somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাকতালীয়

০২ রা মে, ২০১০ সকাল ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাত্র ৬ দিনের মাথায় কিভাবে একটা সম্পর্ক তৈরী হতে পারে সুপর্নার জানা নেই.... সবকিছু পরিকল্পনা করে করা সুপর্নার জীবনে এমন একটা কিছু ঘটে যেতে পারে সেটা সুপর্নাও কোনদিন কল্পনা করেনি ...রাকিনের সাথে পরিচয়ের গল্পটা খুব অদ্ভুত...সুপর্ণার ডায়েরিতে একটা পাতা ছিল নাম অসম্ভব চাওয়াগুলো....মাত্র ৬ টাই বিশেষণ লেখা ছিল তাতে ...সৎ সাহসী স্পষ্টভাষী দায়িত্ববান বুদ্ধিমান আর হাসিখুশি....তারিখটা আজও মনে আছে সুপর্নার..২ রা মে...ইউনিভারসিটি থেকে বের হতেই সুপর্ণা শুনলো প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ....ভয় পেয়ে সুপর্ণা যখন আশেপাশে অসহায় ভঙ্গিতে তাকাচ্ছে তখন হঠাৎ করে কোথা থেকে দার্শনিক প্রকৃতির ছেলেটা সামনে এসে দাড়িয়ে বলল এভাবে এখানে দাড়িয়ে না থেকে পেছনের গেটটা দিয়ে দ্রুত চলে যান...সুপর্ণার ভয় দেখে রাকিন বলল আচ্ছা চলুন আমিও ওদিকেই যাচ্ছি...তারপর সুপর্নাকে রিক্সা ঠিক করে দিয়ে রাকিন তার ফোন নম্বরটা দিয়ে বলল ঠিকমত পৌছালেন কিনা জানাবেন....রিক্সায় উঠে সুপর্নার খেয়াল হলো নামটাই জিগ্গেস করা হইনি....বাসায় এসে সুপর্ণা একটু ইতস্তত বোধ করলো ...ফোন কি করা উঠিত...অনেক ভেবে বিকেলবেলা রাকিনকে একটা ছোট্ এসএমএস করল...আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমি পৌছেছি...আপনি ঠিক আছেন তো...পরদিন ইউনিভারসিটি কাফেতে আবার দেখা রাকিনের সাথে...সুপর্ণা সামনে গিয়ে একটু হেসে বলল চিনতে পারছেন....রাকিন হেসে বলল চেহারাটা তো খুব পরিচিত কিন্তু নামটা বোধয় জানা হইনি ...আমি সুপর্ণা...ফার্মাসি ২য়বর্ষ ...আমি রাকিন...জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষ..রাকিনের মজার মজার সব গল্প শুনতে শুনতে কখন যে ১ ঘন্টা কেটে গেল সুপর্ণা টের পেলনা...শেষে বলল কাল থেকে আমাদের কালচারাল উইক শুরু আসবেন কিন্তু...পরেরদিন অনুষ্ঠানের মাঝে নিজের অন্য বন্ধুদের সাথে রাকিনকে পরিচয় করিয়ে দিল সুপর্ণা...অবাক হয়ে আবিষ্কার করলো রাকিন একজন নিয়মিত বিতার্কিক এবং সে বাদে মোটামুটি বাকি সবার কাছেই সে ভীষণ পরিচিত ...বাসায় ফিরে সুপর্নার অস্থির লাগতে লাগলো...মনে হচ্ছিল কি যেন একটা ও জানে আবার জানেনা...কিন্তু ব্যাপারটা ধরতে পারলনা...হঠাত রাকিনের এসএমএস পেল আপনাদের অনুষ্ঠান খুব ভালো লাগলো...সুপর্নাও হঠাৎ বুঝতে পারল সমস্যাটা কি...বুঝতে পেরে হতভম্ব হয়ে গেল...আশ্চর্য তার মত বাস্তববাদী মেয়ে কিভাবে এরকম সিনেমার মত ২ দিনে প্রেমে পড়ে গেল...নিজের উপরই সুপর্নার রাগ লাগতে লাগলো...মোবাইলটা অফ করে সুপর্ণা ডায়েরি লিখতে বসলো...ডায়েরি লিখলে মন যতই বিক্ষিপ্ত থাকুক শান্ত হয়ে যায়...আচ্ছা আজকে কি হচ্ছে এসব..ডায়েরি খুলতেই সবার আগে বেরিয়ে এলো সেই বিখ্যাত পাতা...৬ টা বিশেষণ চোখে পড়তেই সুপর্নার ভয়ানক কান্না পেতে লাগলো..ডায়েরি বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলো সুপর্ণা...এর পরের দিন আবার রাকিনের সাথে দেখা...রাকিন দূর থেকে হ্যালো বলে চলে গেল...উফ নিশ্চয় রাকিন সুপর্নার মনের পাগলামি বুঝতে পেরেছে...লজ্জায় সুপর্ণা লালহয়ে গেল...রাকিন নিশ্চয় তারমত এরকম অদ্ভুত সব চিন্তায় বিভোর না...ভাবতে ভাবতে ক্লাসের সময় হয়ে গেল...পরেরদিন রাকিন আবার হ্যালো বলল...সুপর্ণা হয়ত একটু অভিমান করেছিল...রাগ করে যখন চলে যাচ্ছিল রাকিন তাকে থামিয়ে বলল...একটু দাড়ান...কালকের আমার ব্যবহারে কষ্ট পেয়েছেন?....আশ্চর্য কোন ব্যবহার?...সুপর্ণা না বোঝার ভান করে..রাকিন বলল আপনাকে সব বলব তবে আপনি আমাকে ভুল বুঝতে পারবেন না...সুপর্ণা তো অবাক একি তার কথাগুলো রাকিন বলছে কেন...রাকিন বলল আমাকে একটু সময় দিন কাল এই সময়ে এখানে থাকবেন...সারাদিন সুপর্নার কোনো কিছুতে মন বসলনা...নিশ্চয় রাকিন বলবে যে সে সুপর্নার ব্যাপরে এরকম ভাবছেনা...সুপর্ণা যেন আর ভাবনাগুলোকে ডানা মেলতে না দেয়...অবশেষে সময় আসল...রাকিন আসল...হাতে একটা ডায়েরি...কোনো ভুমিকা না করেই রাকিন বলতে শুরু করল..আপনাকে যেদিন প্রথম দেখলাম সেদিনই আপনাকে ভালো লেগেছে আমার...বহুবার চিন্তা করেও যখন আমার এরকম যুক্তিহীন আচরণের সুরাহা করতে পারছিলাম না তখন ডায়েরি লিখতে বসলাম....ডায়েরিতে কি পেলাম জানেন?...আমার পছন্দের ৬ টা বিশেষণ...সরল ..বন্ধুসুলভ...মেধাবী...সংস্কৃতিমনা...সতস্ফুর্ত আর বাস্তববাদী....আপনার সাথে দেখলাম সবগুলোই মিলে যায়..তখনি বুঝতে পারলাম মনের অজান্তে হয়ত আমি আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছি...যদিও আপনি কতটা বাস্তববাদী তা নিয়ে এখনও সংশয় আছে আমার...ঐদিন যেভাবে গোলাগুলির মধ্যে দাড়িয়ে ছিলেন..মৃদু হেসে বলল রাকিন...সুপর্ণা এত অবাক মনে হয় সারা জীবনেও হয়নি..রাকিনের দিকে তাকিয়ে বলল...আমার গল্পটাও একই জানেন..শুধু বিশেষনগুলো আলাদা এই যা...
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×