মাধ্যমিক বাংলা গদ্য বইয়ে ‘ক্ষ’ শব্দটি বাদ দেওয়ায় প্রমথ চৌধুরীর ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ‘ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞান সাপে তেমনি জ্ঞানের সৃষ্টি মনসাপে।’ সঠিক বাক্যটি হচ্ছে, ‘ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞানসাপেক্ষ তেমনি গুণের সৃষ্টিও মনসাপেক্ষ।’ এমনিভাবে ‘ক্ষ’ শব্দটি বাদ পড়ায় ‘পল্লীসাহিত্য’ প্রবন্ধে সংরক্ষণ হয়ে আছে ‘সংরণ’। এভাবে নিপেক্ষ (নিরপেক্ষ), অশিক্ষতি (অশিক্ষিত), বুভুক্ষি (বুভুক্ষু), মতা (ক্ষমতা), যুদ্ধত্রে (যুদ্ধক্ষেত্রে), সংপ্তি (সংক্ষিপ্ত) শব্দগুলো শিক্ষার্থীর কাছে অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে।
ত্রুটিপূর্ণ বাক্য: নবম-দশম শ্রেণীর সব বইয়ে রয়েছে অসংখ্য ত্রুটিপূর্ণ বাক্য। ইতিহাস বইয়ের ১৩ পৃষ্ঠায় একটি বাক্য হচ্ছে, ‘দক্ষ নাবিক ফিনিশীয়রা রাতে তারা দেখে জাহাজ চালাত।’ প্রকৃতপক্ষে বাক্যটি হবে, ‘দক্ষ ফিনিশীয় নাবিকরা রাতে তারা দেখে জাহাজ চালাত।’ এ রকম আরেকটি বাক্য, ‘গ্রিসবাসীরা বহু দেবতাদের বিশ্বাসী ছিল।’ বাক্যটি হবে, ‘গ্রিসবাসীরা বহু দেবতায় বিশ্বাসী ছিল।’ ‘সম্রাট’-এর স্ত্রীকে ‘সম্রাজ্ঞী’ বলার কথা। কিন্তু ইতিহাস বইয়ের ১০ পৃষ্ঠায় একই বাক্যে ‘সম্রাট’ ও ‘রানী’ উল্লেখ করা হয়েছে।
পদার্থবিজ্ঞানের ষষ্ঠ পৃষ্ঠার শেষ লাইনে বলা আছে, ‘লক্ষবস্তুর আঘাত হানছে।’ এটি হবে, ‘লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানছে।’ বাংলা গদ্য বইয়ে নীল চাষের পরিচয় দিতে গিয়ে সপ্তম পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘সাদা কাপড় রঙের জন্য নীল রং দরকার।’ একদিকে বাক্যটি বিদঘুটে, অন্যদিকে একই বাক্যে ‘রং’-এর বানানে ‘ঙ’ এবং ‘ং’ ব্যবহার করা হয়েছে।
এ ছাড়া সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘ঝর্ণা’ কবিতা সম্পর্কে একটি বাক্য হচ্ছে, ‘কবিতাটি আবৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে মনে সৃষ্টি হয় একধরনের অবর্ণনীয় আনন্দের আবেগ।’ বাক্যটিতে ভুল না থাকলেও এর মর্মার্থ বোঝা কঠিন।
একইভাবে ‘মহেশ’ গল্পের মূল বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘শেষ পর্যন্ত রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে গফুর মহেশকে আঘাত করে।’ ‘ক্ষুব্ধ হওয়া’ মানেই কোনো কিছু নিয়ে রাগ বা অসন্তোষ হওয়া।
ভুগোল বইয়ের নয় পৃষ্ঠায় ‘উত্তরে বা দক্ষিণে, পূর্বে বা পশ্চিমে’ উল্লেখ করা হয়েছে। সবগুলো দিকের শেষে ‘এ’-কার (ে) দরকার হয় না।
বহুবিধ অসংগতি: ‘ছুটি’ গল্পের দুটি বাক্যে বলা হয়েছে, ‘‘ফটিক নিস্ফল আক্রোশ হাত পা ছুঁড়িতে লাগিল। ফটিককে দেখিবামাত্র তাহার অগ্নিমুর্তি হইয়া কহিলেন, ‘আবার তুই মাখনকে মেরেছিস?’’ এ বাক্য দুটি পড়ে ছেলেমেয়েরা বিভ্রান্ত হচ্ছে বছরের পর বছর। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘ফটিক নিઋফল আক্রোশে হাত পা ছুঁড়িতে লাগিল। ফটিককে দেখিবামাত্র তাহার মা অগ্নিমূর্তি হইয়া কহিলেন,...’ (রবীন্দ্র-রচনাবলী, নবম খন্ড, জয় বুক্স ইন্টারন্যাশনাল, পৃষ্ঠা-৩৪৫)। রবীন্দ্রনাথের মূল রচনার সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের বর্ণনার পার্থক্য হচ্ছে, পাঠ্যবইয়ে ‘মা’ শব্দটি বাদ পড়ায় বাক্যটি অর্থবহ হয়নি। এ ছাড়া আক্রোশ থেকে ‘এ’-কার ()ে বাদ পড়ায় বাক্যটি অসম্পুর্ণ রয়ে গেছে। গল্পে সন্তুষ্ট শব্দে ‘ই’-কার ()ি ব্যবহার, মূল রচনার ‘ভারক্লান্ত গর্দভ’ শব্দ দুটিকে ‘ভারকান্ত গর্দভ’ হিসেবে উল্লেখ করায় বাক্যগুলো ত্রুটিপূর্ণ হয়ে গেছে। গল্পজুড়ে ‘ন’ এবং ‘ণ’ দিয়ে সংযুক্ত অক্ষরগুলোতে ব্যাপক গরমিল রয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘ক্যাস্টর অয়েল’ শব্দটি বইয়ে লেখা হয়েছে ‘কেস্টর অয়েল’। ‘গুরুমশায়ী’ শব্দটিতে কোথাও ‘ই’-কার ()ি, কোথাও ‘ঈ’-কার (ী) দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মুখস্থ শব্দটিতে ‘স্ত’, ‘চক্ষেও’ শব্দে ‘চো’ দেওয়ার ফলে এগুলো ভুলের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
এ ছাড়া বাংলা গদ্য বইয়ে নীলদর্পণ নাটকের দুই চরিত্র গোপীকে কোথাও ‘গোপ’ এবং সাধুকে কোথাও ‘সাধ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভুগোল বইয়ে ‘উপর্যুপরি’ বন্যাকে ‘উপর্যপরি’, ‘ঔষধি’ গাছকে ‘ঔষুধি’ লেখা হয়েছে। ঔপন্যাসিক জহির রায়হানের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘সময়ের প্রয়োজনে’ গল্পে সাতটি বাক্য পরপর দুবার ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া গল্পের বর্ণনায় বাক্য ভেঙে ভেঙে মুক্তিযুদ্ধের যে চমৎকার দৃশ্যপট জহির রায়হান তুলে ধরেছেন, তা ঢালাওভাবে একটি অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করায় পুরো বর্ণনা খাপছাড়া হয়ে গেছে।
গদ্য বইয়ের ১৫৪ পৃষ্ঠায় একটি প্রশ্ন হচ্ছে, ‘সেতারা বেগম কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়?’ এখানে ‘প্রতিবন্ধকতা’ নয়, ‘প্রতিবন্ধিতা’ হবে। একই পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে ‘কাজের বুয়া’। ‘বুয়া’ আঞ্চলিক শব্দ এবং প্রমিত বাংলা শব্দ নয়।
অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন: ‘পাস করা বিদ্যাকে শিক্ষা বলি না’−বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ‘জাগো গো ভগিনী’ নিবন্ধের এ বাক্যটি অনুশীলনে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন হিসেবে উল্লেখ করা এবং ব্যাখ্যা করতে বলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহেশ’ গল্পে সংক্ষিপ্ত জবাব দেওয়ার জন্য নির্ধারণ করা প্রশ্নটি হচ্ছে, শরৎচন্দ্র গ্রীষ্ক্ন প্রকৃতির যে চিত্রকল্পটি এঁকেছেন, তার বর্ণনা দাও। প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের চিত্রকল্প কি সংক্ষেপে উল্লেখ করা যায়?
‘ওদের জন্য ভালবাসা’ শীর্ষক লেখার শেষে বহুনির্বাচনী প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে কোনটি সঠিক? চারটি প্রশ্ন হচ্ছে, রোমান সংখ্যায় এক, দুই, তিন এবং এক, দুই, তিন। এ অনর্থক প্রশ্নের জবাব কারও জানা নেই। এ ছাড়া লেখক মাহবুবুল আলম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে, তিনি মূলত−ক. অধ্যাপক ও সাহিত্যিক, খ. অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক, গ. গীতিকার ও প্রাবন্ধিক এবং ঘ. ব্যাকরণবিদ ও গীতিকার। এ ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে অনুমানভিত্তিক জবাব দিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলা গদ্য বইয়ে একটি সংক্ষিপ্ত উত্তরের প্রশ্ন হচ্ছে, ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখক শিক্ষাপদ্ধতির ত্রুটি সম্পর্কে কী অভিমত ব্যক্ত করেছেন? বাংলা বিষয়ের একজন শিক্ষক পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, শিক্ষাপদ্ধতির ত্রুটি কি সংক্ষেপে চিহ্নিত করার মতো প্রশ্ন?
