somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ নন্দিনী কিংবা বন্দিনী

০৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১. সুখে থেক ও আমার নন্দিনী, সুখে থেক প্রাসাদের বন্দিনী।
যেন রেখ ও প্রেম ত মরেনি, যেন রেখ অন্যের ঘরণী।


তন্ময় হয়ে এ গানটি গাচ্ছিল ইমরান। এ গানের মাঝে যে কি খুজে পায় ইমরান, তা বোধ করি নিজেও জানে না। তবে গান টি গাবার সময় তার চোখ মুখের যে করুণ আভা তা আমাকে বিস্মিত করে বৈকি। এত করুণ কণ্ঠে বোধ করি কোন প্রফেশনাল গায়করাও গাইতে পারবে না। মানুষের মনে কত কষ্ট থাকতে পারে তার কি কোন হিসাব আছে? মনে হয় না।


২. এলাকার কিছু ছেলে থাকে, যাদের আক্ষরিক অর্থেই সর্ব গুনে গুণান্বিত। তারা সকল ক্ষেত্রেই এক নম্বর। কি পড়াশোনা, কি খেলাধুলা কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। ইমরান ছিল অনেকটা সে ধরণের। ক্লাস এ কবে সেকেন্ড হয়েছিল তা হয়ত নিজেও ভুলে গিয়েছে। আমাদের মত ফাকিবাজদের জন্য সে অবশ্য দেবদূত হয় আবর্তিত হত বারবার। হোমওয়ার্ক এর সমস্যা গুল আমাদের ব্রেনওয়েভের অনেক উপর দিয়ে যেত। তাই ইমরানের খাতা কপি পেস্ট করে আমরা বেতের হাত থেকে বাঁচতাম। স্কুলের ফাইনাল স্পোর্ট কম্পিটিশনের জন্য সে ছিল অটোমেটিক চয়েস। কখনই সে হতাশ করত না। কিছু প্রাইস সে প্রতি বছর জিততো। চমৎকার কবিতা আবৃত্তি করত। অস্বীকার করে লাভ নেই, তাকে আমরা হয়ত একটু হলেও হিংসে করতাম।কেন একজন এত বেশি সাফল্য পাবে? কেও কি আড়ালে সেদিন মুচকি হেসেছিল?


৩. প্রেমের ফাঁদ পাতা আছে সর্বত্রই। কে কখন যে তার ফাঁদে পা দেয়...। হা, ফাঁদ বলি আর যাই বলি না কেন, ইমরান প্রেমে পড়লো, বেশ ভাল ভাবেই পড়লো।

নন্দিনী নামক মেয়েটি প্রথম যেদিন বদলি হয়ে এ স্কুলে ভর্তি হল সেদিন আমদের বিস্মিত হবার পালা। কোন মেয়ে এত সুন্দর হতে পারে! আমদের সবার হার্ট বিট যেন স্লো হয়ে গিয়েছিল, অনেকটা ফিল্মি স্টাইল এ। সব কিছু যেন ধিরে চলছে। আমরা সবাই যেন একটি ঘোর এর মধ্যে চলে গিয়েছিলাম। অতি রোমান্টিক দুই একজন ত কবিতাও লিখে ফেলল। খোঁজ খবর করে জানা গেল যে নন্দিনীর পিতা কেরানি গোছের একজন সরকারি কর্মচারী। সম্প্রতি বদলি হয়ে এসেছে। আমরাও অতি উৎসাহে কিঞ্চিত মাঞ্জা মারিয়া নন্দিনীর বাসার সামনে ঘুর ঘুর করতে শুরু করলাম। যে আগে দখল করতে পারে। কারণ বেরসিক স্কুলে সামার ভেকেশন শুরু হয়ে গিয়েছে।
স্কুল খুললে আমাদের মাঝে বিরাট চাঞ্চল্য দেখা দেয়। সবাই নন্দিনীর মন পাবার জন্য যথা সাধ্য চেষ্টা করল। আয়রন করা শার্ট পরল কেও, চুলে জেল দিয়ে শজারু(স্পাইক) করল, কেওবা সিগারেট ফুকে ইম্প্রেস করতে চাইল। আর তা দেখে স্কুল এর বাকি মেয়েরা হিংসায় জ্বলতে লাগল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হল না। ঢাকায় বেড়ে উঠা নন্দিনী আর যাই হোক এসব দেখে কারও প্রেমে পরবে না, একথা বুঝতে আমাদের অনেক সময় লেগেছিল।
স্রষ্টা নাকি রুপ আর মেধা এক সাথে খুব কম মানুষকেই দেয়। নন্দিনী যতই রুপসি হোক না কেন তার ব্রেনটা খুব সম্ভবত হামিং বার্ড এর মত ছিল। কোন মতে টেনে টুনে পাশ করত সে। অবশ্য যতক্ষণ সময় সে ড্রেসিং টেবিল কে দিত, তার অর্ধেকও রিডিং টেবিল কে দিত না। সাজুগুজুই ছিল তার ধ্যান কিংবা সাধনা।

