ছোটবেলায় হলিউড নির্মিত একটি ডেইলি সোপ দেখতাম, নাম রুটস্। তৎকালীন আমেরিকার দাসপ্রথা, ক্রয়কৃত দাসদের প্রতি মনিবদের নির্মম অত্যাচার এই ছিল ধারাবাহিকটির মূল কাহিনী। তখন থেকেই অনেক প্রশ্ন জাগতো মনে, দাস মানে কি? তারা কি আমাদের বাংলাদেশে নিয়োজিত গৃহকর্মীদের মতো? তাদেরকে ক্রয় করে নিয়ে আসা হতো কেন? আর কিনেই যদি আনা হতো তাহলে এতো অত্যাচার করা হতো কেন? এরকম ব্যবস্থা কি শুধু আমেরিকাতেই ছিল? আরও নানা প্রশ্ন। কিন্তু না দাসপ্রথার শুরু মূলত রোমান সভ্যতা থেকে। আজ আমরা রোমান সভ্যতায় দাসপ্রথার ইতিবৃত্ত জানব।
খ্রিস্টীয় ২য় শতকের রোম শহরে কর্মবিমূখ অলস ধনীদের প্রাচুর্য আর অপচয় চোখে পড়ত। এদের কারও কার অধীনে ছিল দেড়শতাধিক দাস। গ্রামেও এদের বিষয়সম্পত্তি ছিল। দাসরা সেখানেও খেটে মরত। একটি রোমান কৃষিখামারে সাধারনত তিন ধরনের যন্ত্রপাতি থাকত। ১. মূকযন্ত্র; লাঙল, কাস্তে, কোদাল; ২.অর্ধ-মূকযন্ত্র; ষাঁড়, গাধা ইত্যাদি। এবং ৩. কথা বলতে পারে এমন যন্ত্র; দাস।
শহরের দাসরা অপেক্ষাকৃত ভাগ্যবান। তারা প্রভুর বিলাসব্যসনের দেখভাল করত। গ্রামীন দাসদের জীবন ছিল কঠোর। তারা জমি চাষ করত। শহরের দাসদাসীর কাজের অবহেলা হলে গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হত।
দাসের মৃত্যু হলে নতুন দাস কেনা হত। রোম শহরে বসত দাসবাজার। সেপটা জুলিয়া, ফোরা এবং ভিটা লাটার পোর্টিকো ছিল বিখ্যাত দাসবাজার। এখানে সাদা বোর্ডের ওপর লাল চক দিয়ে ‘দ্বিপদী প্রাণীর’ বৈশিষ্ট্য বিস্তারিত লেখা থাকত, লেখা থাকত কখন নিলাম ডাকা হবে ইত্যাদি ।
গরু-ভেড়ার হাটের মতন দ্বিপদী প্রাণী কেনাবেচা হত দাসবাজারে। দাসবাজারে ভিড়, দাসের গায়ের ঘাম, ক্রেতাদের কনুয়ের গুঁতোগুঁতি লেগেই থাকত। ভিড়ে নানা দেশের লোক দেখা যেত: মিশরীয় তুর্কি আরব সিসিলিও থ্রাসিয় কাপ্পাডোসিয়ানস গ্রিক কেল্ট গল (ফরাসি) ব্রিট (ইংল্যান্ড) ও রাইন নদীর ওপাশের শ্বেতচুলো লোক দাসবাজারের ভিড়ে গিজগিজ করত। ভিড়ে নারীপুরুষ থাকত। তবে কিশোর- কিশোরীর আগমন দাসবাজারে ছিল নিষিদ্ধ । ফিলিস্তিনে তখন ইহুদিরা বিদ্রোহ করত। সম্রাট হাদ্রিয়ান সমর অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। ইহুদিদের ধরে এনে দাসবাজারে বিক্রি করা হত।
দাসেরা লাইন করে দাঁড়াত পাথরের ওপর । নগ্নপ্রায়, পায়ে সাদা চক-এর মানে-এখুনি বিক্রি হবে। ক্রেতারা মাংসপেশি টিপেটুপে দেখত। হয়তো দাসেরা বালক। হয়তো এদের কারও বাড়ি ছিল কৃষ্ণসাগরের তীরে। হয়তো ওদের বর্বর অভিবাবকগন বিক্রি করে দিয়েছে। তেমনটাই হত সেই খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতকের রোমান সাম্রাজ্যে ...