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘মানুষ কে?’ কবিতায় ‘বাসনার বাসা’ শব্দ দুটির টীকা লিখতে বলা হয়েছে। কিন্তু ১০-১১ পৃষ্ঠাজুড়ে কবিতার কোথাও এমন শব্দদ্বয়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কবি কায়কোবাদের ‘বাংলা আমার’ কবিতায় নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে, ‘কিসে কবির হূদয় সুশীতল হয়?’ এর চারটি বিকল্প জবাব দেওয়া আছে, কিন্তু একটিও ঠিক নয়। কবিতা অনুযায়ী সঠিক জবাব হবে, ‘বাংলার হাওয়া বাংলার জল।’
অনুশীলনমূলক না অনুশীলনীমূলক: বাংলা গদ্য এবং কবিতা বইয়ের প্রতিটি গল্প, প্রবন্ধ, নাটক ও কবিতার শেষে অনুশীলনমূলক কাজ করতে বলা হয়েছে। গদ্য বইয়ে ৩৩টি গদ্যের শেষে মোটা অক্ষরে শিরোনাম লেখা হয়েছে ‘অনুশীলনমূলক কাজ’। কিন্তু কবিতা বইয়ে ৩০টি কবিতার শেষে মোটা অক্ষরে লেখা আছে ‘অনুশীলনীমূলক কাজ’। প্রকৃতপক্ষে গদ্য বইয়ের শিরোনাম ঠিক থাকলেও কবিতার বইয়ে উল্লেখ থাকা ‘অনুশীলনীমূলক’ কথাটি ঠিক নয়।
একটি বইয়ের শুরু ও শেষ: মাধ্যমিক বাংলা কবিতা বইয়ের শুরুতেই পুনর্মুদ্রণের তারিখ লেখা আছে, ‘ফেব্রুয়ারী, ২০০৮ ইং।’ প্রথমত, ‘ফেব্রুয়ারী’ বানানে ‘ঈ’-কার (ী) হবে না। একই বইয়ের বিভিন্ন স্থানে বানানে ‘ঈ’-কার (ী) এবং ‘ই’-কার ()ি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তারিখের সঙ্গে ‘ইং’ লেখাটা গুরুতর ভুল। এভাবে ভুল দিয়ে ওই যে শুরু, তা শেষ হয়েছে খোদ বইটির সম্পাদক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের লেখা ২০টি ভুল-সংবলিত কবিতা দিয়ে। অসুস্থ লেখকের পত্নী বলেছেন, নিশ্চয়ই লেখক নিজের লেখায় ভুল করবেন না। তাই এর দায় কার, সেটি দেখতে হবে।
বইয়ের শেষে বইটির সম্পাদক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের লেখা কবিতার নাম ‘শহীদ স্নরণে’। একজন ভাষা-বিশেষজ্ঞ এ কবিতায় কমপক্ষে ২০টি ভুল চিহ্নিত করেছেন। দেখা গেছে, সম্পাদকের লেখায় খ্রিষ্টাব্দ, শ্রেণী, মৃত্যু, করাচি, ধ্বংসস্তুপ, স্টেনগান, উনসত্তর, লাঞ্ছিত, লেফটেন্যান্ট, মোহাম্মদ, মর্যাদাসহ বিভিন্ন বানানে ভুল রয়েছে।
সনে, সালে, খৃষ্টাব্দে: মাধ্যমিক রসায়ন বইয়ে ২২ পৃষ্ঠায় ‘অ্যাভোগেড্রোর সুত্র’ শিরোনামে অধ্যায়ে একই অনুচ্ছেদে লেখা আছে ‘1803 সালে এবং 1811 খৃষ্টাব্দে।’ ঠিক এর চার পৃষ্ঠা আগেই লেখা আছে ‘1792 সনে।’ রসায়ন বইয়ের বাংলা ভাষার বর্ণনার মধ্যে 1803, 1811 দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। এ ছাড়া বইটির শুরুতে একাধিক জায়গায় তারিখের শেষে ‘ইং’ লেখা আছে, যা ঠিক নয়। একই বইয়ে ‘ফরাসী’ বানানে ‘ঈ’-কার (ী) ও ‘আরবী’ বানানে ‘ঈ’-কার ( ী) দেওয়া হলেও ‘ই’-কার ()ি দিতে হবে।
অর্ধযুগ আগের তথ্য-পরিসংখ্যান: ২০০৮ সালের ছাত্রছাত্রীরা ভুগোল বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য পাচ্ছে ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত। পোশাকশিল্প সম্পর্কে ১৪৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘২০০১-০২ সালে এ শিল্পে বাংলাদেশ প্রায় ১৭ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ৫২ শতাংশ।’ কিন্তু আজকের চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন। সর্বশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৬-০৭ অনুযায়ী ‘মোট রপ্তানি আয়ের ৭৫.৭১ শতাংশ আসে পোশাক শিল্প থেকে এবং টাকার অংকে এটা প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা।’
