somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুদ পাথরটা

১২ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[ এই লেখাটি সম্পুর্ন সাহিত্যের অন্তর্গত গল্প শ্রেণীভুক্ত মাত্র, যাবতীয় চরিত্র, ঘটনা, উপলখ্য কাল্পনিক। কারও সাথে মিলে গেলে তা হবে নিতান্তই কাকতালীয়। কোনমতেই সিরিয়াস কোন লেখা নয়, নিতান্তই নিছক এক্সপেরিমেন্ট । ]

অদ্ভুদ পাথরটা

আশরাফ সাহেব লোকটা কেমন? নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করল সে। উত্তরটা পরিস্কার ভাবেই তিনি জানেন। তিনি কোন মতেই ভাল লোক নয়। ইদানিং এই ব্যাপারটা তার মধ্যে প্রায়শই সূক্ষ্ণ যন্ত্রণা দিচ্ছে। এ মানসিক চাপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে অবচেতন মত আপনি থেকেই বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করায়। তিনি তো আর কাউকে খুন করছেন না। তাছাড়া অফিসের আর পাঁচটা অফিসারও তার মত উৎকোচ সহ মোটামোটি সব ধরণের অস্বাভাবিক কাজগুলো করে থাকে। মার্জিত ভাষায় যাকে দুর্নীতি বলা হয়। এসব আসলে করতেই হয়, এছাড়া বর্তমান সমাজে টেকা কস্টকর। স্টেটাস রাখা যায়না এসব লাইন ছাড়া।
কিন্তু পরক্ষণেই তার চেতন মন আবার উল্টোরথে দৌড়াতে থাকে। এই যে সরকারি তহবিল, অর্থের প্রবাহ এর প্রত্যেকটি টাকার সাথে জড়িয়ে আছে পনের কোটি মানুষ। হিসেব তো খুবই সোজা, একটি টাকা আত্মসাৎ তো একসাথে এতগুলো মানুষের সাথে বেইমানী। আর এই কাজটা বছরের পর বছর ধরে কত সহজেই না করে চলছে আফসার সাহেব। এই যে গুলশানের চকচকে ফ্ল্যাট, গাজীপুরে কয়েক বিঘা জমি, শেরপুরে বাংলো এসব আসলে কার? সত্যিই কি আশরাফ সাহেবের?
ইদানিং এই চিন্তাগুলো তাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। সেই থেকে তার মধ্যে একটি পরিবর্তন লক্ষণীয়। এইত কিছুকাল আগ পর্যন্তও সমাজের নিচু শ্রেণীর লোকগুলো এই যেমন, ভিখিরি, মিসকিন দেখলেই সে ভ্রু কুচকাত বা বিরক্ত হয়ে পাশ কাটিয়ে সরে যেত সেখানে এখন তাদের প্রতি জন্ম নিয়েছে এক মমত্ববোধ। সে এখন তাদের দিকে রীতিমত সাহায্যের হাত বাড়ায়। যেন এদের প্রতি তার অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। হয়ত তার সাম্প্রতিক মানসিক অস্থিরতার জন্যই এ বোধের জন্ম নেয়া। অথবা তার সেইসব দিনগুলোর কথা মনে করে যখন কোনরকমে একশ সত্তুর টাকা নিয়ে সে চলে এসেছিল এই শহরটাতে, জগন্নাথ কলেজের একটা স্যাঁতসেঁতে ছোট্ট রুমে। যেখানে তাকে অনেক রাত পারি দিতে হয়েছে শুধুই একটা পাউরুটির টুকরা আর এক গ্লাস পানি খেয়ে।

ভোর, যাকে বলে কাক ডাকা ভোর। আফসারের খুব প্রিয় সময় এটা। তাছাড়া ডায়াবেটিসের সমস্যার জন্য তাকে ভোরে উঠে লাফঝাঁপ করতেই হয়। ভোরে উঠেই সে গাড়ি নিয়ে পার্কে চলে যায়। সকালের এ নির্মল পরিবেশ তার মধ্যে প্রশান্তি নিয়ে আসে। আর এই সময়টাতেই প্রধানত তার এইসব মিশ্র অনুভূতি মাখা চিন্তাগুলো এসে মাথায় জড়ো হয়। সে কেমন লোক? নিজেকে মূল্যায়ন আর অপরাধ বোধের মিশ্র মানসিক অবস্থা।

