somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টি ভেজার নিষেধাজ্ঞা :((

০২ রা নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জাফনাকে বৃষ্টিতে ভিজতে শিখিয়েছিলাম তিন বছর বয়সে। খুলনায় গ্রামটায় থাকতাম তখন। তখন বর্ষাকাল। এইরোদ, আবার এই ঝুমঝুম বৃষ্টি হোত। একদিন দুপুরে বাসায় খেতে আসবো আকাশ কালো করে আসছে, আমি তো মনে মনে খুশী বাড়ী ফেরার পথে বৃষ্টি আমার নাগাল পাবে, কায়দা করে কাকভেজা হওয়া যাবে। মাঝপথে নামলো কঠিন বৃষ্টি। আমি আরাম করে আধভেজা হয়ে বাড়ী পৌঁছলাম। জাফনাকে ভেজাতে ইচ্ছে হল। ওকে কোলে নিয়ে সোজা ছাদে, ঐ বাড়ীটাতে একটা বড় ছাদ ছিল। পিচ্চিতো আমাকে ভয়ে আকড়ে ধরে আছে। আমি কোলে নিয়ে বলছি, ওপরে মুখ তোল, মুখে বৃষ্টি লাগাও। ভয়ে ভয়ে একবার দৃবার করে মুখে বৃষ্টি মাখাল। এরপর ভয় ভাংল, মজা পেল তারপর কোল থেকে নামল। শুরু হোল তার ছোট বড় সব বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নীচে চলাফেরা। এমনো হয়েছে বিকেল বেলাতেও রাস্তায় ছুট ভিজবে বলে। পাগল মায়ের সীমাহীন প্রশয় ছিল এ ব্যপারে।

ঢাকায় ফেরার পর আমরা বৃষ্টি হলেই বাসার ছাদে ছুট দেই । মা মেয়ে হাপুস হুপুস করে ভিজি। আমি হয়তো গুনগুন করি আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে, জাফনাও গাইতে চেস্টা করে।এই শহরের ছাদে ভিজতে ভিজতে আমার মেয়ে ধরেই নিয়েছে বৃষ্টিতে ভিজতে হলে ছাদ চাই! :|

এবছর ভরা বর্ষায় আমরা ফিলিপিন চলে গেলাম। যাবার আগে যাও দৃ একটা ঝুম বৃষ্টি হোল জাফনা ভিজতে পারলো না তার চিকেন পক্স হোল বলে। বেচারাকে বাসায় রেখে আমি যখন ভিজে হাপুস হয়ে ঘরে ফিরতাম, সে কাঁদতো। ওকে আমি শান্ত্বনা দিতাম, তুমি ভাল হয়ে নাও তুমি তখন ভিজো। ফিলিপিনে যখন তখন বৃষ্টি হয়, সকালে যদিবা রোদ, বিকেল হতেই উথাল পাথাল বৃষ্টি ঝড় হোত। একদিন পিচ্চির মনে হোল সে বহুদিন বৃষ্টিস্নাত হয়না। আমি বললাম যাও বাগানে নেমে ভিজে আস। সে বলেবাগানে ভিজতে পারবো না, সবাই দেখবে। ফিলিপিনের বাসায় ছাদ নেই কেন, এই অনৃযোগে সে কি কান্না!!! আকুল হয়ে কাঁদে আর বলে আমি কতদিন ভিজি না, ফিলিপিনের পচা বাসা একটা বাসাতেও ছাদ নাই। আমি কবে বাংলাদেশে যাব? কবে বৃষ্টিতে ভিজবো? আমি বলি আচ্ছা বাংলাদেশেই ভিজিস। এরপর আবার কান্না, বাংলাদেশে গেলে আমি আর বৃষ্টি পাব না......! এরপর আমাকে বলে তুমি আমাকে রেখে বাংলাদেশে ভিজছো.......এরপর দেশে গেলে আমি তিনবার ভিজবো তুমি সিঁড়িঘরে বসে থাকবে, ভিজতে পারবে না। তিনবারের পর তুমি ভিজবে।


এই নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়ে সে যাত্রা কান্না থামানো গেছিল। যদিও মাঝে মাঝেই তার মনে পড়তো আর নাকি কান্না চলতো।
৬১টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×