অনেক সাইন্স ফিকশানে আমরা Parallel world এর কথা শুনেছি । মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে , এটা কি আদৌ সম্ভব ? কোন প্রমাণ আছে কি ? অথবা কোন রেফারেন্স ? জ্বী হা আছে । এর কথা সাইন্টিফিক্যালি প্রথম আসে Relative State Formulation বইয়ে ১৯৫৭ সালে । এখন এটা নিয়ে কিছু বলব । তার আগে বড় করে একটা শ্বাস নিন ! রিল্যাক্স হন ! কেননা একটু পরেই আপনার মস্তিষ্কে ঝড় উঠতে পারে !
.
Parallel Universe এর কথা বলার আগে কয়েকটা জিনিস জেনে রাখা দরকার । শুরু করলাম তবে !
.
Deja vu : এটা একটি ফ্রেঞ্চ শব্দ । এর অর্থ এমন কিছু দেখা যা দেখে মনে হবে এটা আগে কখনও ঘটেছিল । কিন্তু সত্যিটা হল তা আদৌ ঘটেনি । আবার এমনও হতে পারে যে , কিছু ঘটছে যা আপনার মনে হবে এটা পূর্ব থেকেই আপনি জানতেন ! কিন্তু এক্ষেত্রেও সত্য হল আপনি আসলে তা জানতেনই না । বিজ্ঞানীরা কিন্তু এটা মেনে নেন নি । তারা বিভিন্ন গবেষণায় জানিয়েছেন এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার , নিউরনের দূর্বলতা বা শর্ট সার্কিট দায়ী এর জন্য ! ৩১% মানুষই Deja vus প্রত্যক্ষ করেছেন ।
.
কিন্তু কথা কিন্তু থেকেই যায় ! ১৯৯৮ সালে John titor একটা শব্দ আবিষ্কার করেন । যার নাম Alter vus !
.
Alter vu :
এর অর্থ true memories from altered worldlines ! জিনিসটা কিছুটা টাইম ট্রাভেলের মত । ক্লিয়ার করি একটু ! ধরুন আপনি নিজে ভবিষ্যতে চলে গেলেন ! অথবা অন্য কোন জগতের আপনার কাছে । সেখানে গিয়ে আপনি আপনাকেই অথবা কাউকে কোন মেসেজ দিয়ে আসলেন । এটাই Alter vus ! গাঁজাখুরি গপ্প মনে হচ্ছে ? হতেই পারে । দুইটা ঘটনা বলি !
.
১ম ঘটনাঃ বিকাল ৪:২২ , সেপ্টেম্বর ১২ , ২০০৮ । আমেরিকার লস এঞ্জেলসে মেট্রোলিংক কম্পিউটার ট্রেইনের একটা মারাত্নক এক্সিডেন্ট হয় ! দুর্ঘটনায় ২৬ জন মারা যায় ! একটা দুর্গম জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটার ফলে এই এক্সিডেন্টের কথা কেউ জানত না ! ঘটনা এটা নয় ! সেদিন বিকাল পাঁচটায় একজন মহিলা পুলিশের কাছে কমপ্লেইন করে যে তার স্বামীর নাম্বার থেকে অনবরত কল আসছে , কিন্তু রিসিভ করলে কোন কথা বলছে না , এমনকি কোন শব্দও না ! পুলিশ এবং উদ্ধারকর্মী মিলে ফোনকল ট্র্যাক করে প্রায় এগার ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ! এবং ফোনকল ট্র্যাক করেই ঐ মহিলার স্বামীকে সনাক্ত করেন উদ্ধারকর্মী ! রহস্য হল , ঐ ব্যক্তি এগার ঘন্টা আগেই মারা গিয়েছিলেন এবং আরো বেশি রহস্য হল , ফোনকল ট্র্যাক করে তাকে সনাক্ত করার পর পরই সেই সিগন্যাল হারিয়ে যায় এবং অনেক খুঁজেও সেই ফোনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি !
.
২য় ঘটনাঃ মার্টি নামের এক লোক দাবী করতেন যে তিনি ভবিষ্যতে গিয়েছিলেন ! কিন্তু কেউ প্রমাণ চাইলে চুপ হয়ে যেতেন । তার মৃত্যু আগে আগে তিনি বলেন যে , তার নাকি খুব Twin pines mall এ যেতে ইচ্ছা করছে ! কিন্তু এ নামে কেউই কোনদিন কোন মলের নাম শোনেনি ! তাই তারা সেটা প্রলাপ বলেই ধরে নেন ! কিন্তু মার্টির মৃত্যুর এক বছর পর তার আত্নীয়রা একদিন পত্রিকায় দেখতে পান যে , প্রতিবেশী দেশে Lone pines mall নামের একটা শপিং মল নাম পরিবর্তন করে Twin pines mall রেখেছেন !!!
.
