somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ Bajrangi Bhaijan(2015)

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ভালো মানুষ বলতে কি বোঝেন ?
একটা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট কিছু ভালো কাজ করা ? যার অর্থ উপার্জনের ক্ষমতা নেই এমন কাউকে কিছু সাহায্য করাও তো ভালো কাজ, তাহলেই কে সে ভালো মানুষ হয়ে গেলো? ঐদিক দিয়ে যে হাজারো জনসাধারণের টাকায় ঘর-বাড়ী করছে, সেটা দেখে কি বলবেন ?
ভালো মানুষের সংজ্ঞা আমার কাছে কিছুটা ভিন্ন! যে সর্বদাই ভালো, হোক তা বর্তমান/ভবিষ্যত অথবা অতীত। অনেকে বলতে পারেন, মানুষ অভিজ্ঞতা দিয়ে, জীবনে বড় ধাক্কা খেয়েও তো ভালো হয় !! পুরো বদলে যায়! সেক্ষেত্রে বলতে হয় এমন ধাক্কা কম বেশি সবার জীবনেই আসে !! সবাই কি তবে বদলে যায় ?! যায় না। শুধুমাত্র কোন একটা বিষয়ে বা কিছু নির্দিষ্ট মুহূর্তের জন্য বদলে যায়।
এখানে ঘটনা এত জটিলতা মাড়ানো ভালো মানুষ কে নিয়ে নয়! একজন জন্মগত সাধাসিধে ভালো মানুষ কে নিয়েই। জীবনে ব্যর্থতা এসেছে, বারংবার! ধাক্কা খেয়েছে বারংবার !! তবু তার শিক্ষা অনড় ছিলো। অনড় ছিলো তার আদর্শ, সর্বদাই।

জন্মের পর থেকে শুরু করে, এক পিতা-মাতা একের পর এক বিষ্ময় আর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে, কবে তার সন্তানের মুখে বাবা-মা ডাক শুনবে। কিন্তু, যখন সন্তান এর কথা বলতে পারার সবগুলো অর্গান ঠিক থাকার পরেও সে কথা বলতে পারে না, তখন বাবা-মা স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ হবেই। যদি এমন হত যে জন্মগত ভাবেই সন্তানের কোন সমস্যা !! তাহলে সেটা মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু কোন সমস্যা না থাকার পরেও যখন মুখে কথা ফুঁটে না সন্তানের তখন তা মারাত্মক রকমের বেদনায় রুপ নেয়। এমনই এক বেদনাহত মা যখন তার সন্তানের মুখে কথা ফুটানোর আশায় দূরদেশে গমণ করেন এবং সেখানেই ঘটে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। আর সে ঘটনা থেকেই শুরু হয় এই মুভির মূল গল্প।

আমরা পিকে মুভি দেখেছি, কম বেশি অনেকেই। সেখানে দেখেছি আমাদের ধর্ম বিভেদ কে কেন্দ্র করে মানবিকতা নামক বস্তুটি কিভাবে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে আমাদের মধ্যে থেকে। তার সাথে ছিল আমীর খানের অসাধারণ অভিনয়। কম বেশি সবাইকেই মুগ্ধ করেছিল পিকে। কিন্তু এখানে, এই ধর্ম বিভেদ শুধু একটি দেশকে ঘিরেই নয়, এবার তা আন্তর্জাতিক সীমানায় পৌঁছেছে। পিকে মুভিতে দেখেছি, সরাসরি যুক্তি ও আবেগ দিয়ে ধর্মবিভেদের ফলাফল ও মানবিকতার হারিয়ে যাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু এখানে, খুবই সূক্ষ্ম ভাবে তা তুলে ধরা হয়েছে। পিকে আর এই মুভির মধ্যে কন্সেপ্ট গত পার্থক্য অল্প। কিন্তু মূল বক্তব্যে কোন পার্থক্য নেই। পিকে তে দেখেছেন শুধু ধর্ম বিভেদ নিয়ে। আর এখানে দেখবেন দেশ ও ধর্ম দুটোই নিয়ে। তবে Bajrangi Bhaijan -এ খুব সুন্দর ভাবেই, একজন ছোট্ট অসহায় শিশু কে প্রতীকী হিসেবে ব্যবহার করার কারণে এখানে মানুষের আবেগ টা সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করাতে সক্ষম হয়েছেন পরিচালক।

আমাদের এত সমাজ, এত ধর্ম, এত দেশ, এত জাত এসবের তফাৎ কি ছোট্ট একটা শিশু বুঝে? সে তো ছোট বেলা থেকে যা দেখে, যা বুঝে, যা শুনে সেটাকেই গ্রহণ করে। তাই একজন পাকিস্তান শিশু কে যদি হিন্দু ধর্ম আর ইন্ডিয়ার সমাজে বড় করা হয়, তার যে জন্ম মুসলমান ঘরে বা সমাজে সেটা কি তার মধ্যে প্রকাশ পাবে ?
আমরা জানি একটি শিশুর আচার ব্যবহার তার বা বৈশিষ্ট্য তার বাবা মা এর মত হয়, জ্বীনগত কারণে। কিন্তু সেটা কতটুকু মূখ্য ?
খুব একটা কি ? মুভিটি দেখলেই বুঝতে পারবেন যে আসলে এই জ্বীনগত বৈশিষ্ট্য কতটুকু মূখ্য। একটি নিষ্পাপ শিশু কে প্রতীকী রুপে ব্যবহার করে এই মুভির মাধ্যমে পরিচালক বর্তমান দুনিয়ায় হারিয়ে যাওয়া মানবিকতার সুতোয় টান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
তা হয়তো বৃথা, অথবা এই মুভি দেখে দু একজনের মনে ব্যাপারটা গেঁথেও যাবে।
এখন দেখার অপেক্ষা... আর কত এমন মুভি অথবা গানের সৃষ্টি হলে আমাদের মানবিকতার সুতোটায় একটু জোরেসোড়ে টান লাগে। তা মুভি ও গানে সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজেও তার অস্তিত্ব খুঁজে নেয়...

মুভিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেঃ আই এম ডি বি লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১৫
১৪টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×