বেশ কয়েক মাস যাবত বিচার বিভাগ নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে।তাই ভাবলাম তা নিয়া কিছু জানার চেষ্টা করি। আমার এক আত্মীয় আইঞ্জীবির সাথে কথা বলে বেশ মজার কিছু তথ্য পেলাম।
প্রথমটাই শেয়ার করে নেই। আপনাদের হয়ত অনেকের মনে আছে এরশাদের আমলে একবার হাইকোর্ট বিভক্ত করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। তখন আইঞ্জীবিরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আর সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দেয়। আমি আবার বেশি তথ্যকথা বুঝি না।আমার সহজ কথা যেটাতে আমার লাভ হয় আমি সেটাই চাই। আমার বাড়ী পঞ্চগড়। আমার নামে কোন মামলা হলে আমাকে সেই সুদুর ঢাকায় যেতে হবে। এটা খুবই অমানবিক।তার বদলে যদি প্রতি বিভাগে হাইকোর্ট থাকত তাহ্লে মানুষের কষ্ট অনেক কমে যেত। যাই হোক আমি এই ব্যাপারে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি হেসে দিলেন। আর ভেতরের কথাটা বললেন। এই হাইকোর্ট বিভক্কতের বিষইয়ে সব আইঞ্জীবিদের একজোত হয়াকে তারা এক বিশাল বিজয় বলে মনে করেন। আসল ঘটনা কিন্তু অন্য। হাইকোর্ট যদি ভাগ হয়ে যায় তাহলে দেশের সব খান থেকে মানুষ ঢাকায় আসবে না। ফলে তাদের ইঙ্কাম কমে যাবে ১/৩। তাদের যেকোন এক জায়গায় বসতে হবে। এখানে এরশাদের বিরুদ্ধে যতটা না ছিল তারচেয়ে ছিল নিজের পকেট ভারির দিকে। দেশের হাইকোর্ট বিভক্ত করা কোন ব্যাপার না। যেহেতু এটা সংবিধানের মুল অংশ ।তাই এর পরিবর্তনের জন্য জঙ্গনের ভোট নিতে হবে। সেখানে হায়া জয়যুক্ত হলে হাইকোর্ট এমনিতেই ভাগ হয়ে যাবে। কিন্তু প্রতিটি দলে এইরকম পকেট ভারী আইঞ্জীবি থাকার কারনে কী এই উদ্দ্যোগ নেয়নি। মোট কথা হলো আমার মতো গরিব মানুষের কথা কী ভাববে না।এই ব্যাপারে তাদের মত হল-যে এই ক্ষেত্রে মামলার রায় ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে। এই কথাটা পুরাটাই ভুল। কারন যেকোন বিচারের রায় নির্ভর করে বিচারকের দৃষ্টির উপর। একই মামলায় এক বিচারক এক রায় দিয়েছে আবার অন্য বিচারক অন্য রায় দিয়েছে তার ভুরি ভুরিপ্রমান আছে। যদি পাকিস্থানের কথা ধরি—সেখানে একবার সুপ্রিম কোর্টের রায় ছিল—যে কোন ক্যু যদি সফল হয় তবে তা সঠিক থাকবে তার কোন বিচারের দরকার নাই। এই মতামত প্রায় দশ বছর বিদ্যমান ছিল। পরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অন্য ধরনের মতামত দেয়। যা এখন পর্যন্ত বল্বত আছে। হাইকোর্টে বিভিন্ন দেশের রায়ের উপরই রায় প্রদান করা হয়।তার মানে এই দারাল যে মামলার রায় বিচারকের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশিল। তাই হাইকোর্ট ভাগ হয়ে গেলে বিচার ভিন্ন হবে –এই ভয়টা অমুলক ।কারন তা সব সময় হতে পারে।তাই যদি কোন দল এই বিষয়ে চিন্তা করেন তাহলে দেশের মানুষের অনেক উপকার হবে।
দ্বিতীয় যেটা আমাকে সব সময় ব্যাথ্যা দেয়—তা হচ্ছে আমরা মুল বিষয়টা না দেখে কাগজ কল্ম নিয়া টানাটানি করি। একটু বুঝিয়ে বলি। আমরা প্রায় সবাই জানি দেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদ করাপ্টেড। এর জন্য তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে মামলা হয়। ধরা যাক ১০০টি মামলার মধ্যে ২০ টি উদ্দেশ্যমুলক। বাকি ৮০টি তো সঠিক। কিন্তু এই সব মামলাগুলো বাতিল হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র প্রসিজিওর ভুল ছিল বলে। তার মানে দাড়াল এই যে এখানে মামলার যে মুল কারন “দুর্নীতি” তা নগন্য হয়ে গেছে। দেশের অনেক বড় বড় আইঞ্জীবিরা মাঝে মাঝে বেশ বুলি ছাড়ে। তার মধ্যে এক স্বনামধ্যন্য ছিল—তিনি সকলের মামলা পরিচালনা করেছেন এই ব্যাপারে। সবাকে বাচানোর পরে তিনি বলেন আমি কিন্তু দুর্নিতি দমনের বিপক্ষে না। কেউ যদি জানেই যে সে দুর্নিতিবাজ তাহলে তাকে মামলার মারপ্যাচ দিয়ে বাচানো কতটা যুক্তিযুক্ত তা আমি কখনো বুঝলাম না।
বিচার কাজ একটি মহান পেশা। সেখানে মানুষের justice পাবার কথা। কিন্তু তার বদলে যদি কথার মারপ্যেচে কাজ সম্পাদন করা হয় তাহলে আমার মত সাধারন মানুষের বিচার পাওয়া হয়ত হবে কিন্তু তা justice হবে কিনা জানি না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




