গতকাল বিকেলেও খুব মজায় ছিলাম। জাফনার প্রথম দাঁত নড়ছিল।
জাফনার দাঁত নড়া নিয়ে আমি খুব মজায় ছিলাম।
কে জানতো সাত সকালে এত বড় একটা ধাক্কা খেতে হবে। জাফনা ঘুম ভেঙ্গে বলছে "মা পিঠে একটা গোটা হয়েছে"। আমি দেখলাম কথা সত্য। ভাবলাম এমনি, তেমন কিছু না।
নাস্তার টেবিলে সে দেখাল পায়ে আরো একটা গোটা। পিচ্চি নিজেই বলছে "জানো, স্কুলে অতসীর চিকেন পক্স হয়েছে। মা তুমি জানো চিকেন পক্স লাল লাল গোটা গোটা হয়?" এবার আমার হুঁশ হল! চিকেন পক্স!
গত কদিন থেকে খুকখুক কাশছে। নাকটা বন্ধ। আমি ভাবলাম এমনি গরমে ঠান্ডায় এ অবস্থা। চিকেন পক্স আমি ভীষণ ভয় পাই। আমার এখনো হয়নি। এজন্য চিকেন পক্স এর রোগীদের কখনোই দেখতে যাই না, কখনোই না। চিকেন পক্স আমার কাছে অসহনীয় কষ্টকর একটা ব্যপার বলে মনে হয়। এখন পুচকার হওয়া মানে এক কষ্ট এবং নিজেরও হবে নিশ্চিত ধরা যায়। কারণ আমারও জ্বর জ্বর লাগছে। এখন পর্যন্ত তার ঘাড়ে পিঠে মুখে ৮ টার মতন হয়েছে।
১ জুলাই থেকে অনেক কিছু করার প্ল্যান ছিল। তিন মাসের জন্য জাফনা আর আমি ফিলিপাইন যাব এই প্রক্রিয়া চলছিল। সেগুলো নিয়ে এমনিতেই টেনশনে এবং প্রচন্ড চাপে ছিলাম। এখন আর ভাবতে পারছি না। সেগুলোর কি হবে বুঝতে পারছি না।
হতবিহ্বল লাগছে।
সবাই জাফনার সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। এবং আমার যেন না হয়।
*******
গতকালও মনে হচ্ছিল দম ফেলবার ফুরসত নেই আমার। জাফনার পক্স হলেও অফিসের চিঠিপত্র তৈরী করবার কাজগুলো দেখার জন্য আমাকে লেগে থাকতেই হবে। অফিসে কাজটা শুরু করাতে পারলাম ঠিকই। তবে প্রচন্ড অস্থিরতায় আমি ছটফট করছিলাম। পরে বসকে বলে বাড়ী চলে এলাম। কদিন ছুটি নিয়েছি। অসুস্থ বাচ্চাটা ঘুম থেকে উঠেই বলেছে আমার মা কোথায় গেল! একথা শুনে মনে হয়েছে চুলায় যাক জিও । আমার মেয়ে সুস্থ না হলে আমি কোথাও যাবনা।
সজনে গাছ থেকে সজনে পাতা পেড়ে এনেছি। আমার এক স্টাফ পেড়ে দিল। এই অফিসের প্রতিটা মানুষের কাছে প্রতি পদে পদে আমি ঋণী, এরা সীমাহীন ভালবাসায় আমাকে সারাক্ষন আগলে রেখেছে, এখনো রাখে।
জাফনা এখন ভালই আছে। দানাগুলো আরো একটু বেড়েছে। তবে খুব বেশী না। জ্বর নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৫:৪১