সেদিন সকাল বেলাতেও বরাবরের মত তিনি পার্কে জগিং করতেছিলেন। ভাবছিলেন কিভাবে সমাজের মুষ্টিমেয় কিছু লোক জনগণের অর্থসম্পদ লুটপাট করে। কত শত ছল ছাতুরি। পুরো ব্যবস্থাই যখন অসুস্থ তখন কিইবা করার থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রায় আচানকই সামনে আসল লোকটি। বয়স পঞ্চাশ আর ষাটের মাঝামাঝি হবে। কালচে, ময়লাভরা শরীর, মুখভর্তি দাঁড়িগোফের জঙ্গল, ময়লা মাখা, লালচে, ফ্যাকাশে পাঞ্চাবি আর লুঙ্গি। গলায় ডজনখানেক বিভিন্ন সাইজের মালা বা তসবিহ , কোনটা পাথরের কোনটা হাড়ের। হাতে কয়েক ধরনের শাখা আর বাম হাতের মুঠোতে একটি কাঠের দন্ড। একনজর দেখেই যে কেউ তাকে আধা পাগলাই বলবে। হঠাৎ সে মাটি খুড়েই যেন আফসার সাহেবের সামনে হাজির।
“তোর সামনে মারাত্মক বিপদ, তুই বুঝতাছস?” হাতের দন্ডটা আফসার সাহেবের দিকে তাক করে হুংকার তুলল লোকটা। আগের অবস্থা হলে তিনি হয়ত লোকটিকে নেশাখোর বিবেচনায় পাশ কাটিয়েই চলে যেত বা জোড়ে ধমক দিয়ে বসত। কিন্তু ইদানিং তার চিন্তার আমুল পরিবর্তন হয়েছে। এই যে নেশাখোর, রাস্তার অর্বাচিন মানুষগুলো এরা কেউ সমাজের বিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া নয়। অসুস্থ সমাজে তারা উপেক্ষিত হয়েই এখন রাস্তায়।
“কিসের বিপদ ভাই।” আফসার উত্তর করে। “চুপ! আমি তোর ভাই না। আমি কেউ না, আমি তোর উপর শনির আছড় দেখতাছি। মরণ তোর দিকে আগাই আসতাছে”। গম্ভীর কন্ঠে বলে চলে আধা পাগল লোকটা। আফসার সাহেব সামান্য কৌতুক বোধ করেন। হাসি পায় তার। কিন্তু মুখ যথাসম্ভব গম্ভীর রেখে সে জিজ্ঞেস করে “কি বিপদ জনাব?” লোকটি কর্কশ কন্ঠে বলে “তুই আমার কথা বিশ্বাস করস নাই, ঠিক? খাবার দে, ক্ষিদা লাগছে”। বিপদ হঠাৎ খাবারের দিকে মোড় নেবে এমন প্রত্যাশা আশরাফ সাহেবের ছিল না। তিনি কন্ঠ স্বাভাবিক রেখে বললেন “জনাব আমার সাথে তো খাবার নাই, টাকা দিলে চলবে না?” বলতে বলতে সে মানিব্যাগ হতে একশ টাকার একটা নোট বের করে। কিন্তু লোকটা প্রচন্ড ধমক তার হাতকে মোটামোটি কাপিয়েই তুলে। টাকাটা মানিব্যাগে পুরতে পুরতে বলে “ঠিক আছে, আপনি আমার সাথে আসেন, দোকান থেকে আমি খাবার কিনে দেই।” লোকটি রক্তচক্ষু মেলে জবাব দেয় “তুই আমারে মিসকিন ভাবছস” তুই জানস আমি কে? আশরাফ সাহেব বিনীত ভঙ্গিতে বলেন “তাহলে জনাব বাসায় চলেন, দুজনে একসাথে বসে নাশতা করি।” লোকটি হাত উচিয়ে তাকে থামিয়ে দেয় “না, আমি কাল তোর বাসায় যামু, তুই থাকিস”। আফসার সাহেব বাসার ঠিকানা দিতে গেলে লোকটা বাধা দিয়ে বলে “আমি তোর বাসা চিনি, আমি সব চিনি”। বলেই লোকটা হাটা শুরু করল। আফসার সাহেব মনে মনে হাসতে থাকে। তিনিও গাড়িতে গিয়ে বসলেন। বাসায় ফিরে যাবেন।