কি বুঝলাম ? হয়ত এখনও গোঁলকধাধায় আছি । আচ্ছা এবার চলে যাব Paraller universe সর্ম্পকে ! আবার দুটো ঘটনা বলি , অকা ?
.
১ম ঘটনাঃ ২০০৮ সাল , স্পেন । লেরিনা গার্সিয়া (৪১) নামের এক মহিলা জানান যে একদিন সকালে তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখতে পান যে কাল রাতে তিনি বিছানায় যে বেডশীট দেখেছিলেন সকালে তা পাল্টে গেছে । তিনি এটা নিয়ে অতটা চিন্তা করলেন না । তার মতে সবকিছু ঠিকই ছিল শুধু দুইটা জিনিস চেঞ্জ হয়ে গেছে । প্রথমত , তার অফিসটা একদমই গায়েব হয়ে গেছে যেখানে তিনি বিশ বছর ধরে চাকরী করতেন ! এমনকি কেউ সেই অফিসের নামও শোনেনি ! আর দ্বিতীয়ত , তার প্রেমিক অন্য এক অপরিচিত মানুষ ! [Link: http://goo.gl/HGB5Li ]
.
২য় ঘটনাঃ ১৯৫৪ সাল ! টোকিও বিমানবন্দরে একজন অদ্ভুত মানুষকে আটকে দিয়েছে কাস্টমস ! লোকটা বলছেন , তিনি Taured নামের এক দেশ থেকে এসেছেন ! কিন্তু পৃথিবীতে এই নামের কোন দেশের অস্তিত্ব নেই ! কিন্তু লোকটাকেও ভন্ড বলা যায় না । কারণ তার পাসপোর্ট একদমই আসল । এমনকি তার কাছে ব্যাংক স্টেটমেন্ট , ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অন্যান্য জরুরী এবং একদম আসল কাগজপত্র আছে যেগুলোতে Taured দেশের নাম লেখা এবং সরকারের সিলও আছে ! লোকটা জানায় Taured একটা ইউরোপিয়ান কান্ট্রি এবং প্রায় ১০০০ বছরের পুরোনো ! পুলিশ তাকে একটা হোটেলে রাখেন এবং কড়া নজর রাখেন ! কিন্তু সকালবেলা রুমের দরজা ভেঙ্গে ঐ লোকের কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায় না ! [Link: http://goo.gl/tObGXW ]
.
রিল্যাক্স ! ইজি হন একটু । এখন এসবের ব্যাখায় যাবো ! অকা ?
.
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন , এই জগতের মত অসংখ্য জগত আছে এবং আপনার মত আরো অংসখ্য আপনি আছেন ! এই জগতগুলো সমান্তরালে চলে । কেউ কারো উপর প্রভাব ফেলে না । এই জগতের আপনি এখন আমার পোষ্ট পড়তেছেন , অন্য জগতের আপনি হয়ত আমায় অনেক আগেই ব্লক দিয়েছেন ! এ জগতের আপনি অবিবাহিত , অন্য জগতের আপনি হয়ত বিবাহিত ! নাথিং ইম্পসিবল !
.
মাঝে মাঝে দুটো জগত একে অপরকে ক্রস করে যায় ! তখনই আমাদের Deja vu বা Alter vu ঘটে ! এবার হয়ত কিছুটা ক্লিয়ার হয়েছে ! এবার আরেকটু ক্লিয়ার করি । একটা চাদর নেন ! সেই চাদরকে মাটির উপরে টান করে ধরে তাতে একটা মার্বেল ছেড়ে দিলে চাদর টা নিচের দিকে ডেবে যাবে । এরকম অসংখ্য চাদর কল্পনা করি ! আসলে এই চাদরই হল সময় ! আর মার্বেলটা আমাদের জগত ! এখন যেকোন একটা চাদরের মিরর ইমেজে আরেকটা চাদর কল্পনা করলে মার্বেলদুটো পরষ্পর স্পর্শ করে ! অর্থাত্ দুটো জগত সংস্পর্শে আসে এবং এটাই প্যারালাল জগতের ক্রসিং ! বিজ্ঞানীরা মনে করেন , এই ক্রসিংয়ে সময়ের চাদরে একটা ছিদ্র হয় ! এই ছিদ্র দিয়েই কেউ কেউ টুপটাপ এজগত থেকে ঐ জগতে চলে যান ! কেউ বলেন , অন্য জগতে যাওয়ার জন্য দরকার Port key ! এটা বস্তু বা প্রাণী যেকোন কিছু হতে পারে ! Port key এর ধ্বংস বা মৃত্যু হলে তাকে পুনরায় ফিরে আসতে হয় আগের জগতে ! কেননা Port key ই পারে দুটো জগতের মাঝে ক্রসম্যাচ করাতে !
.
কোয়ান্টাম মেকানিক্স অলরেডি জানিয়ে দিয়েছে যে অসংখ্য জগত থাকা সম্ভব ! এখন শুধু অপেক্ষা নিজে প্রত্যক্ষ করার !