somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র চাই!

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র চাই
হাসান কামরুল
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির রয়েছে ঐতিহাসিক সম্পর্ক। ১৯৯০ সালের পর থেকে যে গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছে তার পুরো সময়টুকুই প্রায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দখলে ছিল বা আছে। কিন্তু গণতন্ত্রের ভিত যতটা শক্ত হওয়ার কথা তা না হয়ে বরং দিন দিন তা দুর্বল হচ্ছে। গণতন্ত্রের যদি মৃত্যু হয় তবে এর জন্যও বৃহৎ দলদুটিকে দায়িত্ব নিতে হবে। যারা বেশি ডেমেক্রেটিক হওয়ার কথা তারাই সবচেয়ে বেশি স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠছে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়া যায়নি। অতি মাত্রায় ক্ষমতার মোহ ও দাম্ভিকতাই এর জন্য দায়ী। কিন্তু উদিয়মান এ দেশটি যখন অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশে পরিণত হচ্ছে তখনই দেশি বিদেশি কুশিলবরা নানান ভাবেই সক্রিয়। গণতন্ত্রের বিনাশ করে অকার্যকর একটা রাষ্ট্রব্যবস্হার প্রবর্তন চাচ্ছে তারা। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধি শক্তির যে তান্ডব দেশবাসি দেখছে তাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। বিএনপির মতো বিরাট একটা গণতান্ত্রিক দল কেন দলপ্রেমের উর্ধ্বে উঠে দেশপ্রেমের নজির স্হাপন করতে পারেনি। সেটাও একটা কঠিনতম সত্য। একদিকে বিএনপি জামাত শিবির পুর্ণবাসন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে অন্যদিকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্হার কবর রচনা করছে। কঠ্রোর পহ্নিদের ভীড়ে ক্রমশই উদারপহ্নিরা নিসক্রিয় পড়ে পড়ছে দলটিতে ।
শক্তিশালী বিরোধিদল ছাড়া সঠিক গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভবনা। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য গত বিশ বছরের গণতন্ত্রের সংসদিয় রীতিতে বিরোধিদল খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেনি। মাসের পর মাস সংসদ অধিবেশনে অনুপস্হিত থেকে রেকর্ড সৃষ্ঠিকারি বিরোধিদল সংসদে যোগ দিয়েছে সদস্যপদ ধরে রাখতে ও রাষ্ট্রিয় সুযোগ সুবিধা উপভোগের জন্য। কিন্তু সঠিক দায়িত্বটি কোন বিরোধিদলই পালন করেনি। আমাদের দেশের প্রধান দুটি দলই ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে ভালোবাসে। তাই তাদের নীতিতে এখন দেশপ্রেমের উর্ধে দলপ্রেম জায়গা করে নিয়েছে। কথায় কথায় রাজনৈতিক দলগুলোর দেশকে পঙ্গু করার যে দম্ভোক্তি তা গণতান্ত্রিক মনা মানুষগুলোকে কষ্ট দেয়। যদিও তারা তাদের দলের ব্যানারে শ্লোগান তুলে ” ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়” কিন্তু বাস্তবে তাদের কাছে সবকিছুর উর্ধে ক্ষমতা। ক্ষমতার জন্য তারা অবলীলায় স্বৈরাচ্চার ও রাজাকারদের নিয়ে জোট বাধতে পারে তা দলের মূলনীতির সহিত যতই সাংঘার্ষিক হোক না কেন।।
এমন একটা ব্যবস্হা প্রচলন করা দরকার যাতে বিরোধি দল ও সরকারি দল একত্রে দেশ চালাতে পারে। হতে পারে বিরোধিদলীয় নেতার জন্য সম্মান সূচক উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করা। কম গুরুত্বপুর্ণ ও মধ্যম কিসিমের কিছু মন্ত্রণালয়কে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দেখভালের জন্য ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বিরোধি দলীয় নেতা অনেক বেশি দায়িত্ববান হওয়ার সুযোগ পাবে। এমনকি উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুপ¯িহতিতে সরকারের রুটিন কাজগুলো চালিয়ে নিতে পারবে। উপ-প্রধানমন্ত্রীর কাজে প্রধানমন্ত্রী সৌজন্যতাবোধে হলেও সরাসরি হস্তক্ষেপ করবেনা। এবং সরকারি নিয়মানুযায়ী আন্তজার্তিক সামিটগুলোতে কোন কোনটিতে উপ-প্রধানমন্ত্রীকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়া যেতে পারে।
