সকল ব্লগারকে জানাই ঈদুল আজহার ঈদ মোবারক ২০২৩।
আজ (২৯শে জুন) ঈদের সকালের ঘটনা নিয়ে আজকের লেখা
রাত থেকেই ঝুম বৃষ্টি, সকাল ৬.৩০ মি: এ নামাজে যাবার কথা কিন্ত কিভাবে যাব!
৭.০০ টায় নামাজ যখন ৬.৪০ মি: আর অপেক্ষা না করে বেরিয়ে পড়লাম।
তখনও ভাবিনি কি দুর্ভোগ সামনে আছে । রাস্তায় এসে দেখি গাড়ী চলছে না , লোকজন অত্যন্ত ধীর গতিতে হাঁটছে ।
মসজিদ এখান থেকে ২ ব্লক দুরে তারপরও মনে হচ্ছিল নামাজ বোধহয় পাবোনা ।
রাস্তায় প্রচুর বৃষ্টির পানি হাঁটুর নীচ পর্ষন্ত ডুবে যাচ্ছে ।পানিতে প্রচুর ময়লা , পলিথিন আর খড়কুটা ।
এমন ময়লা পানি দিয়ে হাঁটছি আর ভাবছি, বাসা থেকে গোসল অজু করে ফ্রেশ হয়ে নামাজে যাচ্ছি কিন্ত
এমন ময়লা পানি দিয়ে গিয়ে নামাজের প্রস্তুতির শুদ্ধতা থাকবে কি ???
মসজিদের কাছে এসে আরও হতাশ, মসজিদের সামনে প্রচন্ড জট আর পানির গভীরতা বেশি ।
অনেক কষ্টে প্রবেশ করে অবাক, এখানে ও প্রায় ৫/৬ ইন্চি পানি । বাহিরের অজুখানা ডুবে আছে , এখন কি করব ?
কিছু লোক দেখলাম সরাসরি মসজিদে প্রবেশ করছে, এভাবেই কি তারা নামাজ পড়বে ? খুঁজে পেলাম মসজিদের মাঝেও
একটি অজুখানা আছে, সেখানে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে ৩য় তলায় নামাজের জন্য গেলাম ।
অন্য সময়ে এই মসজিদে নামাজ পড়ার এতটুকু স্হান পেতে যুদ্ধ করতে হয় একবার তো সিড়িঁতে নামাজ পড়তে বাধ্য হয়েছিলাম ।
ফ্লোরে মাত্র আমরা ৫/৬ জন, ১৫০০ জন ধারন ক্ষমতা প্রতি তলায়, এখানে সবাই গাড়ী নিয়ে আসে নামাজে
তাহলে কোথায় গেল এত মুসল্লী ? ঠিক ৭টায় নামাজ শুরু হলো এলাকার প্রায় ৫০০০ মুসল্লী এবার নামাজ পড়ার সুযোগ
পেল না যা অত্যন্ত দুঃখজনক ।
নামাজ শেষে একটু অপেক্ষা করতে চাইলাম যেন পানি কমে যায় এবং বৃষ্টি থেমে আসে, কিন্ত কোনটাই হচ্ছে না বিধায় অন্য মুসল্লিদের মত পানি ঠেলে বাসার অভিমুখে রওনা হলাম ।
এবার দেখলাম মুসল্লিদের ক্ষোভ ঝরে পড়ছে । পাশ থেকে একজন বল্ল এ কেমন আবাসিক এলাকা ?
--- হবেনা বিরাট ডুব এলাকা ভরাট করে করা হয়েছে
--- তাতে কি ? এত অর্থ বিত্তর মালিক, খালি আবাসন এলাকায় প্লট বিক্রি করলেই কি দ্বায়িত্ব শেষ ?