রোমকেন্দ্রিক রোমান সভ্যতায় দাস নির্যাতনের তথ্যপ্রমাণ ঐতিহাসিকের কাছে আছে। তবে দাস নির্যাতন কতটা ব্যাপক ছিল সে সম্বন্ধে কিছু বলা যায় না। অসুস্থ বৃদ্ধ দাসদের ক্যাটো দি এলডার -রোমান রাজনীতিবিদ-বাড়ি থেকে বার করে দিতেন। ক্যাটো দি এলডার-এর কয়েকটি স্মরণীয় বাণী পাঠ করা যাক। ক্যাটো দি এলডার-এর কথা যত ভালো হোক; মনে রাখতে হবে ইনি অসুস্থ বৃদ্ধ দাসদের বাড়ি থেকে বার করে দিতেন।
সম্রাট হাদ্রিয়ান ছিলেন সবচাইতে মানবিক, রোমান সম্রাটদের মধ্যে। তো তিনি একবার লোহার সরু পাত দিয়ে এক দাসের চোখ ...
আর মহিলারা? নির্যাতনের জন্য রোমান রমনীগণ শার্প আয়রন ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করত যৎসামান্য ভুলের জন্য ...এমনই যখন অবস্থা তখন রোমের শক্র, পরাজিত সৈন্যরা আত্মহত্যা করত রোমানদের দাস হওয়ার চেয়ে। দাসদের নেতা স্পার্তাকাস (খ্রিস্টপূর্ব ১০৯/৭১) এর নেতৃত্বে দাসবিদ্রোহ রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসে এক অবিস্মরনীয় ঘটনা।
অতিরিক্ত দাস থেকে বিদ্রোহের আশঙ্কা বিরাজ করত রোমে। কঠোর আইন প্রনয়ণ করা হয়েছিল। যদি কোনও দাস প্রভুকে হত্যা করে তো সে বাড়ির সব দাসকে হত্যা করা হত। একে বলা হত ল অব কালেকটিভ রেসপনসিবিলিটি। অশোভন আচরণ করলে পিটানো হত, লোহা গরম করে পোড়ানো হত, কখনও হত্যা করা হত। রোম নগরের বাড়ির বাইরে লেখা থাকত: “অনুমতি ছাড়া বাইরে যাওয়া যাবে না। শাস্তি বেত্রাঘাত।” অনেক দাসই পালিয়ে যেত। ফেরারী দাস এর আশ্রয় দেওয়া ছিল বেআইনি। সে সময় রোমান সমাজে পেশাদার দাস পাকড়াওকারী ছিল। তারা পলাতক দাসদের ধরে আনত। তাছাড়া বিজ্ঞাপন বিলি করা হত। ফেরারি দাসদের ধরে দিতে পারলে মোটা অঙ্কের পুরস্কার জুটত।
ধরা পড়লে ভয়ানক নির্যাতন চলত দাসদের ওপর। কপালে গনগনে লোহা পুড়িয়ে ‘ফ’ অক্ষর লেখা হত। ফ অর্থ্যাৎ ফেরারি। কখনও গলায় ধাতুর কলার আটকানো থাকত। তাতে লেখা থাকত: “আমি পালিয়ে এসেছি। আমাকে ধর। আমাকে আমার প্রভুর কাছে নিয়ে গেলে পুরস্কার পাবে।”
রোমান দার্শনিক সেনেকা মনে করতেন দাসদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে দাসেরা ভালোভাবে কাজ করবে আর মন্দ ব্যবহার করলে মন্দ কাজ করবে। আর যেন প্রভুরা ভোজসভায় দাসদের না ডাকে। কেন? দাসদের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয় বলে!
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।