রত্নগর্ভা - বেশ আপত্তিকর একটা শব্দ!
জীবনে প্রতিষ্ঠিত, ভালো অবস্থানে যাওয়া, সফল লোকজনের মাকে রত্নগর্ভা নামে আখ্যা দেয়া হয়। এই যেমন ধরেন, কোনো মায়ের চার সন্তানের দুইজন বড়ো ডাক্তার, একজন বিশাল ইঞ্জিনিয়ার, বাকি একজন সচিব- এনারা একেকজন একেকটা রত্ন; আর যে গর্ভে এনারা জন্মেছেন তা রত্নগর্ভ।
আর, যে মানুষেরা ছোট চাকরি করে সংসার চালায়, গ্রামে কিংবা মফস্বলে ছোটো কাজ করে, রোদে পুড়ে ফসল ফলায় তারা কোনো রত্ন না, তাদের মা-ও তাই রত্নগর্ভা হয় না। সেই মায়েরা কি তাহলে রত্নের বদলে আবর্জনা গর্ভে ধরেছেন? অথচ, একজনের জীবনে সাফল্যের পেছনে কাজ করে হাজারো ফ্যাক্টর। পৃথিবী আগাগোড়াই আনফেয়ার একটা জায়গা। সবাই সমান সুযোগ পায় না, সবার জীবনের রাস্তাও সমান না।
সফল সন্তানের জীবনে তাদের মায়েদের ভূমিকাকে খাটো করা সম্ভব না; কিন্তু, সন্তানের বাহ্যিক সামাজিক সাফল্য বিচার করে এক মায়ের জরায়ুকে রত্নের আকর ঘোষণা দিয়ে, প্রকারান্তরে আরেকজনেরটা খাটো করাটা আপত্তিকর বটে।
প্রতিটা মায়ের কাছেই তার নিজের গর্ভ রত্নের আকর। সমাজের চোখে রত্ন না হলেও, মায়ের কাছে তার সন্তান তো সেরা রত্ন!
সব জরায়ুই রত্নগর্ভ, সব মা-ই রত্নগর্ভা!