গাড়িতে বসে তিনি আধা পাগল লোকটা কথা ভাবতে থাকেন। এটি হয়ত লোকটার এক ধরনের মানসিক সমস্যা। কত রকম রোগের কথা যে এখন শোনা যায়, প্যারানয়েড, অবসেসিক, কমপালসিভ, সিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। কে জানে লোকটার কি অসুখ। হঠাৎ তার সাবধানী বাণীর কথা তার মনে হয়। কি একটা বিপদের কথা বলেছিল লোকটা। কিসের বিপদ? সত্যিই কি কোন বিপদ আসছে? লোকটার কথা সত্যিও তো হতে পারে। পুরো পৃথিবীটাই তো একটা রহস্য। এক অন্ধকার জগতের পাশে বসে আমরা রহস্যের সমাধান করতে ব্যস্ত। নাহ্................কি ভাবছে সে। বিরক্ত লাগে তার। যতসব আজেবাজে ছেলেমানুষী চিন্তা ভাবনা। দিনকে দিন তার নিজেরই মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

পরদিন ভোর। আফসার সাহেব কেন জানি মনে হচ্ছিল পাগল লোকটি আসবে। সেজন্যই ড্রাইভারকে বাড়ির গেট এ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সালমা বেগমকে আগেই বলা হয়েছে কেউ একজন তার সাথে আজ নাস্তা করবে। তাই প্রতিদিনের আয়োজনের সাথে আজ থাকছে মিষ্টি, পায়েস, ফল-মূল ইত্যাদি। অযথাই পাগলামি করা হল, ভাবে আফসার। কি দরকার ছিল সালমাকে বলার। লোকটি হয়ত আসবেই না। কিন্তু লোকটি আসল। বাসা কেমনে করে চিনল সেটা একটা রহস্যই থাকল। জিজ্ঞেস করবে কি? না থাক। সালমা বেগম স্বামীর অতিথীকে দেখে রীতিমত আশাহত ও বিরক্ত। তবে পর্দার আড়াল হতে ছোট ছোট দুটি কৌতুহলি চোখ পাগল লোকটিকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছিল তখন “এই এদিকে আয়” হাত দিয়ে ইশরা করল সে। নির্ভয়ে কাছে গেল আফসার সাহেবের পাঁচ বছরের নাতনি ছোয়া। ‘তোর নাম কি?’ সোফায় বসতে বসতে প্রশ্ন করে সে। “ছুয়া, তুমি দাড়ি গোফ কাট না কেন” প্রশ্ন করে সে। যা বিস্কুট নিয়ে আয়। আদেশ দেয় লোকটা। ছোয়া হাতে করে দুটা লম্বা সাইজের বিস্কুট নিয়ে এলে সে ঝটকা টানে সেগুলো নিজের হাতে নিয়ে নেয়। তারপর ফু দিয়ে আবার বাচ্চা মেয়েটির হাতে তুলে দিয়ে বলে “নে খা”। ছোয়া আস্তে করে বিস্কুটে কামড় বসায়। চেচিয়ে উঠে “মিষ্টি, বিস্কুট তো মিষ্টি হয়ে গেছে”। I like sweet. খানিকটা অবাক হয় আফসার। সত্যিই কি মিষ্টি হয়ে গেছে বিস্কুট। সে ছুয়ার হাত হতে একটুকুন বিস্কুট ভেঙে নিজের হাতে নেয়। “জনাব, খানা তৈরি। আপনি টেবিলে বসেন। লোকটি টেবিলে বসে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আফসার, গরীব মানুষ। হয়ত একসাথে কোনদিন এত খাবার দেখেনি। আফসার নিজেই রুটি, মাংস লোকটির প্লেটে তুলে দেয়। বিস্কুটের টুকরাটা মুখে দেয় সে। সত্যিই মিষ্টি হয়ে গেছে বিস্কিট। ট্রিক, ভালো ট্রিক করেছে লোকটি। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় হাতেই কোন মিষ্টি ক্যামিকেল থাকে। তবে লোকটার প্রতি এই প্রথম কৌতুহল বোধ করে সে। তার কি কোন উদ্দেশ্য আছে?
