খুবই বিখ্যাত একটা বই...
খুবৈ অসাধারণ একটা বহি...
আর আমার টাইপমাস্টারি!!
ইতিবাচক মনোভাবের মানুষ কিভাবে চেনা যাবে?
একজন মানুষ অসুস্থ না হলেই যেমন তাকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বলা যাবে না, তেমনি নেতিবাচক মনোভাব না থাকলেও কাউকে ইতিবাচক মনোভাবস্পন্ন বলে চিহিৃত করা যাবে না। ইতবাচক মনোভাবসম্পন্ন মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য সহজে নজরে পড়ে। তারা দয়ালু, আতœবিশ্বাসী, ধৈয্যশীল এবং রিহস্কার । তারা নিজেদের সম্পর্কে এবং অন্যের সম্পর্কেও উচ্চ আশা পোষণ করেন এবং সব কাজেই ইতিবাচক ফল প্রত্যাশা করেন। যাদের মনোভাব ইতিবাচক তারা বারমাসি ফলের মতো, সব সময়েই সুস্বাদু ও তাই তারা সবসময় স্বাগত।
ইতিবাচক মনোভাবের সুবিধাঃ
এই মনোভাবের সুফল অনেক এবং সহজে তা নজরেও পড়ে। অবশ্য যা সহজে নজরে পড়ে তা সহজে নজর এড়িয়েও যেতে পারে। যাইহোক কয়েকটি সুবিধা উল্লেখ করা যায়।
-উৎপাদনশীলতা বাড়ায়
-সঙ্ঘবদ্ধভাবে কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করে
-সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে
-কাজের উৎকর্ষ বাড়ায়
-সৌহার্দ্যপূর্ণ আবহাওয়ায় সৃষ্টি করে
-আনুগত্যের মনোভাব তৈরি করে
-মুনাফা বাড়ায়
-কর্মচারী, মালিক ও ক্রেতাদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি করে
-মানসিক চাপ কমায়
-সমাজের সহায়ক সদস্য হতে সাহায্য করে
-একটি প্রসন্ন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিত হতে সাহায্য করে।
নেতিবাচক মনোভাবের ফলাফলঃ
জীবনে অনেক বাধাবিপত্তি অতক্রম করে এগিয়ে যেতে হয়, এবঙ অনেক সময় আমাদের নেতিবাচক মনোভাবই সবচেয়ে বড় বাধার সৃষ্টি করে। এই মনোভাবের ফলে বন্ধুত্ব ও চাকরি রক্ষা করা, কিংবা সামাজিক ও দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষা করাও কঠিন হয়ে ওঠে। এরূপ মনোভাবের ফলে,
-তিক্ততার সৃষ্টি হয়
-ক্ষোভের ও অসহিষ্ণুতার সৃষ্টি হয়
-জীবন উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে
-অসুস্থতার শিকার হতে হয়
-নিজেরও ঘনিষ্ঠদের উপর মানসিক চাপ বাড়ে, পরিবারের মধ্যে এবং কর্মস্থলে এমন একটি নেতিবাচক আবহাওয়া সৃষ্টি করে যা কারুর পক্ষে মঙ্গলদায়ক নয়। এরূপ মনোভাব ধীরে ধীরে মুধু ঘনিষ্ঠদের সংক্রামিক করে না, পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়।
এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সচেতন হয়েও পরিবর্তন করা যায় না কেন?
