কবিতার প্রয়োজন কি ফুরিয়ে গেছে?
মা, ভগ্নী ,জায়া, প্রেয়সী, বধূ তথা নারী
সৃষ্টিলগ্ন থেকেই কবিতার উপজীব্য নয় কি?
যদি হয়ে থাকে তবে;
মা কেন বৃদ্ধাশ্রমে?
বোন কেন ধর্ষিতা?
প্রেয়সীর মুখ কেন এসিড দগ্ধ?
কেন বধূর মুখ কামড়ে দেয়া হয়,
নৃশংস ভাবে উপড়ে দেয় হয় চোখ?
তবে কি কবিতার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে?
যে মা বৃদ্ধাশ্রমে সে আমার মা নয়
তাই আমি কবিতা লিখি!
যে বোন ধর্ষিতা সে আমার বোন নয়
তাই আমি কবিতা লিখি!
যে প্রিয়ার মুখ ঝলসে গেছে সে আমার প্রিয়া নয়
তাই আমি কবিতা লিখি!
যে নারীর মুখ কামড়ে দেয়া হয়েছে-
সে আমার বধূ নয়
তাই আমি কবিতা লিখি!
নির্যাতিতা নারী সম্পর্কে আমার কেউ না;
তাই বুঝি সম্পর্কের দেয়াল তুলে
কবিতার নামে প্রলাপ লিখি!
চার মাত্রা আর ছয় মাত্রার ছন্দের দোল খাই
গোটা কয়েক বাহবায় বুদ হয়ে থাকি!
প্রতিবাদের একটা শব্দও লেখা হয় না আমার কবিতায়।
অথচ একটা সময় কবিতায় শাসকের মসনদ কাঁপতো
কবিতায় জনতা রাজ বিদ্রোহ করতো
কবিতা সমাজ ভেঙ্গে সমাজ গড়তো
কবিতার জন্য কবি কারারুদ্ধ হতো
কবিতা শিরোনামে আমি যা লিখছি তা কেবলই অ-কবিতা।
আমার অ-কবিতার জন্য আমাকে ক্ষমা কোরও না মা
যতদিন না আমার কবিতায় বৃদ্ধাশ্রম শূন্য হবে!
আমার অ- কবিতার জন্য আমাকে ক্ষমা করিসনে বোন
যতদিন না আমার কবিতার মন্ত্রে দীক্ষিত তরুণ
লম্পটের যৌনাঙ্গ ছেদ না করবে!
আমার অ-কবিতার জন্য প্রিয়া তোমাকে দেয়া -
গোলাপ ছুঁড়ে মারো আমার মুখে;
যতদিন না আমার কবিতায় এসিড নিক্ষেপকারীর
শরীর থেকে চামড়া খুলে নিবে যন্ত্রণা কাতর প্রেমিক!
আমার অ-কবিতার জন্য আমাকে নং-পুরুষ বলো বধূ
যতদিন না আমার কবিতায় কলেমা আর মন্ত্রের বাধনে
তোমাকে গোলাম ভাবা থেকে মুক্তি দিতে পারি!
কেউ আমাকে ক্ষমা কোরও না আমার অ-কবিতার জন্য
যতদিন না আমার কবিতায় পুঁজিবাদী সমাজ ভেঙ্গে
ধনী দরিদ্রে সমতা না আসে, যতদিন না জনতা রাজ পথে
নেমে আসে শোষকের তাজ ছিনিয়ে না নেয়,
ক্ষুধার্ত মানুষ মরণ কামড় বসিয়ে না দেয়
মিথ্যা বুলি আওড়ানো রাজনৈতিকের গায়ে,
তথাকথিত সুশীলদের ন্যাংটা করে চৌরস্তায় দাড় কিরয়ে না রাখে!
আমি ক্ষমা চাই না প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই কবিতা লিখতে চাই।
কিন্তু আমি কর জোড়ে মিনতি করছি
কেউ কি আমায় বলে দিবে ঐ দুটো নিষ্পাপ শিশুর-
ঘৃণা থেকে কি করে বাঁচবো?
যে শিশুটিকে গর্ভপাত না করায় পিতা নামক পুরুষটি তার মাকে
তিন মাসের গর্ভাবস্থায় ফেলে চলে যায়!
স্ত্রী যখন প্রসব বেদনায় কাতরায় সে পুরুষটি তখন
লিভ টু-গেদার নামক ভ্রষ্ট অপসভ্যতায় মত্ত!
সে শিশুটি কি করে পুরুষ জাতিকে শ্রদ্ধা করবে?
যে শিশুটির দেখেছে পিতা নামক পুরুষটি চোখের সমানে
নির্মম ভাবে তার মাকে রক্তাত্ব করছে
সে কি করে শ্রদ্ধা করবে পুরুষ জাতিকে?
অথচ শুধু অ-কবিতা লেখা ছাড়া আমার অপরাধ আমি পুরুষ!
আমি ক্ষমা চাচ্ছি ঐ দুটি শিশুর কাছে পুরুষ হবার জন্য
অ-কবিতার জন্য নয়……

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