লোকটি খাবার দাবার প্রায় কিছুই খেল না। শুধু একটু শুকনো রুটি আর পানি খেল সে। আরো একটু অবাক হল আফসার। লোকটি উঠতে উঠতে বলল “আমারে টাকা দে।”। উদ্দেশ্য কিছু আজ করতে পারে সে। তবে আফসার এমনিতেই টাকা দিত। সে মানিব্যাগ হতে একটা পাঁচশ টাকার নোট বের করে লোকটার দিকে হাত বাড়ায়। “তুই আমাকে কি ভাবস? আমি তোরে বলছিনা, আমি ফকির না। জিজ্ঞেস করে আফসার “কত দেবো?”। ‘বিশ হাজার’ হতচকিয়ে যায় আফসার। লোকটিকে এত প্রশ্রয় দেয়া মোটেই ঠিক হয়নি, ভাবে সে। লোকটিকে কি ধমক দিয়ে বিদেয় করবে সে। ব্যাপার টাও তো খুব খারাপ দেখায়। “দেখুন, এত টাকা তো বাসায় নেই। টাকা তো ব্যাংক এ রাখা হয়। তাছাড়া..........“আমি কাল আসমু, তোর তো মহা বিপদ। আর কোন উপায় নাই। আমি তোরে একটা পাথর দিব। তুই ঐ টাকা দিয়া পাথরটা কিনবি। ওই পাথর তোরে বাঁচাবে। বলে লোকটি। আফসার সাহেব হাসতে গিয়েও হাসে না, তার মাথায় তখন অন্য একটি প্ল্যান এসেছে। জি আপনি কাল আসুন। আমি টাকা রেডি করে রাখব। আপনি সকালে এসে নিয়ে যাবেন। ‘হু’ বলেই লোকটি দ্রুত প্রস্থান করে।

সালমা বেগম মারাত্মক বিরক্ত। “তুমি কি সত্যি সত্যিই এই পাগলটিকে টাকা দিতে চাচ্ছো?। হ্যাঁ, আমি দেখতে চাই টাকা নিয়ে সে কি করে। বলে আফসার। “শোন ইদানিং তোমার হাবভাব আমার মোটেই ভাল ঠেকছে না। এইগুলা ছাড়, নইলে এই বয়সে আমি তুমারে ছাড়তে বাধ্য হব।” ছোঁয়া’র কৌতূহলী চোখ তখন অনেক প্রশ্নের জবাব চাচ্ছিল। তার দিকে চেয়ে মুচকি হেসে আফসার বলে, ‘তুমি কাল অনেক গুলো বিস্কিট নিয়ে লোকটার কাছে যাবে বুঝস ?’ ‘হু’ বিজ্ঞের মত মাথা নোয়ায় সে ।
পরদিন সকালে লোকটা হাজির। হাতে একটা কাগজে মোড়া প্যাকেট । লোকটা হয়ত এই জিনিসটাই দিতে চেয়েছে তাকে, ভাবে আফসার। ‘এই যে আপনার টাকা’ বলে একটা ইনভেলাপ এগিয়ে দেয় সে। ‘বিশ হাজার আছে?’ জিজ্ঞেস করে সে। ‘হ্যা,হ্যা, গুনে দেখুন’ লোকটা না গুনে ফ্যাকাশে পাঞ্জাবীটার পকেটে পুরে নেয় ইনভেলাপটা । ‘এই যে তোর পাথর, খুলবিনা, তিনদিন পর খুলবি।’ এই বলে লোকটা কাগজে মোড়া প্যাকেটটা আফসারের হাতে ধরিয়ে দেয় । অনেক ভারী, দেড় কেজিত হবেই। ‘এই পাথর কি সোনা হয়ে যাবে?’ জিজ্ঞেস করে ছোঁয়া । ‘হুম’ অস্ফুট কণ্ঠে উত্তর করে লোকটা। লোকটা কি তাকে এতই নির্বোধ ভাবল, ভাবে আফসার। ‘ফেয়ারি টেলে এমন হয়, আমি জানি। পাথর সোনা হয়ে যায়, ডাইনি সোনা চুরি করে।’ বলতে বলতে লোকটার দিকে একবাটি বিস্কিট বাড়িয়ে দেয় ছোঁয়া। লোকটা বাটিটা হাতে নিয়ে একটা হালকা ফু দিল, ময়লা হলদেটে দাত বের করে একটা হাসি দিয়ে বাটিটা আবার ওর কাছে ফিরিয়ে দিল। ভাল করে লক্ষ্য করল আফসার সে শুধুই একটা ফু দিয়েছে। ব্যাস আর কিচ্ছু না। আজকে নিশ্চই বিস্কিট গুলো মিষ্টি হয়ে যাবে না। লোকটা কোন কথা না বলে চলে যেতে উদ্যোগী হল। আফসার সাহেব দরজায় দাঁড়ানো ড্রাইভারকে ইশারা করতেই সে লোকটার পেছন পেছন বেড়িয়ে গেল । ড্রাইভার আফসারের কথামত একটা লোক ঠিক করেছে, যে পাগলা লোকটাকে অনুসরন করবে। আফসার দেখতে চান, লোকটি টাকাটা দিয়ে কি কি করে।
আফসার বক্সটা আবার উচু করল। সে অজান্তেই হেসেই ফেলল। জ্যোতিষীরা পাথর বিক্রি করে, রুবি, নিলা, মার্বেল এইসব _ কিন্তু এইরকম আস্ত প্রমান সাইজের পাথর কাউকে বিপদ থেকে বাঁচাবে ভাবলেইতো হাসি আসে। ছোঁয়া পাঁথরটা নিয়ে খুব আগ্রহ দেখাচ্ছে। সে পাঁথরটা কিভাবে সোনা হয়ে যায় এই বিষয়টা নিজ চোখে দেখতে চায়। সে বাক্সটা নিজের কাছে রাখতে চায়। আফসার বক্সটাকে ছোঁয়ার ঘরে দিয়ে আসল, সে ওকে ভাল করে বুঝিয়েও বলল, এসব শুধু ফেয়ারি টেলেই সম্ভব। বাস্তবে এমন কখনো হয় না।
তবে ছোঁয়া খুবই আশাবাদী। সে তাৎক্ষনাৎ বক্সটা খুলে ফেলল। পাথরটাকে সে যত্নসহকারে ঢেকে রেখে দিল। আরও একটি অবাক করা বিষয় হল, পুরো একবাটি বিস্কিট মিষ্টি হয়ে গেছে, এটি কেমন করে সম্ভব হল তা আফসার কিছুতেই ঠাউর করতে পারছে না।
আফসার সাহেবের কৌতুহল হটাৎই মাঠে মারা গেল। সে ভেবেছিল অন্তত মিষ্টি বিস্কুটের ব্যাপারটা সুরাহা করতে পারবে। সে আশায় গুড়েবালি। বিকেলে ড্রাইভার কাঁচুমাচু মুখ নিয়ে এসে বলল যে লোকটাকে সে পাঠিয়েছিল সে বকশীবাজারের কোন এক গলির ভেতর পাগলা লোকটাকে হারিয়ে ফেলেছে। অনেক চেষ্টা করেও সে তার হদিস বের করতে পারে নাই। আফসার সাহেবের মেজাজ চরম খারাপ হয়ে গেল। তার এক্সপেরিমেন্টের এখানেই সমাপ্তি ঘটল মনে হয়। না, কিচ্ছু হল না। পরে তার মনে অন্য রকম ভাবান্তর দেখা গেল। সেই পুরাতন চিন্তার মানসিক ভারসাম্যহীনতা। সে কে একজন মানুষকে নিয়ে এমন গেম খেলার। হতে পারে লোকটা একজন বড় ধরনের ধাপ্পাবাজ, তাতে কি। সেটাইত তার জীবিকা। কে বলেছিল তাকে বাড়িতে ডেকে এনে টাকা দিতে। এটা ছিল নিতান্তই উচ্চবিত্ত একজনের এক সাধারণ বিলাসিতা মাত্র আর মানসিক প্রশান্তি ও কৌতুহলের মেটানোর তুচ্ছ উপলক্ষ । ভালই হয়েছে বেটা হারিয়ে গেছে।