মানুষ স্ববাব পরিবর্তনের পরিপন্থী । পরিবর্তন অস্বস্তিকর। সদর্থক বা নঞর্থক-যেমনই ফলাফল হোক না কনে, পরিবর্তন সব সময়েই চাপ সৃষ্টি করে। কখনও কখনও নেতিবাচক মনোভাবের সঙ্গে এমন শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করি, যে পরিবর্তন ইতবাচক হলেও আমরা তা গ্রহণ করতে চাই না।
চার্লস ডিকেন্স এক বন্দীর কাহিনী লিখেছেন যে অনেকদিন মাটির নীচে অন্ধকার কুঠুরি থেকে মুক্ত পৃথিবীর উজ্জ্বল আলোয় নিতে আসা হোল তখন সে অবাক হয়ে চারিদিকে তাকিয়ে দেখল। কয়েক মুহূর্তপরে সে তার নতুন-পাওয়া স্বাধীনতায় এমন অস্বস্তি বোধ করতে লাগল যে সে তার সেই অন্ধকার কুঠুরিতেই ফিরে যেতে চাইল । সেই কুঠুরি, শেকল, অন্ধকার এ সবের মধ্যেই সে নিশ্চিন্ত ও স্বস্তিবোধ করে, তাই স্বাধীনতা ও বিশাল পৃথিবীর কোনও আকর্ষণ তার কাচে ছিল না।
ইতিবাচক মনোভাব গঠনের পদ্ধতিঃ
বাল্যকালেই সারাজীবনের জন্য মানস-গঠন সম্পন্ন হয়ে যায়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি সেই বছরগুলিতে ইতবাচক মানসিকতা গড়ে ওঠে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে ঘটনাচক্রে যদি বাল্যকালে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে তবে তা সারাজীবন বহন করে চলতে হবে। এরূপ মনোভাবের পরিবর্তন করা যায়, কিন্তু তা খুব সহজসাধ্য নয়। কিভাবে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে হয়?
যে আদর্শগুলি ইতবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সাহায্য করে সে সম্পর্কে অবহিত হওয়া।
-ইতিবাচক মনোভাব অর্জন করার আকাঙক্ষা।
-আদর্শগুলি সার্মকভাবে অনুসরণের জন্য শৃঙ্খলাবোধ ও নিষ্ঠার অনুশীলন প্রয়োজন।
বয়স্ক ব্যক্তিরা নিজেরাই ইতিবাচক মনোভাব গঠন করতে পারেন। এ দায় নিজেদেরই নিতে হবে। অনেক সময় ব্যর্থতার জন্য আমরা অপরকে বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ঘটনাকে দায়ী করি। কিন্তু এরূপ না করে একটি বিশ্লেষণধর্মী ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা দরকার। সব স্বপ্নকে সংহত করে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে। যেগুলি সৎ, সত্য এবং মহৎ, সেই সমস্ত ইতিবাক বিষয়গুলি সম্পর্কে চিন্তা করতে করতেই মনের ইতিবাচক দিকটি সমৃদ্ধ হবে। যদি আমরা এই ধরনের মানসিকতা গঠন করতে চাই এবং তা স্থায়ী করতে চাই তবে সচেতনভাবে নিুলিখিত পদ্ধতিগুলি অনুশীলন করা দরকারঃ
প্রথম পদ্ধতিঃ লক্ষ্যের কেন্দ্রবিন্দু পরিবর্তন করে ইতিবাচক গুণের খোঁজ কর (Change focus, look for the positive) জীবনের সমস্ত ইতিবাচক বিষয়ের প্রতিই নজর দেওয়া দরকার। কোনও ব্যক্তির জীবনের কিংবা কোনও বিশেষ অবস্থায় যে উপাদান ও গুণগুলি কল্যানকর সেগুলির প্রতিই নজর দেওয়া উচিত। নেতিবাচক মানসিকতা কেবলমাত্র ক্রটিগুলি দেখতেই অভ্যস্ত হয়ে যায়, ফলে দোষগুলিই দেখা হয়, কল্যানকর দিকটি নজরে আসে না ।
দোষ দেখাই যাদের স্বভাব তারা স্বর্গেরও ক্রটি বার করতে পারেন। বেশিরভাগ মানুষই যা দেখতে ইচ্ছা করেন তাই বড় করে দেখেন। যদি তারা মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব, আনন্দ এবং অন্যান্য ইতিবাচক গুণাবলীর খোঁজ করেন তবে তাই পাবেন; আর যদি তাদের মধ্যে বিসম্বাদ বা ঔদাসীন্য দেখতে চান তবে তাও পাবেন। মানুষের মধ্যে ভালোমন্দ দুই-ই আছে। তাই স্মরণ রাখা দরকার যে ইতিবাচক গুণগুলির খোঁজ করা বা প্রাধান্য দেওয়ার অর্থ এই নয় যে ক্রটিগুলিকে অগ্রাহ্য করা।
শিব খেরা-তুমিও জিতবে ১
Click This Link
শিব খেরা-তুমিও জিতবে ২
Click This Link
(চলবে)
টাইপকারক স্রোত