আসলে আপনার যতই টাকা থাকুক আপনি তা দিয়ে তেল কিনতে পারবেন না। আপনার ডলার থাকা লাগবে। ডলার হলো আমেরিকার টাকা। ঐটা ছাড়া তেল কেনা যায় না। সৌদি আরব সর্বপ্রথম আমেরিকাকে এই সতীত্ব উপহার দেয়। আমেরিকা তাকে নিজের মতো ভোগ করে। বিনিময়ে কেবল আল সৌদ পরিবারকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। এজন্য আমেরিকা সারা দুনিয়ায় গণতন্ত্রের গান গাইলেও সৌদিতে গায় না।
সাদ্দাম হোসেন ইউরোতে তেল বিক্রি করতে চাইছিলো। আর গাদ্দাফি স্বর্ণের বিনিময়ে তেল বেচতে চাইছিলো। দুজনের অবস্থান এখন মাটির নিচে। দেশদুটিও তাই।
অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন যে আমেরিকা কিভাবে সারা বিশ্ব শাসন করে। এরে ওরে কন্ট্রোল করে। এমনকি এই ছোট্ট বাংলাদেশে কি হবে তা নিয়েও তার অনেক কিছু বলার আছে। শুধু আমরা কেন। রাশিয়ার মতো দেশকে সে বিপদে ফেলে। সে যেভাবে বলবে সেভাবেই সবাইকে চলতে হবে। এর এতো শক্তি কোত্থেকে এসেছে!
মূলত আমেরিকান ডলারই এর মূলে। আমেরিকা কাগজকে টাকায় রুপান্তর করতে পারে। বলেনতো আমার যদি একটা টাকা ছাপানোর মেশিন থাকতো তাহলে আমি সব কিনে ফেলতে পারতাম না? বিশ্বব্যাপী যত বানিজ্য হয় তার শতকরা নব্বইভাগ হয় ডলারে। কেন ডলারে হয়?
ধরুন আমার কাছ থেকে আপনি কম্পিউটার একসেসোরিজ কিনবেন। আমি ডলার ছাড়া বেচবো না। সুতরাং আপনি বাধ্য ডলার নিয়ে আসতে। এরপর ধরুন আপনি হাসপাতালের জরুরি জিনিসপত্র কিনবেন। আমি ডলার ছাড়া বেচবো না। আপনি স্যাটেলাইট সুবিধা নেবেন। অস্ত্র কিনবেন। কিছুই আমি ডলার ছাড়া বেচবো না। তখন আপনি কি করবেন? আপনারতো এগুলো লাগবেই আবার নিজেও বানাতে পারছেন না। আমেরিকা এমনি এমনি এরকম রাজা হয়নাই। রাজা হওয়ার মতো অনেক কাজ করেছে আর কিছু করেছে বিটলামি।
তবে দুখজনক হলো তার এই ডলারের যে এতো শক্তি তার পেছনে আমাদের সোনার আল সৌদের ভূমিকা কম না। যখন ডলার বিপদে পড়েছিলো তখন একমাত্র ক্ষমতার লোভে আল সৌদ ডলারের পতন ঠেকিয়ে দেয়। এই কয়দিন আগেও সৌদি আরবের জিগরি দোস্ত ছিলো সারা দুনিয়ায় মুসলিম নিধন করা আমেরিকা। এখনো আছে তবে সংসার না ভাংগলেও আগের মতো সুখ নাই। সৌদি তাই এখন পরকিয়া করতে চায় চিন বা রাশিয়ার সাথে। তুরস্কেরও মোটামুটি এই অবস্থা। সেও কিন্তু আমেরিকার দোস্ত ছিলো। এখন চিন রাশিয়ার গা ঘেঁষে দাড়াতে চাচ্ছে। বড়লোকদের সাথে কে না দোস্তি করতে চায়।
আমার অবজারভেশনে পৃথিবীর সমস্ত অশান্তির মূলে তার লোভী শাসকেরা। এরাই নিজেদের ক্ষমতা আর শক্তির জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেয়। অন্যের উপর অন্যায় আচরণ না করলে এদের শান্তি হয় না। এরা আসলে মূলত শয়তানের অনুসারী। নতুবা কেন নিজেদের ভালো থাকার জন্য, নিজেদের ক্ষমতা আর লোভের জন্য এতো এতো মানুষকে হত্যা করবে, যুলুম করবে, কষ্ট দেবে। এটা নিশ্চিত শয়তানের এজেন্ডা। সাধারণ মানুষ এমন হতে পারে না।
আমি ভাবি যে মানুষের সার্জারী করে জেন্ডার পরিবর্তন করার ফায়দা কি? সেইম সেক্সের ফায়দাটা কি? এর কোন উত্তর নাই। এটা স্রেফ শয়তানের এজেন্ডা। ঠিক এমনই মানুষকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেওয়া শয়তানের এজেন্ডা। হয়তো শয়তান তাকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে নিজেও বুঝতে পারে না যে সে শয়তানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
পৃথিবীর মূল বিষয়ই আসলে এটা। দুইটা পক্ষ। দুইটা দল। আল্লাহর পক্ষ আর শয়তানের পক্ষ। যত কিছু সংঘাত আপনারা দেখেন তা এই দুই পক্ষের শত্রুতার কারনে। শয়তান চায় ক্ষমতা, অশান্তি, খুন, মিথ্যা, প্রতারণা, অশ্লীলতা, ভোগ। কিন্তু সবাইকে সে নিজের অনুসারী করতে পারে না বলে লেগে থাকে সংঘাত সংঘর্ষ। যেদিন সে সবাইকে নিজের অনুসারী করে ফেলবে সেদিন পৃথিবী ধ্বংস হবে।
শয়তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের চেনার একটা ভালো উপায় বলে দিই। যখন তাদের অপকর্ম সম্পর্কে অভিযোগ করা হয় তখন তারা উল্টো নিজেদেরই শান্তি আনয়নকারী বলে দাবী করে। যত অশান্তি তারা করে সব শান্তি আর প্রগতির নামেই করে। মহান আল্লাহ তাদের কথাই কুরআনে উল্লেখ করেছেন,
“আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না’, তারা বলে, ‘আমরা তো কেবল সংশোধনকারী’" [সুরা বাকারা]।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