এদিকে প্রতিদিন অন্তত একবার করে আফসারকে পাঁথরটা দেখতেই হচ্ছে। সকালে উঠেই ছোঁয়া তাকে টেনে নিয়ে যায় পাঁথরটার কাছে, ওটার শেষ অবস্থা দেখার জন্য। সে এখনও আশা ছাড়েনি। পাঁথরটা দেখতেও বেশ অদ্ভুত। একপাশটা মোটামোটি সমান আরেকপাশটা টিলার মত। লালচে রঙের শরীরে ছোট ছোট কাল কাল গর্ত।
আজকাল অফিসেও খারাপ সময় যাচ্ছে আফসারের। নজরুল সাহেবের সাথে তার বিরুধতা চরম আকার নিয়েছে। টাকা পয়সা আর কর্তিত্ব নিয়ে দ্বন্দ। পৃথিবীর যাবতীয় সমস্যার মূলেই এইসব ক্রিয়াশীল দেখা যায়। এদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল বেশ কয়েকবছর ধরে। শুধু এই সড়ক ও জনপথ বিভাগই নয়। যে কোন সরকারী দপ্তর থেকে তৃণমূল নাগাদ চলে এই রাজনীতি, এই দ্বন্দ, এই দলাদলি। অফিসে অফিসে উন্নয়নের জোয়ারে এভাবেই সরকারী আমলারা দেশ ভাসিয়ে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। কে জানে কোনদিন এ দেশের কোন পরিবর্তন হবে কিনা। আফসার সাহেব এই লাল ফিতাধারী একজন, এই দুনিয়ায় তাকে মোটামোটি সফল বলা যায়। তিনি এইসব ভাবেন, মাঝে মাঝে তার দেশটার জন্য কিঞ্চিৎ কষ্টও হয়, সে তো আর একা সব বদলে দিতে পারবে না, বাস্তবতা যদি মোঠোফোনের বিজ্ঞাপন হত তবেত কথাই ছিল না। যাই হোক আফসার সাহেব ভাবতেই থাকেন, কিন্তু সহাসাই তিনি বদলে যান না, ঢিলে হয়ে যায় না লাল ফিতার বাধন, আর তার ভাগের মা দেশটাও আর গঙ্গা না পেয়ে পরে থাকে আগের মতই ।
নজরুল সাহেব লোকটা কিন্তু সত্যই ভয়ানক। সে নিজের স্বার্থের জন্য যে কোন কিছুই করতে পারে একথা ভালভাবেই জানে আফসার। এইবার তার সাথে লেগে খুব খারাপই হয়েছে, ভাবে সে। তাছাড়া লাগবেইনা কেন, এবারের প্রজেক্টটা পাশ হয়ে গেলে মোটামোটি দুই কোটি টাকা আফসারের হাতে আসবে। যাদের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হবে তারা এটা দেবে তাকে, এটাকা অবশ্য আফসারের একার নয়। তবে যোগাযোগ মন্ত্রী তাকেই প্রেফার করে বেশিরভাগ সময়; তার সাথে আফসারের অনেক পুরাতন লেনদেন। এই নজরুল সাহেবের মাথা ব্যাথার প্রধান কারন এটাই। আর ইদানিং তার হাবভাব মোটেই সুবিধার মনে হছে না। খারাপ কোন কিছু হতে যাচ্ছে এটা সে সহজেই আঁচ করতে পারছে সে।
ছোঁয়া কিন্তু শেষমেশ ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়ল। এক সপ্তাহ পার হবার পরও পাঁথরটা সোনা হয়ে যাচ্ছে না। তবে সে কি আর সোনা হবেই না?
