somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যারা অস্ট্রেলিয়াতে মাইগ্রেশন নিয়ে আসছেন তাদের জন্য কিছু টিপস

০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে প্রথমবারের মতো প্রবাসে এসে অনেকেই নানা সমস্যায় পরেন, এ পোস্ট তাদের জন্যই। অন্যান্য প্রবাসীরাও এতে তাদের কথা যুক্ত করতে পারেন, তাদের স্বাগত জানাই।

এ পোস্ট নিজস্ব অভিগ্যতা ও পর্যবেক্ষনের সাথে সাথে কিছু বাস্তবতা তুলে ধরছি। আশা করি যারা নতুন আসছেন তাদের কাজে লাগবে। পোস্টটি যারা মাইগ্রেশন নিয়ে আসছেন শুধুই তাদের জন্য, পড়াশোনা বা বেড়াতে যারা আসছেন তাদের জন্য নয়।

এ পোস্টটি অস্ট্রেলিয়াতে যারা আসছেন তাদের জন্যই লিখছি।

১.
যারা জীবনে প্রথমবারের মতো আসছেন তারা প্রথমেই যে সমস্যার সম্মুখিন হোন তা হচ্ছে " কালচারাল শক "। এটা সবারই হয়ে থাকে তবে প্রথমবারের মতো যারা দেশের বাহিরে দীর্ঘসময়ের জন্য থাকতে এসেছেন তাদের বেশী হয়। দেশে যা দেখে এসেছেন তার অনেককিছুই এখানে অনুপস্থিত দেখতে পেয়ে তারা শক্ড হয়ে যান, যদিও এ শক সাময়িক এবং কমাস বাদেই কেটে যায়। আস্তে আস্তে তারা স্রোতে গা ভাসিয়ে দিতে পারেন। একেক দেশের একেক রকম সংস্কৃতি, আশার কথা এটায় অভ্যস্ত হতে মানুষ খুব সহজেই পারে।

২.
যারা স্থায়ী অভিবাসী হিসেবে আসেন তারা দেশে কম-বেশী একটি ভালো ও নিশ্চিৎ অবস্থা থেকে এখানে আসেন। এখানে এসে তাদের মুলত শুন্য থেকেই শুরু করতে হয়। এই স্ক্র্যাচ স্ট্রার্টিং অনেকের কাছেই অভিশাপের মতো মনে হয়। মনে রাখতে হয়, যারা মাইগ্রেন্ট তাদের সবারই এটা হয়েছে, নিজেকে একা ভাবার কোনো কারন নেই। অস্ট্রেলিয়ায় চাকুরিদাতাদের একটি প্রবনতা হলো অস্ট্রেলিয়াতে কাজের অভিগ্যতা ও অস্ট্রেলিয়ান ডিগ্রী যা দেশ থেকে আসা কারো থাকে না; এ কারনে নিজের ফিল্ডে চাকুরি খুঁজতে গিয়ে তারা প্রচন্ড সমস্যা ভোগ করেন। তবে চেস্টা চালাতে থাকলে এটা উৎরানো সম্ভব ও অনেকেই এটা করতে পেরেছেন, দরকার 'হাল না ছেড়ে চেস্টা চালিয়ে যাওয়া'; এটাই মুল সুত্র। যোগ্যতা থাকলে নিজের ডোমেইনে চাকুরি পাওয়া যায়।

৩.
প্রথম অবস্থায় এসে নিজের ফিল্ডে চাকুরি না পেয়ে অনেককেই মনোকস্টে ভুগেন। হয়তো দেশে সফট ওয়্যার ইন্জিনিয়ার ছিলেন বা সরকারী আমলা ছিলেন অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু এখানে এসে প্রথম অবস্থায় চাকুরি না পেয়ে তাদের হয়তো রেস্টুরেন্টের রান্না ঘরে কাজ করতে হয়, হয়তো ট্যাক্সি চালাতে হয়, হয়তোবা সুপার মার্কেটে কাজ করতে হয়। দেশে এ ধরনের কাজকে ছোট করে দেখতে দেখতে মন মানসীকতা এরকমই হয়ে যায় যে তারা এখানে এসে এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে হিনমন্যতায় ভুগেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে সব ধরনের কাজকেই সম্মান করা হয়, মানুষ হিসেবে সম্মান করা হয়, এখানে অন্য কিছু বিচার্য না। এজন্যও গার্বেজ কালেক্টরও এম.পি হতে পারেন, এজন্যই মন্ত্রি বা বিশাল আমলার সন্তান প্লাম্বারের কাজ করে নিজের কাজ লুকায় না, গর্ব করে বলে। দেশ থেকে যারা আসছেন তারা তাদের মধ্যযুগীয় ইগোকে দেশের মাটিতে রেখে আসবেন।

৪.
বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের দেশ থেকে যারা মাইগ্রেশন নিয়ে আসছেন তাদের বেশীরভাগেরই ইংরেজী বলতে ও বুঝতে খুব সমস্যা হয়। আই.ই.এল.টি.এস এ ভালো স্কোর পাওয়া আর তার বাস্তব প্রয়োগ ভিন্ন জিনিস। ইংরেজীর সমস্যার কারনে তারা ভালো চাকুরি পান না। যারা এ সমস্যা কাটাতে পারেন তারা ছাড়া অন্যদের অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এটার বিকল্প নেই।

৫.
আরেকটি সমস্যা যা দেশ হতে আসা স্থায়ী অভিবাসীরা মুখোমুখি হোন তা হচ্ছে " সিস্টেম" । একেক দেশ একেকভাবে চলে, একেক ভাবে ভাবে। বাংলাদেশে যে সিস্টেমে তারা চলে এসেছেন সেটা এ দেশে আশা করা বোকামী। নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে, এখানকার সিস্টেমের সাথে খাপ খাওয়াতে হবে। চাপা মারা, সময়ের মুল্য না দেয়া, ধান্দাবাজী, দূর্নীতি করার প্রবনতা, ইত্যাদি ইত্যাদি এখানে করলে চলেবে না। এখানের মতো চলবে হবে। তবে নিজস্ব স্বকীয়তা বিসর্জন দিতে বলছি না।

৬.
যারা এখানে আসছেন বা নতুন এসেছেন তারা অনেক সময়ই রঙিন চশমা পরে রঙিন স্বপ্ন দেখতে থাকেন। তাদের বাস্তববাদী হতে হবে। দেশে থেকে এখানকার অনেক রঙিন গল্প, অনেক মিথ্যে গল্প তারা শুনতে শুনতে তারা যে স্বপ্নের জগৎ গড়ে তুলেন তা এখানে মিথ্যে হয়ে যায় আসার পর। তবে স্বপ্নকে স্বার্থক করা সম্ভব, অনেক অনেক মানুষ করেছেন, আপনিও পারবেন। বাস্তববাদী হতে হবে, কঠিন পরিশ্রম করতে হবে সফল হতে।

৭.
মানুষ তার স্বপ্নের সীমা ছুতে পারে, আপনিও পারবেন। শুধু দরকার " লাইনে থাকা, লাইনচ্যুত হওয়া যাবে না।" ধীরে ধীরে সব কিছুই আপনি নিজেই শিখে নেবেন, বুঝে নিবেন। আশাহত হওয়া যাবে না। সফল আপনি হবেনই।
------
শুভকামনা।

অন্যরাও যোগ করে পারেন নিজেদের টিপস গুলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
১৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×