নন্দিনীর বাবা খুব ভাল করে বুঝেছিল যে তার কন্যা মেট্রিকে ফেল করার উজ্জ্বল সম্ভাবনা বিরাজ করছে। কারণ এ সুন্দরী কখনই অঙ্ক ও ইংরেজিতে পাশ করতা না। এবং এ নিয়ে তার মধ্যে কোন খেদও ছিল না।

তাহলে উপায়? টিওটর রাখা। এবং যথারীতি ফাস্ট চয়েস ইমরান। কিন্তু ইমরান তো অনেকটা নারী সঙ্গ বিহীন জীবন যাপন করে। মেয়েদের কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকে। আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে ইমরান রাজি হবে না। কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে ইমরান রাজি হয়ে যায়। এবং প্রস্তাব পাবার পরদিন থেকেই পড়াতে শুরু করে দেয়। অনেক সমালোচক নন্দিনীর প্রেমে ইমরান হাবুডুবু খাচ্ছে বলে প্রচার করে। বলা বাহুল্য সেগুল ধোপে টিকে না। তবে সন্দেহ কিন্তু থেকেই যায়। হাজার হলেও মানুষ ত............


৪. ইমরানকে আজকাল প্রায়ই অন্যমনস্ক দেখি। কি যেন ভাবে? কেমন যেন একটা অস্থির ভাব। পড়াশুনাতেও কি একটু অমনোযোগী? না, তা কি করে হয়?

নানা কথা বাতাসে ভেসে বেড়াতে থাকে। ইমরান ও নন্দিনীর নাকি কঠিন প্রেম চলছে। তাদের নাকি নদীর ধারে ঘুরতে দেখা গেছে। হাতে হাত রাখা ছিল। এ ধরণের নানা কথা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। কেও বিশ্বাস করে, কেও করে না। কিন্তু সবার মনে সন্দেহ থেকেই যায়। যে তালিকাতে আমার নামও আছে।

আর হা, বলতে ভুলে গেছি। ইমারানের সাথে আমার বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল। তবে সে যে তার সব কথা বলার জন্য আমাকে বেছে নিবে, তা আমি কল্পনাও করিনি। সেদিন যখন নদীর পারে আমাকে নিয়ে গেল তখনও বুঝতে পারিনি ইমরান আমাকে সব খুলে বলবে।

ইমরানের সব কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পরলাম। সে নন্দিনীকে তার মনের কথা বলেছে। এবং নন্দিনী তাকে সম্মতি জানিয়েছে। অর্থাৎ ইমরান এবং নন্দিনী ইস ইন লাভ। ইমরানের কথা শুনে আমি বুঝতে পারলাম সে নন্দিনীকে খুব বেশি ভালবেসে ফেলেছে। তাকে ছাড়া তার আর এক মুহূর্তও কাটতে চায় না। তাকে তার ক্যারিয়ারের কথা বললে সে বলল নন্দিনীই নাকি তার ক্যারিয়ার!
তাদের এ প্রেমের কথা গোপন থাকে না। ছড়াতে থাকে কালবৈশাখীর গতিতে।

৫. কে যেন বলেছিল, “মেয়েরা জিনগত ভাবে কিছুটা স্বার্থপর”। বোধহয় মিথ্যে বলেনি”।
নন্দিনীর পিতা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সেখানকার এক ঠিকাদার নন্দিনীকে পছন্দ করে ফেলে।নাম জব্বার, বয়স ৩৫, গায়ের রঙ কাল, ওজন ৮৫ কেজি। ম্যাট্রিকে বেশি না, মাত্র তিনবার ফেল। কিন্তু ফেল্টুস ভাই দুই নম্বরি করে কোটি কোটি টাঁকা কামিয়েছে। শহরে বাজারের মধ্যে বাংলো টাইপ এক বাড়ি বানিয়েছে। তাইতো তার অর্ধেক বয়সের এক মেয়েকেও বিয়ের প্রস্তাব দিতে তার কোন সমস্যা হয়নি। আমারা শুনে তো হেসেই খুন। জব্বার নাকি নন্দিনীকে বিয়ে করতে চায়। সালার ঘরে কি আয়না নেই, নিজের চেহারা দেখে না।

কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার। বিয়ের ডেটও নাকি ঠিক হয়ে গেছে এবং সেটা নন্দিনীর স্বেচ্ছায়!!!!!!

আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ ততদিনে তাদের প্রেম অনেকটা কিংবদন্তীর মর্যাদা পেয়েছে। আর সেই নন্দিনী কিনা............

ইমরানকে সব জানালে সে নন্দিনীর সাথে দেখা করতে চায়। কিন্তু সুন্দরীশ্রেষ্ঠা তার সাথে দেখা করতে অপরাগতা প্রকাশ করে। বিয়ের আগে নাকি পরপুরুষের সাথে দেখা করতে মানা!!
অনেক কষ্টে তাকে রাজি করান হয়। কিন্তু শর্ত জুড়ে দেয়। ইমারানকে কে দেখা করতে হবে একা।
ইমরান কে কোনদিনও এত বিধ্বস্ত হতে দেখিনি। ইমরান যেন জড় পাথর হয়ে গিয়েছিল। আমরা হাজার চেষ্টা করেও জানতে পারিনি যে কি কথা হয়েছিল নন্দিনীর সাথে। ইমরান যেন একটা মূর্তি হয়ে গিয়েছিল। আর মূর্তি কি কথা বলে?
এদিকে নন্দিনীর বিয়ের দিন এসে যায়। আমাদের মাথায় রক্ত উঠে যায়। ছাড়ব না ওই ডাইনিকে। কঠিন প্রতিশোধ নেব

দরকার হলে উঠিয়ে আনব, বিয়ে বাড়িতে আগুন দেব, জব্বার হারামজাদার হাত পা ভেঙ্গে দিব।
প্লান ফাইনাল হয়ে যায়। ওই অভিনেত্রীকে উঠিয়ে আনা হবে। তারপর জোর করে ইমরানের সাথে বিয়ে দিব। তারপর যা হবার হবে। দরকার হলে জেল খাটবো।
কিন্তু গত দুই দিন কোন কথা না বলা ইমরান যেন গর্জে উঠে, “তোরা কেও কিছুই করবি না”। ইমরানের কণ্ঠে কি ছিল জানি না, তবে আমাদের কারও তার সামনে কথা বলার সাহস হয়নি সেদিন।
নন্দিনীর বিয়ে হয়ে যায়।

৬. সময় বয়ে যায়, সে কি কার জন্য বসে থাকে?
১২ বছর আগে এই দিনে নন্দিনীর বিয়ে হয়েছিল। যদি টাঁকা পয়সা, বাড়ী গাড়ি, সোনা দানা সুখের মাপকাঠি হয় তাহলে নন্দিনী সুখি। কিন্তু সত্যিই কি সুখি?
তাহলে এই ১২ বছরে মা না হতে পারা, স্বামীর পরকীয়া, সাংসারিক দ্বন্দ্ব, সংসার ভাঙ্গনের সুরকে কোন মাপকাঠীতে মাপবো আমরা?

ইমরান পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছিল। যে জীবনের মায়া ছেড়ে দিয়েছে তার কাছে পড়াশোনা ত নস্যি। শুধু বেচে থাকতে হয় তার জন্য বেচে থাকা। আস্তে আস্তে সব বন্ধুরা তাকে ছেড়ে দেয়। কিংবা এড়িয়ে চলে।কিন্তু আমি কেন পারি না? ইমরানকে লোকে পাগল বলে কেন?
প্রতিবার বাড়িতে এলে আমি তাকে খুজে বের করি অথাবা খোজার চেষ্টা করি। সব সময় পাওয়া যায় না। পেলে তাকে পাওয়া যায় নদীর ধারে.........যে নদীর ধারে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল কারও সাথে।
ওকে সময় দেই বলে অনেকে বাকা চোখে দেখে আমাকে। social status মেনটেইন করে চলতে বলে? হায়রে social status. ইমরানের জীবন ঠিক মত চললে আমারা সবাই তার নাম বেঁচে পেট চালাতে পারতাম।


৬. নদীর ধারে আমরা দুই জন বসেছিলাম। অদ্ভুত ব্যাপার এখান থেকে নন্দিনীর প্রাসাদের মত বাড়িটি খুব ভাল ভাবে দেখা যায়। খুব করুণ সুরে ইমরান গাইছিলঃ
সুখে থেক ও আমার নন্দিনী, সুখে থেক প্রাসাদের বন্দিনী।
যেন রেখ প্রেম ত মরেনি, যেন রেখ অন্যের ঘরণী।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:১২
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×