রাত কয়টা বাজে? হবে হয়ত মধ্য রাত্রি। আফসার সাহেবের গলা শুকিয়ে আসছে। বিশালদেহী একজন লোক তার বিছানার পাশেই দাড়িয়ে আছে। হাতে ধারালো ছোড়া। বাইরের রাস্তায় নিয়ন আলো জানালা দিয়ে এসে তার চোখে পরায় চোখ দুটা জ্বলজ্বল করছে। তার চেহারায় হিংস্রতা কিন্তু কোন ঘৃনা নেই। এই লোকটাকে আফসার চেনে, তাকে সে নজরুল সাহেবের সাথে দেখেছে। সে খুব সম্ভবত আফসারকে খুন করতে যাচ্ছে। তাকে খুন করতে পাঠানো হয়েছে। নজরুল সাহেব তাকে খুন করে রাস্তা পরিষ্কার করতে চায়। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ থাকবে না। আর আফসার, কাল সকালে সুর্য্যের আলো আর আর তার দেখা হবে না। লোকটি তার বাছানার দিকে এগিয়ে আসছে। আফসারের শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুততর হচ্ছে। লোকটা তার একটা হাত দিয়ে আফসারের গলাটা চেপে ধরছে, অন্য হাতে ধরা ছোড়াটা নেমে আসছে। আফসার প্রানপ্রনে চিৎকার করছে, কিন্তু শব্দ বের হচ্ছে না। গলা ধরে আসছে, ছুড়ি নেমে এসেছে একেবারে গলার খুব কাছে। আফসার গোঙানির মত করছে।
‘এই কি হইছে, উঠ’ সালমা বেগমের কণ্ঠ তার চিনতে সমস্যা হয় না। সে ধড়পড় করে উঠে বিছানা হতে, ‘পানি. . পানি’ আলো জ্বালে সালমা বেগম, পানি এনে দেয় সে আফসারকে। ঢকঢক পানি গেলে আফসার। কি ভয়ানক দুঃস্বপ্ন, এখনও তার চোখে ভাসছে, সেই ভয়ংকর খুনির চোখমুখ। তার ছুড়ি হাতে এগিয়ে আসা, তার রক্তচক্ষু। এই স্বপ্নের অর্থ কি? স্বপ্ন তৈরি করে অবচেতন মন। এই জন্যেই খুনির চেহারা ছিল নজরুল সাহেবের সাথে দেখা ব্যাক্তির প্রতিরূপ। মনে মনে হাসে আফসার, ভাগ্যিস এটা নিছক এক স্বপ্নই ছিল।
সাকাল হয়ে আসছে, আলোকিত হয়ে উঠেছে চারিপাশ। ঝুল বারান্দায় এসে দাড়ায় আফসার। বাড়ীর গেটের পাশাটায় ছোটখাট জটলার মত দেখা যায়। কি হয়েছে ওখানে, আফসার সাহেব ভাল করে লক্ষ্য করলেন। কেউ একজন পরে আছে মাটিতে। মাথা দিয়ে রক্ত বের হয়েছে বুঝা যাচ্ছে। প্রচণ্ড কিছু দ্বারা আঘাত করে মাথা আর মুখটা থেতলে দেয়া হয়েছে। মানে খুন করা হয়েছে। আফসার গেট পেড়িয়ে লাশটার কাছে আসে। মাটিতে রক্ত জমাট বেধে শুকিয়ে গেছে। খুন করা হয়েছে বেশ আগে। থেঁতলে যাওয়া মুখটার দিকে ঝুকে এল আফসার। কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে, কই যেন দেখেছে। ভাল করে লক্ষ্য করতেই তার শরীরের লোমগুলো খাঁড়া হয়ে উঠল। শিউরে উঠল সে। এত সেই লোকটা, যাকে স্বপ্নে সে দেখেছে, এইত মাঝরাতেই। হ্যা, ওই লোকটাই, স্পষ্ট মনে আছে তার। কেমন করে সম্ভব। কেউ একজন হঠাৎ করে বলে উঠল ‘ওই যে, ওই পাঁথরটা দিয়া বারি মাইরা মারা হইছে মনে হয়, এখনও রক্ত ল্যাইগা আছে’
