কখনো কখনো নিজেকে অনেক একা লাগে,খুব কান্না পায়-আর তখন আমি আমার পরীটাকে ডাকি।সে খুব ভাব নেয়,যেন আমার কথা শুনতেই পাচ্ছে না-আমি আবার ডাকি-'আ্যই,শুনতে পাস না নাকি?'সে হেলায় ফেলায় অবশেষে কাছে আসে।বিরক্ত হবার ভান করে-'কি হয়েছে?এত ডাকাডাকি করছিস কেন?'
:আমার খুব মন খারাপ লাগছে রে...'
:'তো আমার কিছু করার আছে?এখন কি তোর মন ভালো করার জন্য সার্কাস দেখানো লাগবে?'দ্বিগুণ বিরক্তি নিয়ে সে বলে।
:'তুই পাশে বসে থাকলে হয়তো মন খারাপ আর লাগবে না-'আমি বলি।
সে চলে যায়-'আমার এত ঢং করার সময় নেই।আমি পড়তে গেলাম...'
আমি বসে থাকি।অন্ধকার বারান্দা।৮তলা থেকে অনেক দূর দূরান্ত পর্যন্ত দেখা যায়-বিশাল সব বিল্ডিং,একটা আরেকটার মাথা ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।এখন রাতের বেলা বলে সেসবের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।শুধু লাল-নীল আলো টিমটিমে বিন্দুর মতো বিশাল দিগন্ত জুড়ে।
সে আসে না।একসময় আমার চোখের পানি শুকিয়ে যায়।খুব অভিমান হয় আমার,ইস্,পাজীটা আমার একটুও খবর নিচ্ছে না!ভাবি,ঐটা পরী না,সাক্ষাৎ বদমাইশ।
হঠাৎ টের পাই,সে আসছে।আমি হাঁটুর ফাঁকে মাথা গুঁজে আছি।ভান করি,সে যে এসেছে আমি বুঝতেই পারিনি।
সে এসে বলে,'রাজকুমারী কি গোসাঘরে বসে আছেন?'বলে নিজেই হেসে দেয়।আমি হাসতে চাইনা,তবুও হাসি পেয়ে যায়।সে বলে,গাধী,তোকে অতি কুৎসিত দেখাচ্ছে।তোর ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে আছে।যা গিয়ে ঠোঁটে ভ্যাসলিন লাগা এখনি।তাই বলে সে আবার হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।
আমি তবুও বসে থাকি।সে আমাকে হাত ধরে টেনে ওঠানোর চেষ্টা করে...শেষে না পেরে বিশাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,নাহ্,তুই বেশ মোটু হয়েছিস আজকাল!
আমার তখন হঠাৎ সবকিছু ভালো লাগতে শুরু করে।গান গাই,'ভালোবাসি বড় ভালোবাসি..'এই পর্যায়ে সে আমাকে ২টা থাপ্পড় দিয়ে বলে,'আরেকবার যদি এই গান গাইতে শুনি!আমি তোকে বলিনাই আমার বিরক্ত লাগে?'আমি দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে গাই,'ও আমার প্রাণ পাখি ময়না'...!গান শেষেই দন্তবিকশিত হাসি দিয়ে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করি,কিন্তু ততক্ষণে....
রাতে ঘুমানোর সময় আমি তার গায়ের উপর হাত-পা সবই তুলে দেই,ইচ্ছা করেই।সে রাগী রাগী গলায় বলে,'আহ্লাদী করবি না একদম কিন্তু।হাত-পা সরা বলছি।'আমি তবুও সরে যাই না।সে ভীষণ রেগে যাওয়ার ভান করে।আমি আবার দাঁত বের করে হাসি,কারণ আমি জানি,এই রাগটার মানে কি...!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





