পত্রিকায় প্রায়ই চোখে পড়ে এ ধরনের খবর। কখনও পড়ি, পড়ে মন খারাপ হয়, কখনও বা এড়িয়ে যাই। কিন্তু আমার চেনা জানা কেউ এ ধরনের কিছু করে বসবে তা কল্পনাতেও ভাবিনি।
মাহীর সাথে আমার পরিচয় থার্ড ইয়ারে উঠে। এর আগেও ওকে দেখেছি ডিপার্টমেন্টে, অন্য সেকশনে থাকাতে কখনো বেশি কথা হয়নি, হাই-হ্যালো টাইপ কথাবার্তার ভিতরই সীমাবদ্ধ ছিল তা। চমৎকার ফুটবল খেলতো। ডিপার্টমেন্টের মূল দলের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের জায়গাটা নিজের করে নিয়েছিল। কথা বলত খুবই কম। সব সময়ই ওর ভেতর একটা তাড়াহুড়া ভাব ছিল। সেইসাথে খানিকটা বিষন্নতাও হয়ত ছিল। ব্যাচমেট হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সাথে আড্ডা দিত কমই। অ্যাডভান্স কোর্স করার কারনে সিনিয়রদের সাথেই বেশি দেখা যেত। পাশ করে বের হয়ে যাবার পর ওর সাথে আর যোগাযোগ ছিল না।
মিশু যখন জানাল মাহী বিষ খেয়েছে, আমার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না ব্যাপারটা। কি আশ্চর্য !! বিষ খেতে যাবে কেন?? ডি এম সি এইচ এ মাহীকে ভর্তি করানো হল। অবস্হা ভাল না। ডাক্তারাও আশার বাণী শুনাতে পারছিলেন না। বিষটা নাকি খুবই উচ্চ মাত্রার। অপেক্ষা না করে কিছু বলা যাবে না। পরের দুদিন কাটলো খুব টেনশন নিয়ে। দুদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবস্হার উন্নতি হতে লাগল।
বিষ খাওয়ার আগে মাহী একটা চিঠিতে লিখে; তার ভালবাসার মানুষকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার আয়োজন করায় সে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। সুস্হ হওয়ার পর একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম এখন কেমন লাগছে। মাহীর সহজ সরল সীকারোক্তি; জীবনটাকে আরো বর্ণিল মনে হচ্ছে। বেঁচে থাকাটাই এখন তার কাছে আনন্দের। সে অনুতপ্ত।
মাহী সম্প্রতি বিয়ে করেছে। একদিন যাকে না পাওয়ার হতাশায় এই পৃথিবী হতে বিদায় নিতে চেয়েছিল, তার সাথেই হয়েছে শুভ পরিণয়। মাহী এবং তার ভালবাসার মানুষটির জন্য রইল শুভ কামনা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