পাথর !! পায়ের নিচ হতে মাটি সরে আসতে থাকে তার। কোনরকমে পাঁথরটার দিকে তাকায় সে। হা, কোন ভুল নেই এটা ওই পাঁথরটা যা পাগল লোকটা তাকে দিয়েছিল। এটা এখানে কেন? আফসার সাহেবের মাথা ঘুরতে থাকে। তবে কি, নাহ, এটা হওয়া সম্ভব নয় _ হাঁটু অবশ হয়ে এল তার, চোখে অন্ধকার দেখল সে। রাস্তায় মুষড়ে পরে গেল মুহুর্তে।
চোখ মেলল আফসার সাহেব। বিছানায় শুয়ে আছে সে। পাশে গম্ভীর মুখ আর কৌতূহলী চোখ নিয়ে বসে আছে ছুয়া। তাকে কাছে টেনে নিল আফসার ‘তোমার পাঁথরটা কই ছোঁয়া?’ সে কান্নামাখা ভারী কণ্ঠে জবাব দেয়, ‘চুরি হয়ে গেছে, আমি অনেক খুজলাম। মনে হয় সোনা হয়েই গিয়েছিল। আমি দেখতেও পেলাম না। চোর নিয়ে নিল। সকালে উঠে দেখি নেই। I lost it, নাকি ডাইনি বুড়ি নিল !!’
পুলিশের আংশিক তদন্ত রিপোর্ট বের হল। মৃত লোকটার আসল পরিচয় সে একজন প্রফেশনাল কিলার। সে পুলিশের তালিকায় মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল। পুলিশের ধারণা অন্য কোন গ্রুপের সাথে অন্তর্দন্দ জনিত ঘটনায় সে খুন হয়েছে। তবে অবাক করা ব্যাপার হল তার লাশের কাছে একটা ছোড়া ছাড়া আর অন্য কোন অস্র পাওয়া যায় নি। হয়ত তার কাছ হতে আগ্নেয়াস্র কেড়ে নিয়ে ওইভাবে মাথা থেতলেই মারা হয়েছে। তবে তাকে আসলে কে বা কারা বা কোন গ্রুপ হত্যা করেছে তা এখনও আঁচ করতে পারেনি পুলিশ, তবে তদন্ত চলছে।


সোয়াদ আহমেদ।
১৭ জুলাই, ২০১০।
[email protected]


এই লেখাটির প্রেরনায়
- মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ স্যার, যিনি ভ্যালু এড্যুকেশন ক্লাসে এক স্যারের বিষয়ে এক ঘটনা বলেছিলেন। এই লেখাটির ভিত্তি সেই গল্পটি বা ঘটনাটি। পুরা ৬মাসের কোর্সটিতে আমার কিছুই শেখা হয়নি শুধুমাত্র এই থিমটাই আমার অর্জন।
এই লেখা বিষয়ে
- ভেবেছিলাম সুন্দর একটি আধিভৌতিক গল্প প্রায় ৭ বছর পর লেখা হবে। লেখা ও কম্পোজ শেষে আশাভঙ্গ হল। ক্লাসিকের বাইরে আমার মনে হয় যাওয়াই উচিত নয়।
- এই লেখাটি উৎসর্গ করা হল রিফতি, মিথিলা ছোট্ট ছোট্ট ছুঁয়া’দের _ ছোট্ট ছোট্ট এঞ্জেলদের।
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×