐ ঘটনায় উপাচার্য ড. শরীফ গভীর রাতে ০১৭১৩৪৬৪৬৯৮ নাম্বার থেকে নাহিদুর রহমান খান সাগরের সাথে (ঐ হলের পূর্বের নেতা) ০১৭৪৫২৪৩৫১৮ ও ০১৯১৭২৫৭১০০ এই নম্বরে ফোনে যোগাযোগ করে মারামারি সৃষ্টি করেন। (সূত্র: কললিষ্ট) ঐ ঘটনায় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অনুপ্রবেশকারী কতিপয় ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিস্কার করলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি এবং তদন্ত প্রতিবেদন আজ অবধি আলোর মুখ দেখেনি। (সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো/২৫-০৫-২০১০/পৃ: ৫ম, দৈনিক সমকাল/২৫-০৫-২০১০/পৃ:১ম, দৈনিক যুগান্তর/২৫-০৫-২০১০/পৃ:শেষ, দৈনিক কালের কণ্ঠ/২৫-০৫-২০১০/পৃ: শেষ)।
গত ০৪ নভেম^র ২০০৯ তারিখ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য সামিউল বাসির সামী’কে(জাবি ছাত্র) উপাচার্য গ্র“পের নেতা এস এম শামীম ০১১৯০৩৫১৮৯৩ নাম্বার থেকে এস এম এস করে রাত ১১টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করে। যে ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। (সূত্র: দৈনিক সমকাল/০৬-১১-২০০৯, দৈনিক জনকণ্ঠ/০৬-১১-২০০৯)। তাই ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের মত বলতে হয়-বুঝিলাম দলীয় স্বার্থ আজ ব্যক্তি স্বার্থের নিকট পরাজিত হইল।
২. ৫ জুলাই জাবিতে বিভৎস মারামারির নেপথ্যে :
৫ জুলাই ২০১০ তারিখে জাবির ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। কিন্তু মারামারির নেপথ্যে রয়েছেন ড. শরীফ এনামুল কবির। কারণ ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার পরই তার মাথা নষ্ট হয় এই ভেবে যে এবার বুঝি তার একনায়কতন্ত্র আর থাকলনা। এমনকি তার মদদ পুষ্টরাও তাদের অপকর্মের জন্য কমিটিতে স্থান পায়নি। সুতরাং একের পর এক চক্রান্ত করে কমিটি ভঙ্গার জন্য। যখন অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা সংবাদ উপস্থাপন করেও কাজ হয় নি তখন ক্যাম্পাসে লাশের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে উপাচার্য। ৫ জুলাই মারামারির আগের রাতে উপাচার্য তার বাসায় আলবেরুনী হলের ছাত্রদের নিয়ে বৈঠক করেন। (সূত্র: বাসায় যাওয়ার জন্য নামসহ পাঠানো স্লিপ সংরক্ষিত আছে)। ছাত্রলীগের কতিপয় কর্মী না বুঝে প্রশাসনের পাতানো ফাঁদে পা দেয় এবং ঘটনার সময় উপচার্য নিজে উপস্থিত থেকে নির্দেশ দিয়েছেন-“মার তোরা, বিচার আমি পরে করব।” (সূত্র: প্রত্যক্ষদর্শী-সাংবাদিক, মাহী মাহফুজ)। পুলিশ ছিল নিরব দর্শক।
৫জুলাই এর মারামারি উপাচার্য নিজে সৃষ্টি করেছিলেন শুধুমাত্র ছাত্রলীগের কমিটি ভাঙ্গার জন্য। (সূত্র: দৈনিক সাংবাদ/৭-৭২০১০, পৃ:১ম, দৈনিক ইনকিলাব/৮-০৭-২০১০/পৃ:শেষ, দৈনিক ইনকিলাব/২১-০৮-২০১০/কলাম-পলাশ মাহমুদ)।
উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবির পূর্ব থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি ছাত্রলীগের সব বহিষ্কার করবেন এবং তদন্ত কমিটি নাটক সাজিয়েছিলেন। কারণ যে সিন্ডিকেটে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ ২২ নেতাকর্মীকে বহিস্কার করা হয়েছিল বিষয়টি সেই সিন্ডিকেটে এজেন্ডা ভূক্ত ছিলনা। এমনকি বহিষ্কারের কমপক্ষে ২০দিন পর তদন্ত রিপোর্ট সিন্ডিকেট সদস্যদের হতে পৌঁছায়। প্রশ্ন হল-তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াই সিন্ডিকেট সদস্যরা কিভাবে বুঝলেন বহিস্কৃতরা দোষী ? বরং দোষীদের শাস্তি না দিয়ে (কারণ তারা উপাচার্যের গ্র“প করে) উল্টো সভাপতি উদ্ধার কাজে লিপ্ত থাকার পরও এবং সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত না থাকার পরও তাদের বহিস্কার করা হয়। (সূত্র: দৈনিক সমকাল/২৮-৮-২০১০/পৃ:০৮)
আমরা যারা সচেতন ছাত্রলীগ কর্মী আমাদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন-প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির জ্ঞান পাপী, নাকি সংগঠন পাপী ?
সচেতন ছাত্রলীগ কর্মীবৃন্দ
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




