somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুলতেকিনের হুমায়‚ন তো ২০০৩ সালেই মারা গেছেন !

২৬ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুয়ামূন আহমেদ মারা গেছেন। আসলে একজন বড় মাপের লেখকের তো কোন মৃত্যু নেই আমাদের এই প্রিয় লেখকেরও তাই মৃত্যু হয়নি উনি শুধু দৃষ্টির ওপারে চলে গেছেন। তার মৃত্যুর পর থেকেই আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো সত্যিকারের মূল্যায়ন করেছে। অন্য অনেক লেখক-সাহিত্যিকের মতো এক কলাম বা দুই কলামে শেষ হয়ে যায়নি হুমায়‚ন আহমেদে মৃত্যু সংবাদ। তার মৃত্যু সংবাদে নিয়মিত সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি অনুভ‚তি প্রকাশ, পোস্ট এডিটরিয়াল এবং এডিটরিয়ালও ছাপা হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হয়েছে। মিডিয়ার দায়িত্ব যেমন জনগণকে সচেতন করা তেমনি মিডিয়া অনেক সময় পাঠকের কাছে কিছ‚ অন্য ধরণের সংবাদও তুলে দিতে পছন্দ করে।
হুমায়‚নের মৃত্যু সংবাদের সঙ্গে তার আগের দাম্পত্য জীবনের বিষয়টি আসাও যেন অনেকটাই তেমন।
হুমায়ুন আহমেদ বহুমুখী প্রতিভার এক বাংলাদেশী বাঙালি পুরুষ। তিনি একাধারে গল্পকার, উপন্যাসিক, সাহিত্যিক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার, সমাজবিশ্লেষক, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সন্তান, চিত্রশিল্পীও। তার এমন এমন অনেক গুণ আছে যার জন্য তরুণ প্রজন্ম তাকে শ্রদ্ধা করতে বাধ্য। কিন্তু চাঁদের যেমন কলঙ্ক থাকে ঠিক তেমনি হুমায়ুন আহমেদেরও জীবনের একান্ত ব্যক্তিগত কিছ‚ বিষয় তরুণ প্রজন্মের একেবারেই পছন্দ নয়। যেমন তার স্ত্রী গুলতেকিন, চার সন্তান, বিদিশা, শীলা, নোভা, নুহাশকে রেখে সেই শীলার বন্ধ‚ শাওনকে বিয়ে করা।
শুধূ বিয়ে করেই ক্ষ্যান্ত দেয়া নয়, বিয়ের পরেও তাদের প্রথম কন্যাসন্তানকে দেখতে কেন আগের ঘরের মেয়েরা দেখতে গেলনা তা নিয়ে আবার দেশের সবচেয়ে পঠিত সংবাদপত্রে লেখা এ যে ঠিক কোন ধরণের পারিবারিক সম্প্রীতির উদাহরণ আমার মাথায় অন্তত কিছুতেই ঢোকেনা।
হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছেন। আগামী বইমেলায় তার নতুন বই হয়তো আর একটা দুইটা আসবে। এরপরের বইমেলায় আর কোন নতুন বই আসবেনা হুমায়ুন আহমেদের। তার পুরনো লেখার ভীড়েই তাকে খূঁজে খুঁজে ফিরতে হবে। এটা আমার মতো অনেক পাঠকের জন্যই কষ্টের। তার মতো বড় মাপের লেখককে নিয়ে একটি বাক্য লিখব সেই দু”সাহস আমার মতো এত ক্ষুদ্র মানুষ এবং সাংবাদিকের একেবারেই নেই। তবু যে কারণে লিখতে বলেছি সেটার একটাই কারণ গুলতেকিনকে নিয়ে আমাদের মিডিয়ার অহেতুক বাড়াবাড়ি।
