somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চার স্বয়ং কল্প

১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.

আপনি আমাকে অদ্ভুতভাবে অবাক করেন। আপনাকে দেখলে মনে হয় সে আপনি না, আপনার ভাবনাগুলো আঁটোসাটো হয়ে আপনি হয়ে আছেন! এই যেমন আপনি একটা জঙ্গলের কথা বলেন, সে জঙ্গলের গাছগুলো কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায়। আমি কৌতূহলী হয়ে বললাম, তবে মানুষরা নিশ্চয় অক্সিজেন ছাড়ায়? আপনি বললেন, জঙ্গলে বসবাসকারী অন্যরা গাছগুলোকে মানুষ নামে চেনে।

২.

- do you love me?
- no i don't, kill yourself
ফোনে আমার সাথে শেষ এ কথাটুকু হয়েছিল তার। আমি ছিলাম প্রশ্নকর্তা। অথচ আজও আমি বেঁচে আছি সেই উত্তরটুকু নিয়ে। আমি প্রচন্ড পুড়ি তার এভাবে পাপ হয়ে হারিয়ে যাওয়া ভেবে। আইন আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো তার শেষ উত্তরের লাইন ধরে। তার পোস্টমর্টেমে নাকি ওরা খুঁজে পেয়েছিলো শুধু আমার প্রতি তার প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ভালোবাসা, ছুরি বেয়ে হৃদপিণ্ডের রক্তক্ষরণ তখনো তরতাজা ছিলো, সেই বেয়ে পড়া রক্তে আমি মিশে ছিলাম শুধু। ফরেনসিক রিপোর্টে উজ্জ্বলভাবে আমিই শুধু। ওর আষ্টেপৃষ্ঠে আর কোন রহস্য নেই আমি ছাড়া। এই ছোট্ট রুমের সব দেয়াল শেষ হয়ে গেছে লিখতে লিখতে। আইন আমাকে ছাড়ছে না, ফাঁসির আদেশও দিচ্ছে না, এই রুমটাও পাল্টে দিচ্ছে না।

৩.

ঘর থেকে বের হয়ে রশিদ মিয়া আকাশের দিকে তাকালো। সে ঘামছে খুব, হা করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর ছাড়ছে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। মাঝে মাঝে সূর্য মেঘ থেকে বেরিয়ে এসে জানান দিচ্ছে আমি আছি! রশিদ মিয়া বের হয়ে গেল। সেদিন বিকেলে এক বাড়িতে একদল মানুষ জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পুলিশের তাদের ঘিরে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আজ এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। তাদের সামনে সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটা লাশ রাখা। লাশের মা পাশে বসে কাঁদছে আর বলছে, ও তো মেয়ে ছিলো না, ওর কেন এমন সর্বনাশ হলো, ও আমার মানিকরে...
রশিদ মিয়া ভীড় ঠেলে দেখার চেষ্টা করছে তার দিকে কেউ তাকাচ্ছে কী না।

৪.
মিতু প্রতিদিন লুকানো চিঠিগুলো খুঁজে নিয়ে পড়ে। গত কিছুদিন ধরে চিঠিগুলো মিতু তার ঘরে পাচ্ছে। সায়ান অফিসে চলে গেলে মিতু ঘর উলটপালট করছে নতুন কোন চিঠি এসেছে কি না! নতুন চিঠি পেলেই মিতুর মন খুশিতে ভরে উঠে, সে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে। চিঠির লেখা, কথামালা মিতুকে বিমোহিত করে তুলে। সায়ানকে সে এখনো ব্যাপারটা বলে নি। যদি পরে আর চিঠি না আসে এই ভয়ে। মিতু চিঠিগুলো তার সিক্রেট ড্রয়ারে রেখে দেয়। এখন পর্যন্ত ড্রয়ারে বাইশটা চিঠি জমা হয়েছে। তার মাঝে মাঝে মনে হয় চিঠিগুলো সায়ান লেখে। সায়ান বাসায় আসলে সে সায়ানের গতি প্রকৃতি লক্ষ করে কিন্তু সায়ানের মধ্যে তেমন কোন লক্ষণ খুঁজে পায় না মিতু। এছাড়াও সায়ানের হাতের লেখা এমন নয়। মিতু সায়ানের অনেকগুলো খাতা ডাইরী ঘেটেছে কিন্তু কোনকালেই সায়ানের এমন হাতের লেখার অস্তিত্ব মিতু খুঁজে পায় নি।

কয়েক বছর পরের ঘটনা। মিতু তার ফেইসবুক ওয়ালে দেখতে পায় সায়ান কিছু ছবি শেয়ার করেছে সেগুলোয় তাদের মিউচুয়াল এক ফ্রেন্ড লাইক দিয়েছে। সে ছবিগুলো দেখতে ক্লিক করে। এক ছবিতে সায়ান আর তার স্ত্রী একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসছে, আরেক ছবিতে তারা কেক ছোড়াছুড়ি করছে। এরপরের ছবিটা দেখে মিতু বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়েই থাকে শুধু, যেন ছবিটা তাকে জাদু করে পেলেছে! এই ছবিতে একটা চিঠি। মিতু আজও পাগলের মত ঘর উলটপালট করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০১
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×