somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোবাইলে মিস কল আসার কহিনী।

০৫ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নতুন নতুন ফোন কিনেছি। সে কি ভাব। পকেটে রাখলে নেটওর্য়াক মিস করবে- এই অজুহাতে মোবাইল রাখতাম হাতে। রিকশাস উঠলে আগে উঠত মোবাইল পর আমি। আগে হাতের ইশারায় ডাকতাম- এই খালি শনির আখড়া যাইবা? আর এখন মোবাইলের এন্টেনা রিকশার দিকে ধরে বলি- যাইব নাকি? রিকশাওয়ালাও কেমন জানি সরু চোখে তাকাতো। মনে মনে গালাগালি করত কিনা কে জানে! ভাব ছুটতে বেশী সময় লাগল না। কথা বলার আগেই পকেট কালি। কতা বললেই বিল। কথা কম বিল কম কথা বেশী তো বিলও বেশী। সম্ভবত এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে মিসকলের উৎপত্তি।

এক রোদজ্বল বৃষ্টির দিনে সেলুর সঙ্গে চুক্তি করে ফেললাম। একবার মিস কল দেয়ার পরও যদি মিস কল দেয় তাহলে বুঝতে হবে ওর বাপ (যদি সাক্ষাৎ আজরাইল) বাসায় নেই। দু’বার মিস কল দেয়ার অর্থ বাসায় কেউ নেই- তুমি চলে এসো। সেখানেও এক সমস্যা, সাধারণত ও বাসার পেছনে গিয়ে ওর জানালায় দুটো টোকা দিয়ে মিস কল দেই। এতেই কাজ হয়ে যায়। আজ হয়েছে অন্য সমস্যা। টোকা দেয়ার পর ওর বাবাকে দেখলাম হম্বিতম্বি বেরিয়ে এল। আমি ভুল জানালায় মিস কল দিয়েছি। অনেক কষ্টে এবারের মতো বেঁচেছি বাপ। ভাগ্য ভাল কাপড় চোপড় নষ্ট করিনি। প্রচন্ড রকম মন খারাপ নিয়ে তালপাকা ভাদুরে দুপুরে বিছানায় গড়াগড়ি করছি। ভাবছি দেবদাস হব না শুভাদাস হব (দেবদাসের আধুনিক সংস্করণ, সবকিছুই দেবদাসের মতো কিন্তু মদ খেয়ে মরতে রাজি নয়)।

এরপর শুরু হলো মিস কলের যন্ত্রনা, ফোনে কে জানি বারবার মিসকল দিচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে মোবাইলটার দিকে তাকাই। রিং ব্যাক করব কি না ভাবছি। সাধারণত আমি রিং ব্যাক করতাম না। এ যাবৎ যতবার রিং ব্যাক করেছি তার সুফল কোনটাই ভাল হয়নি। এবার রিং ব্যাক করার পর ওপাশ থেকে জনৈক ভদ্রমহিলা (অবশ্য ভদ্রমহিলা বলা ঠিক হচ্ছে কিনা বুঝতে পারছি না। উনার কথাবার্তা সেন্সরবোর্ডে পাঠানো উচিৎ) বলল, ফ্রড তাই তো বলি তোর ফোনের নাম্বার আমার মোবাইলে এল কেমন করে? আমার মেয়ে আলতা বানুর সাথে ফোনে কথা বলো? তাই এতো বিল আসে। দাড়া তোরে সামনে পাই হারামজাদা… তোর চামড়া দিয়ে আমি ডুগডুগি বানাব। ইডিয়েট…রাস্কেল…
আমি মোবাইল টপ করে বন্ধ করলাম। রিং ব্যাক করে একি বিপদে পড়লাম রে বাবা। ভদ্রমহিলা থুক্কু অভদ্র মহিলা দেখি সব ভাষাতেই গালির ওপর ডক্টরেট করে ফেলেছে। ফোনটা বন্ধ করে কান ধরে তিনবার ওঠাবসা করলাম। পশ্চিম দিক হয়ে কিরা কাটলাম। আর কখনও কেউ মিসকল দিলে ব্যাক করব না। সমস্যা তাতেও… পরদিন একের পর এক মিস কল আসছে তো আসছেই। আমি কল ব্যাক করছি না। ঘন্টা খানেক পর বস কল করে বলল, এতবার মিসকল দিচ্ছি ফোন ব্যাক করেন না কেন? আমি বললাম- আমার মোবাইলে টাকা ছিল না। তিনি আবার বললেন, এতো কিপ্টু কবে থেকে হয়েছেন? আচ্ছা আপনার দেশের বাড়ী কোথায়? আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, স্যার আমার দেশের বাড়ী …. কিন্তু বিয়ে করব বগুড়ায়। বস আমার হেসে বললেন, মোক্ষম জায়গায়ই বিয়ে করবেন দেখছি।

কথা বেশী বলে ফেলেছি এতক্ষনে বিরক্তি আপনাদের চরমে বুঝতে পারছি দয়া করে আরেকটা শুনুন, মিনিমাম ২০বার (মিস কল প্রেরণকারীর ধৈর্য দেখে আমি বিস্মিত) মিসকল আসার পর কল ব্যাক করলাম। বললাম, হ্যালো কে?
= আমি লাকি।
- এ যাবৎ কতজনকে দিয়েছেন ফাকি?
= তুমি তের নাম্বারে পড়েছ। শুনে আমার রক্ত চির চির করে মাথায় উঠতে থাকে। কতবড় সাহস হুট করে তুমি বলে? এ মেয়ের তো দেখি লাইসেন্স নাই। কখন না জানি তুমি থেকে তুই বলে ফেলে! আমি ক্রোধান্বিত হয়ে বলি, তা কি ব্যাপার এত মিস কল দিচ্ছিলেন কেন?
= ও কথা পরে আগে বলো দাঁত মেঝেছো কিনা?
- কেন বলুন তো?
= কারন খুব গন্ধ আসছে। উহ! কি দূর্গন্ধ। পুরো মোবাইলটা দূর্গন্ধে ভরে গেছে।
- চুপ থাক। এক চড় মারব যে তোর আলজিহ্বা লাল হয়ে যাবে। ওপাশ থেকে খিল খিল করে সম্মিলিত চার-পাঁচ জনের হাসির শব্দ শুনতে পেলাম। আমি কপ করে মোবাইলের লাইন কেটে দেই। মিনিটে ৭ টাকা নষ্ট করে বদ মেয়েদের খিল খিল শব্দ শোনার কোন মানে হয় না। বজ্জাদের দল আমাকে বোকা বানিয়েছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×