গুলতেকিন। হ্যাঁ, সেই নারী যিনি ১৯৭৩ সালে ভাল বেসে বিয়ে করেছিলেন আমাদের প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদকে। দাম্পত্যজীবনে তাদের আছে চারটি সন্তান। হুমায়নের বহুলেখায় গুলতেকিন আছেন। তার জীবনের এতদূর আসা বাংলাদেশের হুমায়‚ন আহমেদ হয়ে উঠার পিছনে আছে গুলতেকিনের ভ‚মিকা। সব কিছুই আমার মিডিয়া থেকে আর হুমায়ুনের লেখা থেকে জানা। যে কারণে এ লেখা লিখছি। হুমায়‚ন আহমেদের মা, ভাই বোন, সন্তানরা, সব্বাই যারা তাদের একান্ত আপনজনকে হারিয়েছে তাদের কষ্ট আমি বা আমরা কোনভাবেই দূর করতে পারবোনা। কিন্তু এই যে মিডিয়ায় এতো লেখালেখি সেটা তাদের জানানো যে, আমরাও তোমাদের দু:খে সমব্যথী।
কিন্তু এত ঘটনার ভীড়ে গুলতেকিনকে নিয়ে বাড়াবাড়ি আমার মোটেই ভাল লাগছেনা। হুমায়‚ন আহমেদ মারা যাবার পর সব মিডিয়া উঠে পড়ে লেগেছে যেন, গুলতেকিন ও তার সন্তানদের হুমায়‚নের কাছে আসতেই হবে। সন্তানদের মধ্যে তিনজন বাবার লাশের পাশে ছিলেন। কিন্তু মা গুলতেকিন গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন। কিন্তু হুমায়‚নকে কবরে রেখে এসেও গুলতেকিনের পিছ‚ ছাড়ছে না মিডিয়া। এ দৃশ্যটি আমার কাছে অত্যন্ত দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে। আমি যদিও গুলতেকিনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত নই, তারপরও তাকে এমন বিরক্ত করাটা আমার ভাল লাগছেনা। ২০০৩-২০১২ মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত হুমায়‚ন কি আদৌ কখনো গুলতেকিনের কাছে গেছেন। ১০৭২৩-২০০৩ তারা ৩০ বছর একটানা সংসার করেছেন। কিন্তু এরপরে তো হুমায়ুনের কোন লেখায় গুলতেকিনের কাছে ক্ষমা চাইতে দেখিনি। তাহলে এখন কেন মিডিয়া জোর করে গুলতেকিনকে হুমায়ুনের কাছে পাঠাতে চাইছে। গুলতেকিনের তো অধিকার আছে একটি নির্ঝঞ্ঝাট শান্তিতে থাকার। মনে যদি কোন কষ্ট থাকে তা থাকুক না তার একান্ত একলার। আমার দৃষ্টিতে গুলতেকিনের হুমায়‚নতো মারা গেছে সেই ২০০৩ সালে যখন তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এরপর এখন ২০১২ সালে তার মৃত্যুর পর এভাবে গুলতেকিন মিডিয়ার বা পরিবারের কারোরই বিরক্ত না করাই ভাল। আর গুলতেকিনও তো হুমায়‚নের মতো কলম ধরে লিখে যেতে পারেন তিনি যদি একান্তই কিছু দেশবাসীকে জানাতে চান তাকে তো নিশ্চয় দেশের মিডিয়াগুলো সে সুযোগ দেবার জন্য প্রস্তুত।

গুলতেকিনের ২০০৩ সালে মারা যাওয়া হুমায়‚নের শোক নিশ্চয় এখন নয় বছর পর তাকে তেমন বেশি কষ্ট দেয় না। যা তার মা আয়শা ফয়েজ, ভাই-বোন, সন্তানসহ দেশের ভক্ত অনুরাগীদের দিচ্ছে!

তাসকিনা ইয়াসমিন, ডিপ্লোম্যাটিক রিপোর্টার দৈনিক ডেসটিনি।
২৬.০৭.২০১২
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×