somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাযাত্রা

২০ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"ভাই একটু পা রাখার জায়গা হবে?" বাংলা'র বাস, ট্রেইন যাত্রীদের মধ্যে প্রচলিত হিউমার। কিছুদিন আগেও সবাই বলত, "ভাই একটা সিট পাওয়া যাবে?" এখন সেতা চিন্তা করাও দুরূহ এবং অসম্ভব। আখন শুধুমাত্র পা রাখার জায়গা পাওয়াটাই ভাজ্ঞের ব্যাপার। কিছুদিন পরে হয়তো সবাই বলবে, "ভাই, আপনার প্যান্টের বেল্টে তিন আঙ্গুল পরিমাণ জায়গা হবে? আপনার প্যান্টের বেল্টটা ধরতে পারলেই হবে। বাকি রাস্তাটা শূন্যপথে ঝুলতে ঝুলতে চলে যাব।"
ভাই সব, সাবধান হয়ে যান। বাসযাত্রা বা ট্রেইনযাত্রা যে কোন সময় মহাযাত্রা হয়ে যেতে পারে। যে কোন যাত্রায় বেরুবার আগে একটা উইল করার সদুপদেশ পেতেই পারেন। বাস এর মারাত্মক হাতল, তার পেটকাটা দরজা, তার চলা এবং থামার বিচিত্র রীতিনীতি দেখে সহজেই বোঝা যায়, মৃত্যুর উপর মানুশের হাত নেই আর এই সব বাস এর উপর ভগবানেরও হাত নেই। অসুবিধা নেই। এই সব বাসে না চড়লেই যে আমরা নাতি-নাতনি বেষ্টিত হয়ে সত্তর বছর পেরিয়ে বেঁচে থাকব, তার গ্যারান্টি কে দেবে? আর বাস যে হঠাৎ খোশ-মেজাজে ফুটপাতে চড়তে চাইবে না, ওন্য কোন বাসের সাথে বক্সিং করতে চাইবে না বা ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিতে চাইবে না সেই ভরসাই বা কে দিতে পারে?
শেক্সপিয়র এর ফলস্টাফ ভুলে গেছে কতদিন নিজের পা সে দেখতে পারে না। মাঝখানের ভুঁরিটিই অন্তরাল হয়ে দাঁরিয়েছে। আমাদের মধ্যে অর্ধেক জনগনও হয়তো জানেন না যে বাসের ভেতরটা ঠিক কেমন হয়। 'অন্ধের হস্তিদর্শন' এর মত বাসের হাতল, দরজা, জানালা, ফুটবোর্ড আর দুলন্ত ও ঘর্মাক্ত পিণ্ডাকার কতকগুলি মানুষই বাস-ট্রাম এর প্রকৃ্ত রূপ। আজ যদি কোন যাদুমন্ত্রের বলে তাঁদের জন্য বাংলায় সারি সারি ডি-ল্যুক্স বাস আসে, তাঁরা প্রত্যেকে একটা বসার জায়গা পান, গুতোগুতি, মারামারি, গালাগাল, পা মাড়ানো, অলৌকিক উপায়ে ঝুলে থাকা- এগুলো কিছুই যদি না ঘটে, তাঁরা কি তা সইতে পারবেন? হঠাৎ অভ্যাস বদলের ফলে আচমকা কেউ কেউ মারাও পাড়বেন কিনা, তাই বা কে বলতে পারে?
কিন্তু সে রকম কোন মাজিক ঘটবেও না। আমাদের দেশে এমনিতে যে ট্রাফিক জ্যাম তাতে নতুন বাস আনা মাজিসিয়ানের পক্ষেও সম্ভব হবে না। সুতরাং যারা বাস বা ট্যাক্সি করে অফিসে যেতে পারছেন না তাদের নিজের পদযুগলের ওপর নির্ভর করাই ভাল- বেশ এক্সারসাইজ হবে, ক্ষুদা বারবে। রাতে যাদের সহজে ঘুম হতে চায় না অর্থাৎ অনিদ্রা হয় তাদের সুনিদ্রা হবে, মন্দ কি? যাদের অফিস বাড়ি থেকে একটু দুরে তাদের জন্য তো আরো ভাল। ভবিষ্যতে ভ্রমণ প্রতি্যোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হবার সম্ভাবনা আছে।
কিন্তউ আশঙ্কা হচ্ছে, ভ্রমণ চর্চায় হয়তো সকলেই উৎসাহ বোধ করবেন না। চোখের সামনে চলন্ত গাড়ি দেখলেই চাপতে ইচ্ছে করবে। ঘোড়া দেখলেই খোঁড়া হওয়া এদেশের মানুষের সভাব। কিন্তু সবসময় এইসব বাসে সিট ট দূরের কথা পা রাখার জায়গা পর্যন্ত থাকে না। এখন উপায়? অসুবিধা নেই। নতুন জায়গা আবিষ্কার করা হবে। বাসের নিচতলায় জায়গা নাহলে দোতলায় (এই দোতলা কোন দোতলা বাসের দোতলা না) উঠব। এই দোতলায় ওঠার জন্য অবশ্য সিঁড়ির ব্যাবস্থা থাকবে না। চড়া রোদে বা প্রবল বৃষ্টিতে এই খোলা দোতলা হয়তো খুব আরামও দেবে না। নিচু ওভার-ব্রীজের সংঘর্ষে অফিসে না গিয়ে ভবপারেও যাত্রা করতে পারেন। কিন্তু অফিসে তো যেতেই হবে। তাই পাটিগণিতের সেই তৈলাক্ত বাঁশের বানরের মত পিছলে পিছলে ছাদে ওঠা যেতেই পারে। তাতে আরো সুবিধা আছে, চমৎকার শারীরিক কসরত হয়। এরকম কয়েকদিন প্র্যাকটিস করতে করতে একদিন দেখবেন চোখের পলকেই আপনি কাঠবেড়ালীর মত বাসের ছাদে চড়তে পারবেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×