শিব খেরা সাহেবে ইন্সপিরেশনাল বুক!
তুমিও জিতবে-পার্ট-৪
সোনার খোঁজে (Looking for the gold)
অ্যান্ডু কার্নেগী নামে একজন স্কট বাল্যবয়সে আমেরিকায় আসে নানা ধরনের ধুচরো কাজ করতে শুরু করেন। তিনি জীবন শেষ করেন আমেরিকার একজন বৃহত্তম ইস্পাত প্রস্তুতকারী হিসেবে। একসময়ে ৪৩জন ক্রোড়পতি তার সংস্থায় কাজ করতেন। কয়েক দশক আগে এক কোটি ডলার বিপূল ঐশ্বর্ড হিসেবে বিবেচিত হোত, আজও তা কিছু সম ঐশ্বর্য নয়। জনৈক ব্যক্তি একদিন কার্নেগীকে জিজ্ঞেসা করলেন, তিনি কিভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করেন। অ্যান্ড্রু কার্নেগী জবাব দিলেন, “মানুষ নিয়ে কারবার করা যেন সোনার জন্য মাটি খোঁড়ার মত। এক আউন্স সোনার জন্য টনের পর টন মাটি কাটতে ও সরাতে হয়। কিন্তু সোনাই খোঁজা হয়, মাটি নয়।”
আসল কথা, আমাদের নজর কোনটার উপর। নজরটা সোনার উপর থাকুক মাটির উপর নয়। মানুষের মধ্যেও যদি দোষক্রটি খোঁজা হয়, তবে মাটির মতো, তা অনেক পাওয়া যাবে। প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কী খুঁজছেন? অ্যান্ড্রু কার্নেগীর জবাবের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। সব অবস্থাতেই প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কিচু ইতিবাচক দিক আছে। অনেক সময় হয়ত গভীর অনুসন্ধান করে ইতিবাচক গুণাবলীর সন্ধান করতে হয়; কারণ তা সহজে নজরে আসে না । তাছাড়া, আমরা অন্য মানুষের ক্রটি দেখতে এত অভ্যস্ত যে ভালো দিকট সাধারণত আমাদের নজরে আসে না । সব মানুষেরই কিছু ইতিবাচক দিক আছে- এই কথার দৃষ্টান্ত হিসাবে একজন বলেছিলেন যে একটা বন্ধ হয়ে যাওয়া ঘড়িও দিনে দু’বার সঠিক সময় দেখিয়ে থাকে। স্মরণ রাখা প্রয়োজন, যখন আপনি সোনার খো৭জে করেন তখন এক আউন্স সোনার জন্য আপনাকে টন টন মাটি সরাতে হয়;কিন্তু আপনি খোঁজেন সোনাই, মাটি নয়।
নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মানুস সব সময়েই সমালোচনা করবে
কিছু লোক আছেন যারা পক্ষ-বিপক্ষ বিচার না করে সব সময়েই সমালোচনা করেন। সমালোচনাই তাদের জীবিকা । সমালোচনা তাদের জীবন। তারা প্রায় বিজয়ীর লক্ষ্য ও একাগ্রতা নিয়ে সমালোচনা করেন। প্রতিটি মানুষের মধ্যে, প্রত্যেক অবস্থায় তারা কিছু ক্রটি খুঁজে বার করবেনই, এবং বিশ্বসুদ্ধ সবাইকে ক্রটির জন্য দোষারোপ করবেন। এই ধরনের মানুষকে বলা যায় ‘শক্তিশোষক’- তারা সমস্ত শক্তি শোষণ করে নেন। এরা কাফেটোরিয়াতে গিয়ে ক্লান্তি অপসারণের নামে বিশ কাপ চা-কফি গলাধঃকরন করেন, মনের সুখে ধূমপান করেন এবং অজস্র নিন্দামন্দ করেন। তারা শুধু নিজেদের মধ্যেই নয়, আশেপাশে যারা থাকেন সবার মধ্যেই একটা চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি করেন। প্রকৃতপক্ষে, ছোঁয়াচে রোগের ন্যায় তারা একটি নঞর্থক বাণী বহন করেন এবং এমন একটি পরিবেশের সৃষ্টি করেন যেখানে কেবল নেতিবাচক ফলই পাওয়া যায়।
রবার্ট ফুলটন বাষ্পীয় পোত আবিস্কার করেছিলেন। হাডসন নদীতে যখন তিনি তার নতুন আবিস্কার প্রদর্শনের আয়োজন করচিলেন তখন কিছু নিরাশাবাদী ও সংশয়ী ব্যক্তি জড়ো হয়ে বলাবলি করছিল যে জাহাজ কখনও চলবে না । দেখা গলে জাহাজ চলচে এবং সেটি নদী দিয়ে এগিয়ে গেল। তখন যারা জাহাজ চলবে না বলে মন্তব্য করেছিল তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, জাহাজ কখনও থামবে না । সবকিছুর নেতিবাচক দিক দেখার কী আশ্চর্য মানসিকতা!
কিছু লোক সব সময় নেতিবাক দিকটিই দেখে ঃ
এক শিকারীর শিকার-করা পাখী খুঁজে নিতে আসার জন্য একটি শিক্ষিত কুকুর ছিল। কুকুরটি জলের উপর দিয়ে হাঁটতে পারত। শিকারী যখন কুকুরটির এই অলৌকিক ক্ষমতার পরিচয় পেল তখন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না। বন্ধুদের নিকট কুকুরের এই আশ্চর্যজনক ক্ষমতা দেখবার অভিপ্রায়ে সে একদিন তার বন্ধুকে হাঁস শিকারের আমন্ত্রণ জানাল । কয়েকটি হাঁস মারা পর সে কুকুরটিকে নির্দেশ দিল হাঁসগুলি জল থেকে তুলে আনতে। কুকুরটি জলের উপর দিয়ে দৌড়ে মৃত হাঁসগুলি নিয়ে এল। সারাদিন ধরে বেশ কয়েকবারই কুকুরটিকে জলের উপর দিয়ে দৌড়াতে হোল। শিকারী তার কুকুরের এই আশ্চর্য ক্ষমতার জন্য বন্ধুর কাছে মন্তব্য আশা করেছিল; কিন্তু বন্ধু ছিল চুপচাপ। শিকারী বাড়ি ফেরার পথে বন্ধুকে জিজ্ঞেসা করল, “কুকুরটির কোনও অসাধারণত্ব লক্ষ্য করেছ কি?” বন্ধু জবাব দিল, ”হ্যাঁ, তোমার কুকুরটি সাতার জানে না।” কোনও কোনও ব্যক্তি সব সময়েই নঞর্থক দিকটিই দেখে।
শিব খেরা-তুমিও জিতবে ১
Click This Link
শিব খেরা-তুমিও জিতবে ২
Click This Link
শিব খেরা-তুমিও জিতবে ৩
Click This Link
(চলবে)
টাইপকারক স্রোত