প্রথম গল্পঃ ক্ষুধা
আমাদের উঠোন কোণে একটা মাটির ঢিবি। পাশেই খোলা ছাতার মত মেলানো আম গাছ। ইদানিং রাত গাঢ় হলে ঢিবিকে আড়াল রেখে আম গাছতলায় পিদিম জ্বলে। কাছে গিয়ে দেখি, পুরনো ছেঁড়া জামা গায়ে আলগোছে এক ছেলে। ছেলেটা আঙুল ছড়িয়ে ভাত খাচ্ছে। পাতে ছোট মাছের চচ্চড়ি আর মসুরের ডাল। আর আম্মা মমতার চোখে তাকিয়ে আছেন। ছেলেটা পাড়াতে নতুন এসেছে। পাগল গোছের ছেলে। আম্মা বলছেন, চুপিচুপি আসবি। সন্ধ্যায় আসবি না। মিলুর বাবা এইসব পছন্দ করেন না। উনি খুব মেজাজী মানুষ। পরে কী হতে না কী হয়ে যায়! ছেলেটা ঘাড় নেড়ে সায় দেয়।
কয়েকদিন পর একরাতে খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাত্রে হৈ-চৈ শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। বাড়িতে নাকি চোর পড়েছে। চুপসে ভিজে যাওয়া চোরটাকে ধরে আনল। নাকে মুখে আঘাতের চিহ্ন। আম্মার মুখে উৎকন্ঠার ছাপ, আব্বার কোপদৃষ্টি। ছেলেটা মৃদু সুরে আম্মার দিকে তাকিয়ে বলল, ভাত খাব!
০৯১১১৪
দ্বিতীয় গল্পঃ খাদক
‘‘সূর্যতোরণ পাঠাগার’’-এর সামনে প্রতিদিন বিকেলে কয়েকটা সাইকেল এসে ভিড়ত। আমিও বাবার সাইকেলের পিছনে চড়ে যেতাম ওখানে। দীপ, সুপ্তি, কমলসহ আরো অনেকে আসতো। পাঠাগার যেন বইয়ের দুনিয়া। ঐ পাঠাগারে বসেই প্রথম ভেবেছি আমি হব এক প্রজাপতি। সব বাবারা বই পড়ত আর সন্ধ্যা অবধি চলত আড্ডাবাজি।
বেশ কয়েক বছর পর এক বিকেলে বাবাকে মোটরযানে চড়িয়ে নিয়ে গেলাম সেই “সূর্যতোরণ পাঠাগার”-এ। পাঠাগারটা এখন মলিন, জীর্ণশীর্ণ আর ধুলোয় আচ্ছাদিত। এরপর বাবাকে নিয়ে গেলাম মাস্টার পাড়ায়। ওখানে প্রায় বাসার সামনে সাইকেলের সারি। একটা বাসার সামনের সাইনবোর্ড দেখে বাবা বললেন, তোদের সময়ের সোনালি বিকেলটা এখন খেয়ে ফেলছে “সূর্যতরুণ কোচিং সেন্টার”।
১২১১১৪