বিরোধিদলকে আসন সংখ্যার ভিত্তিতে মন্ত্রিত্ব দেয়া যেতে পারে। অর্থাৎ যদি বিরোধিদলের ৫০জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় তাহলে আনুপাতিক হিসেবে তাদেরকে ৫টি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। এতে করে গণতন্ত্রের ভিত অনেক বেশি মজবুত হবে বলে বিশ্বাস। বিরোধিদলের মন্ত্রনালয়গুলোতে সরকার সঠিক বরাদ্দ প্রদাণ করবে এবং এ মন্ত্রণাগুলোর স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান হবে সরকারি দলের সাংসদরা ও সরকারি দলের মন্ত্রণাগুলোর স্টিয়ারিং কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করবে বিরোধিদলীয় সাংসদরা। এভাবে মিলেমিশে দেশ পরিচালনার সংসদীয় রীতি যদি চালু করা যায় তাহলে প্রতি পাচ বছর অন্তর অন্তর সৃষ্ট জঞ্জাল থেকে দেশবাসি মুক্তি পাবে। এবং দুই দলই যখন একত্রে কাজ করার সুযোগ পাবে অর্থাৎ ক্ষমতার খুব কাছাকাছি থাকবে তখন একচ্ছত্র আধিপত্যের অবসান ঘটবে। একটা সুন্দর ও শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত সৃষ্টি করা সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস।
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের জন্য কাজ করেন। তিনিও সরকারিভাবে সম্মানি পেয়ে থাকেন। আজ পর্যন্ত কোন প্রধানমন্ত্রীকে গত ২০ বছরে শুনিনি বছর শেষে ছুটিতে যেতে। যেখানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বছরান্তে ছুটি উদযাপন করেন সেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কোন ছুটি নেই বা উনারা ছুটি নেননা । কিন্তু কেন? সরকারি রুলস অব বিজনেসে বলা আছে বাৎসরিক দুই সপ্তাহ ছুটি উপভোগ করার কথা । তাহলে প্রধানমন্ত্রী কেন ছুটি নেননা? প্রধানমন্ত্রী বছর শেষে দেশের ভিতরে বা বাইরে ভালো যেকোন রিক্রেশন প্লেসে দুই সপ্তাহ ছুটি কাটাতে পারেন। এতে করে উনি যেমন প্রাণোচ্ছল হবেন এবং সেই সঙ্গে উপ-প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের রুটিন কাজ চালিয়ে যাবেন। এভাবে যদি দুইটি প্রধান দলের মধ্যে বুঝাপড়ার ব্যবস্হা করা যায় তাহলে এদেশের গণতন্ত্র আর মার খাবেনা।
প্রধান দুটি দলকেই সংসদ অধিবেশনে শতভাগ উপস্হিতি নিশ্চিত করতে হবে। শুধুমাত্র সদস্যপদ বাচানোর জন্য সংসদে না গিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র কায়েম করার জন্য যা যা করার দরকার তা করতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্র পরিপক্কতা পাবে। নির্বাচন নিয়ে বর্হি বিশ্বকে তামাশা দেখতে হবেনা। টুইজডে ক্লাব, আমেরিকান ক্লাব, কোথাও যেতে হবেনা। দেশের সমাধান দেশে করতে না পারলে বাইরে হবেনা। তাই অনেক জল ঘোলা হয়েছে আর না, অতি দ্রুত কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্হা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কি কি ব্যবস্হা গ্রহণ করা যায় তা রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রে বসে ঠিক করতে হবে। এবং সরকারি দলের হাতে শতভাগ ক্ষমতা না রেখে বিরোধিদলকেও ক্ষমতার ভিতরে আনতে হবে। যাতে তারা মনে করে তারাও সরকারের সক্রিয় অংশ। সরকারি দলের স্পিকার থাকলে বিরোধিদলের ডিপুটি স্পিকার থাকবে। আর এভাবেই একটি সুন্দর স¦চ্ছ রাজনীতির সূচনা সম্ভব এবং অর্থনৈতিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×