বইটির ১৩৭ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘২০০১-০২ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪২৩০ মেগাওয়াট।’ এই তথ্যের সুত্র হিসেবে ২০০৩ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এরপর আরও ছয়টি অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রকাশ হয়েছে। আর ওই তথ্যটিও এখন আর সময়োপযোগী নয়।
এ ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের কাছে ২০০১-০২ সালের তথ্য উপস্থাপন করে বলা হচ্ছে, ‘দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৩৬ কিলোওয়াট আওয়ার।’ কিন্তু সর্বশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এখন মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১৬৫ কিলোওয়াট।
অন্যদিকে পাট ও বস্ত্র-সম্পর্কিত ২০০১ বা ২০০২ সালের তথ্যগুলো এতই পুরোনো যে পাটকল ও বস্ত্রকলের সংখ্যা, এগুলোর মোট উৎপাদন এবং আয়-সম্পর্কিত কোনো তথ্যই ব্যবহার উপযোগী নয়। অথচ ছেলেমেয়েরা এগুলোই পড়ছে, শিখছে এবং পরীক্ষার খাতায় লিখছে। একইভাবে ভুগোল বইয়ে উল্লেখ করা কাগজ কল, সার কারখানা, চিনি কলসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানার সংখ্যা, এগুলোর উৎপাদন ও আয়-সম্পর্র্কিত অতি পুরোনো তথ্যগুলো একজন শিক্ষার্থীকে পিছিয়ে দিচ্ছে।
সংক্ষেপ করতে গিয়ে: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘লালসালু’ সংক্ষেপ করতে গিয়ে বর্ণনায় ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়েছে। একই অবস্থা তৈরি হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার ছেলেবেলা’ লেখাটিতে। ‘আমার ছেলেবেলা’ রচনাটি রবীন্দ্রনাথের ‘ছেলেবেলা’ গ্রন্থ থেকে সংক্ষেপিত আকারে সংকলিত করতে গিয়ে তিন-চারটি অনুচ্ছেদ শুরু ও শেষের দিকে বাদ দেওয়ায় তা খাপছাড়া মনে হয়। বিশেষ করে তৃতীয় অনুচ্ছেদের পর একটি অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়ায় পঞ্চম অনুচ্ছেদের শুরুতে ধাক্কা খেতে হয়। ওই অনুচ্ছেদের শুরুটা হচ্ছে, ‘আমাদের এই মাদুর পাতা আসরে...।’ অথচ আগে কোথাও এমন আসরের বর্ণনা নেই; মূল লেখায় তা থাকলেও সংক্ষেপ করতে গিয়ে বাদ পড়েছে।
তথ্য নেই, সুত্র আছে: ভুগোল বইয়ের ১৫৩ পৃষ্ঠায় দেশে পাকা ও কাঁচা রাস্তার দৈর্ঘ্য-সম্পর্কিত তথ্য উল্লেখ করে তথ্যসুত্র হিসেবে সারণি ৮.০৩-এর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বইয়ে এ ধরনের সারণি পাওয়া যায়নি। একইভাবে রেলপথ-সম্পর্কিত বর্ণনায় সারণি ৮.০১ উল্লেখ করা হলেও বইয়ের কোথাও এর অস্তিত্ব নেই।
সংশোধনী: ‘ভুলে ভরা পাঠ্যবই’ শীর্ষক প্রথম প্রতিবেদনে গত সোমবার মীর মশাররফ হোসেনের একটি বইকে দুটি বই হিসেবে দেখানো হয়েছে। জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ও সাহিত্যিক শামসুজ্জামান খান বলেছেন, বিবি কুলসুম ও আমার জীবনীর জীবনী নামে যে দুটি বইয়ের কথা বলা হয়েছে, আসলে তা হবে একটি বইয়ের নাম−আমার জীবনীর জীবনী বিবি কুলসুম। স্ত্রী সম্পর্কে উচ্চ ধারণা দিতে তিনি বইটি লেখেন। এ ছাড়া ইসলামের জয় নামে লেখকের একটি বই আছে।
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে কয়েকজন ভাষা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকের সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তাঁদের ধন্যবাদ]
প্রথম আলো থেকে সংগ্রহীত
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




