somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Cinema: BLUE IS THE WARMEST COLOR

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিউনিসিয়ার বংশোদ্ভূত নির্মাতা Abdellatif Kechiche চলচ্চিত্রে পদার্পন খুব বেশি দিনের নয়। তার চলচ্চিত্র ‘নীল একটি আরামদায়ক রঙ’ চলচ্চিত্রটির নাম যেদিন প্রথম পড়লাম সেদিন তেমন গুরুত্ব দেইনি। তার কোন সিনেমাও দেখা নেই তখন পর্যন্ত। নামটা যদিও অবচেতন মনের সুতোয় গিট্টু দিয়ে রেখেছিল। একদিন খবর আসে চলচ্চিত্রটি ‘পাম দোর’ পুরুস্কার পেয়েছে যা কিনা কান চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বোচ্চ সম্নান জিতে নিয়েছিল।



প্রেম ভালোবাসার সিনেমা। খুবই সাধারণ প্রেম কাহিনী। কিন্তু, তবুও কেন এত প্রশংসা এই সিনেমাতে? ব্যাপার তো আছেই। সমকামি প্রেম কাহিনীর উপর গড়া একটি প্লট। মুলত, ‘সমকামী’ শব্দটি এখানে উল্লেখ করার কোন প্রশ্নই আসে না। কারন এই চলচ্চিত্রটি দেখার পর ব্যাপারটা ‘সমকামী’ নামক কোন শব্দে আটকে থাকেনি। একজন মানুষ, অপর একজন মানুষকে ভালবাসবে এটাই স্বাভাবিক। ভালোবাসার তীব্রতা কতটা প্রখর সেটা সিনেমাতে প্রকাশ করাটা খুবই জটিল প্রক্রিয়া। মানুষের আবেগকে ভিজ্যুয়াল দেয়ার কাজটা অত্যন্ত কঠিন একটি চেষ্টা। আর সেই চেষ্টা সমকামিদের দিয়ে দেখানো প্রায় টুথপেস্ট বের করে- সেটা উল্টা ঢোকানোর সমান একটি অপচেস্টাই আমি বলব। সেই দুঃসাহস নিয়েই আব্দুল লাতিফ মাঠে নেমেছিলেন।

এডেল আর ইমার প্রেমের গল্প সমাজের সাধারন গল্পের মতনি। এই প্রেমে হিংসা, হাঁসি-কান্না, ব্যার্থতা, প্রতারনা, যৌনতা, হতাশা আবার সততা সব মসলাই আছে। একজন মানুষ কত সুন্দর করে হাসে প্রেমে পরলে সেটা এডেলের হাঁসি না দেখলে হয়ত জানা হত না। হয়ত আমরাও প্রেমে পড়লে এডেলের মতই হাঁসি। এডেলের চোখ দিয়েই দর্শককে দেখানো হয় এডেলের দুনিয়া। এডেলের প্রথম ভালোবাসার কাহিনী। এখানে তার মুগ্ধতা, সরলতা এবং মৌনতা স্পষ্ট হয়েছে। ‘প্রথম ভালোবাসা’ আসলেই কতটা নিষ্পাপ। পৃথিবীর প্রথম দিন থেকে অদ্যাবধি কত মানুষের ‘প্রথম ভালোবাসা’।



এই সিনেমার চিত্রনাট্য নির্মাতা অনেকাংশেই ইম্প্রোভাইজ করা হয়েছিল। এডেল মাত্র একবারই সুযোগ পায় চিত্রনাট্য পড়ার। আব্দুল লাতিফ কেশিস প্রচুর সময় নেন সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে। তিনি চিত্রনাট্যে হুবহু না দেখিয়ে অভিনয়শিল্পীদের মাঝে থাকা অটো ইমোশনের ডিটেলই পছন্দ করেন। এই সিনেমাতে এডেলের অভিনয় আরও রিয়েলিস্টিক করার জন্য তাকে সারাদিন মনিটর করা হয়েছে। এমনকি এডেল যখন গোছল করে বাঁ ঘুমায় তখনো তাকে মনিটর করা হয়েছে। এই সিনেমার অনেক দৃশ্যে এডেল সত্যি-সত্যি ঘুমায়। একটা যৌন দৃশ্য নিতে নির্মাতা দশ দিন সময় লাগিয়েছেন। দশ দিন যৌন কর্ম দৃশ্যায়নের প্রাকটিসের পর নির্মাতা বলেছেন ‘ওকে’। একটা ছোট্ট হাটার দৃশ্যে নিতে একশটি টেক নিতে হয়েছিল। লং টেক যে এক ধরনের রিয়েলিটি তৈরী করে মোটামুটি তা আবার প্রমানিত। বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার Yasujiro Ozu এর দ্বারা প্রভাবিত এই নির্মাতা। তিনি বলতে গেলে একজন হার্ডকোর নির্মাতা হিসেবেই প্রমানিত হলেন।



এই সিনেমাটি খুব দারুণ উপভোগ করেছি বললে ভুল হবে। এই সিনেমাটা দেখে মনে হয়েছে, আমিও সিনেমার প্লটের সাথে এগিয়ে যাচ্ছি। বাস্তবিক ছোয়া আছে চলচ্চিত্রে। মনে-মনে কত কিছু ভাবিয়েছিল দেখার সময়। অসাধারণ এক প্রেম কাব্যের ভিজ্যুয়াল রুপ দেয়া। এই সিনেমার সবচেয়ে বড় যেই দিকটা আমি বলব তা হল, এই সিনেমা সমকামীদের নিয়ে হলেও মনে হবে এটা আমাদেরই কারও একজনের সাধারণ গল্প। অর্থাৎ, সমকামী শব্দটি দর্শকের মনেই পরবে না। যৌন দৃশ্যগুলোর মধ্যেও কিছু লুকিয়ে রাখা এলিমেন্ট দেয়া আছে যা হয়ত মানুষের অন্ধকার দিকগুলোকে দর্শকদের খুব কাছে নিয়ে এসে আরও গভীরভাবে ভাবাতে সক্ষম।

জানা রাখা ভালোঃ কান উৎসবের প্রথম কোন চলচ্চিত্র যেখানে নির্মাতার সাথে দুজন প্রটাগনিষ্টকেও ‘পাম দোর’ পুরুস্কার দেয়া হয়। যিনি এই উৎসবের চিরাচরিত নিয়ম ভাংগার এই উদ্দ্যেগ নিয়েছিলেন সেই ব্যাক্তির নাম ‘স্টিভেন স্পিলবার্গ ’।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×