--- আরে হবে না , পাপ করেছে পাপ, তার প্রায়শ্চিত্ত করছি আমরা ।
--- হতে পারে , শুনেছি যারা আদি বাসিন্দা ছিল তারা অনেকেই জমি দিতে চায়নি । তখন ছলেবলে নিয়েছে ।
--- আরে ভাই এখন কথা বলে কি হবে ? শুনে ছি তারা অনেক শক্তিশালী,ভয়ে কেউ কিছু বলে না।
--- তাই তো দেখলাম,আশপাশের কাউকে ব্যবসা করতে দিতে চায়না ,রাস্তা ঠিক না করে দেওয়াল তুলে ,আবার প্রবেশ পথ বন্ধ করে ।
--- ড্রেন ঠিক নাই , নিয়মিত পরিস্কার করেনা, দেখুন পানিতে কি ময়লা ও দুর্গন্ধ, পানি তো সরছেই না ।
এতকথা শুনতে শুনতে প্রায় অর্ধেক পথ চলে এসছি , এমন সময় গর্তে পড়ে পরেই যাচ্ছিলাম ।এই ময়লায় পড়ে গেলে
কিযে হতো জানি না । মনে হলো কথা গুলোর যথেষ্ট সত্যতা আছে ।
তবে একটা বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আবাসিক এলাকার প্লান তো আর্কিটেক্ট ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা করে থাকে তবে তাদের
স্বাধীনতা কতটুকু ছিল সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে । এ ধরনের আবাসিক এলাকার জন্য অনেকগুলি প্যারামিটার চিন্তায়
আনতে হয় :- যেমন .......
--আবাসিক এলাকায় কি পরিমান বাড়ী হবে ।
-- জনসংখ্যার চাপ কেমন হবে ।
-- পানি ,বিদ্যুৎসহ মৌলিক বিষয় গুলোর যোগান কিভাবে থাকবে ?
-- জনসাধারনের চলাচল কতটা সহজতর করা যাবে ।
-- পয়: ,পানি ও আর্বজনা নিষ্কাষন কতটা দ্রুত ও জামেলা বিহীন হবে ?
-- জন সাধারণের চাহিদার লক্ষ্যে রেখে বাজার, ঘাট, স্কুল কলেজ ,বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ।
আমার মনে হয় অনেক কিছুই এখানে করা হয় নাই ।
বিশেষ করে আবাসিক এলাকায় ভবনের উচ্চতা কিহবে, প্লিন্থ লেভেল সকল ভবনের একই থাকবে এবং তা বেন্চমার্ক
অনুসারে হবে । এই আবাসিকে কোন প্রকার বেন্চমার্ক আছে বলে আমার জানা নেই । যা থেকে শহরের প্রধান সড়ক,
আবাসিক এলাকার রাস্তা, ভবনের প্লিন্থমার্ক, পয়: নিষ্কাষন লেভেল রাখাটা বাধ্যতামূলক থাকবে ।
এই আবাসিকে হয়েছে উল্টো ।
অনেক বাড়ীঘর হয়ে যাবার পর সম্প্রতি রাস্তা উচুঁ করা হয়েছে , ড্রেনের গভীরতা নেই , পানির চাপ সহ্য করার ।
এখন একটু বৃষ্টি হলেই পানি দ্রুত সরে না গিয়ে ব্লক গুলোর আভ্যন্তরীন রাস্তা সয়লাব করে সমস্ত পচাঁ গলা ড্রেনের ময়লা
জনসাধারনকে অসুস্হ করে তুলছে ।
পয়: নিষ্কাষনে মাষ্টার প্ল্যান ছিল না ,সরকারী রাস্তার সংস্কার ও প্রসস্হ নির্মান না হলে এতোদিনে মানুষের
কষ্ট অনেক বেড়ে যেতো ।
আমি ১০/১২টি দেশ ঘুরেছি কোথাও এধরনের অব্যবস্হা প্রত্যক্ষ করি নাই ।
এখানে শুধু আবাসন ব্যবসায়ির একমাত্র দ্বায়িত্ব নয় , সরকারের বিরাট ও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে ।
অতএব, ঘটনার প্রতিনিয়ত অভিজ্ঞতায় জনসাধারণ ভাবতেই পারে,
একজনের পাপে অন্য আবাসিকরা পাপের ফল ভোগ করবে,তা বর্তমান জামানার বাস্তবতা ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০২৩ রাত ৩:৪৬