somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সন্ধ্যা, একটি মেয়ে এবং আমি আর নাসিফ

৩০ শে মে, ২০১৩ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খুব বেশী দিন হয় নি, এইতো ৪/৫ দিন আগে গিয়েছিলাম মিরপুর-০১ এর একটা বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে। টাকা অবশ্য আমার দরকার ছিল না, এক ছোট ভাইয়ের জন্য। ছোট ভাইয়ের নাম ছিল নাসিফ। আমি আর নাসিফ বাসা থেকে হেটেই গেলাম বুথ এর সামনে। বুথ টা ছিল তিন টা রাস্তা যেখানে এসে মিলছে সেখানেই এবং বুথ এর সামনেই ছিল ফুটপাত। সাবাভিক ভাবেই অনেক মানুষের আসা যাওয়া সেখানে। আবার তখন ছিল সন্ধ্যা। বুথের সামনেই গিয়ে বুজতে পারলাম কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে কারণ খুব বেশী লম্বা লাইন না হলেও আমার সামনে মাত্র ২জন ছিল। তারা বুথের যেখানে গার্ড বসে সেখানে অপেক্ষা করতেছিল। আমি আর নাসিফ বুথের বাহিরে ফুট পাত এর উপরে দাড়িয়ে কথা বলছি আর রাস্তার মানুষ দেখছি। এখানে খুব বেশী আলো নেই,আবার বেশ অন্ধকার ও না। আমি হটাত লক্ষ করলাম আমাদের পাশেই ঠিক আমার বিপরীতে আমার দিকে মুখ করে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে। বয়স বেশী হলে ১৬ হবে। আমাদের থেকে মেয়ে তার দূরত্ব ছিল তিন থেকে চার হাত। আমি দেখেই বুজলাম হয়ত নতুন ঢাকা আসছে এবং এখানে দাড়িয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছে। এইসব ভাবছি আর নাসিফের সাথে কথা বলছি। হটাত লক্ষ করলাম একটা ছেলে আসল মেয়েটার সামনে, জিন্স আর শার্ট পরা ছেলে টিকে খারাপ লাগলো না, ভালই মনে হল। ছেলেটি এসেই মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করল, “কি যাবা?”। মেয়েটি একটু ইত স্তত হয়ে কিছু না বলে ২/১ হাত পিছিয়ে গিয়ে অন্য দিকে মুখ পিরিয়ে নিয়ে দাড়িয়ে থাকল। আমরাও কি হচ্ছে সেটা দেখার জন্য এক কদম সামনে পা বাড়ালাম। এইবার দেখলাম ছেলেটি মেয়েটির খুব কাছে গিয়ে বলল, “কালকে থেকে আজকে আর বেশী দিব, চল রিকশায় করে যাই”। মেয়েটি এবার খুব বিব্রত হল। ছেলেটা ৫/৬ সেকেন্ড পরে আবার বলে উঠল, “আজকে শুধু মাত্র আমি,বাসায় আর কেউ নাই, তোমার ওইদিন এর মত বেশী কষ্ট ও হবে না”। এই কথা শুনা মাত্র আমি লক্ষ করলাম মেয়েটির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। এটা দেখে আমার আর নাসিফের মাথা ঠিক থাকল না। নাসিফ যেহেতু এলাকার ছেলে তাই সাহস করে এগিয়ে গেলাম দুই জন এই। আমরা আসছি দেখে ছেলেটাও দ্রুত ভিড়ের মাজে লুকিয়ে যেতে থাকল। আমরা ছেলেটার দিকে গুরত্ত না দিয়ে মেয়ে টার সাথে কথা বলতে আগ্রহী হলাম। কথা বলে জানতে পারলাম মেয়ে টা পাশে একটা গার্মেন্টস এ কাজ করে। মাত্র ১৫দিন হল সে ঢাকায় আসছে। সে তার সহকর্মী আরেক মেয়ের জন্য অপেক্ষা করেছিল। তার সহকর্মী ঐ মেয়ে টাই তাকে এখানে অপেক্ষা করতে বলছিল। পরে আমি জিজ্ঞাসা করলাম তোমার সাথে মোবাইল আছে কিনা? সে বলল তার কাছে মোবাইল নাই এবং সে তার সহকর্মী ঐ মেয়ে তার নাম্বার ও জানে না। আমি বললাম আপনারা দুই জন যেহেতু একত্রে কাজ করেন তাহলে দুই জন এই একত্রে বের হতে পারতেন। মেয়েটা জানাল তারা দুইজন এই একত্রে বের হয়েছিল কিন্তু তার সহকর্মী মেয়েটি কাজের জায়গায় মোবাইল রেখে আসছিল তাই সে আবার কারখানায় উঠল মোবাইল আনতে এবং তাকে এখানে অপেক্ষা করতে বলছিল। মেয়েটাকে বাসায় যাওয়ার জন্য বলব নাকি তাকে আরও অপেক্ষা করতে বলব এটা ভাবছিলাম। ঠিক এই সময়ে একটা অটো ডেকে মেয়েটাকে উঠিয়ে দিলো আর আমি ভাড়া দিয়ে দিলাম। তখনও দেখলাম মেয়েটি অবিরাম কাঁদছে। মেয়েটি আমাদের সাথে কথা বলার সময় একবার ও চোখ উপরে তুলেনি।

ঠিক তখনি আমার চোখের সামনে আমার একমাত্র বোনের চেহারা টা ভেসে উঠল। ভাবলাম মেয়েটি আমার বোন ও হতে পারতো।

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×