somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ Joker(2019)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ তো চলছে জীবন, প্রচণ্ড যান্ত্রিকতা আর শহুরে ইট,বালু, সিমেন্টে মিলে মিশে একাকার। এমন নয় যে আবেগের বাজারও খুব একটা নিম্নগামী, তবে তা প্রচণ্ড আপেক্ষিক আজকাল। এইতো সেদিন এক আড্ডায় প্রচুর আলোচনার ঝড় উঠলো, সদ্য মুক্তি পাওয়া সুদূর হলিউডের প্রসব-কৃত ডিসি কমিক ক্যারেক্টার "জোকার" এর উপর নির্ভর করে নির্মিত এক চলচ্চিত্র। শুরু করলাম যান্ত্রিকতা আর আবেগ সম্পর্কে দু'চরণ বলে, কেন? আসছি সে কথায়!



তো, যা বলছিলাম। হতাশা আর সামাজিক চাপ একজন সুস্থ মানুষর সত্তাকে কি পরিমাণ কলুষিত করতে পারে তা আসলে আমি, আপনি বা আমরা খুব একটা ভাবি না। বিশেষ করে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে, যেখানে সবাই যান্ত্রিক হবার দৌড়ে মারাত্মক রকমের ব্যস্ত, সেখানে তো একদমই নয়। এখানে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো হেসে উড়িয়ে দেওয়া হয়। এই যেমন ধরুন, এক ছেলে পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না পেলে দোষ টা তার ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে আরও চাপে ফেলে দেওয়া হয়। তাকে, কিভাবে পরিচর্যা করে আরও ভালো ফলাফল পেতে উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব সেটা নিতান্তই তাচ্ছিল্যে পরে থাকে কোন এক সংবাদপত্রের ফিচার কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারো করা জ্ঞানগর্ভ পোস্টে। এই নিয়ে আলোচনা ঐ অদ্দুরই। আবার আসি, সেই যান্ত্রিকতায়। এই যে যান্ত্রিক শহরে জীবন যুদ্ধে ব্যস্ত মানুষগুলো, সবাই কি সফল ? সবার শুরুটা কি মসৃণ? হাস্যকর বলা যায় এই প্রশ্নটা। কারণ, প্রশ্নটি হওয়া উচিত ছিল, কয়জনের চলার পথ মসৃণ? উত্তর পেতে সুবিধে হত তবে বৈকি। তারপর আবার, যারা মসৃণ পথে শুরু করে, তারাও যে খুব ভালো থাকে, তা নয়। তাদেরও সম্মুখীন হতে হয় অন্য অনেক মানসিক চাপের। থ্রি ইডিয়টস মুভি টার কথা মনে আছে তো সবার ? যে ছেলেটা চাপ নিতে না পেরে আত্মহনন করে, কিংবা যে কি না আত্মহননের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে পরে বেঁচে যায়। আসলে প্রথম জন মূল চরিত্র ছিল না, তাই সে বাঁচেনি। পরের জন মূল চরিত্র ছিল তাই বেঁচে গিয়েছে। তবে বাস্তবে দুজনের পরিণতিই একই হয়। দোষ হয় না কারো! শুধু একটু সংবাদপত্রে ফিচার আর দু'চারজনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জ্ঞানগর্ভ আলোচনার পাত্র হওয়া ছাড়া তাদের মৃত্যু আর তেমন প্রভাব ফেলে না। এরা যাও দু'চারজনের আলোচনায় আসে, অনেকে তো এ সয়ে নিয়েও আত্মহনন করতে না পেরে এই মানসিক ট্রমার ভেতরে থেকেই জীবন পার করে দিচ্ছে। চলতে,ফিরতে যাদের কে মনে হবে খুব সাধারণ মানুষ। কেউ জানি না, তার ভেতরে কি চলছে। মুখোশে ভরা এই বাস্তবতায় এই মানুষগুলো মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে গোপনে, যা তার না পারছে বলতে, না পারছে সইতে। আর সেখান থেকেই কেউ কেউ সম্মুখীন হয় সাইকোলজিক্যাল ব্রেক-ডাউন, এই টার্ম টার।

আসলে এভাবে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে মুভি রিভিউ লিখার মানে জানতে চাইতে পারেন, এসবের সাথে মুভি রিভিউ এর সম্পর্ক কি! তার জন্য অবশ্য আপনাকে মুভিটি দেখতে হবে। সাধারণত আমি চিরাচরায়িত ধরণে মুভি রিভিউ লিখতে অভ্যস্ত না। যারা প্রথম আমার লিখা মুভি রিভিউ পড়বেন তাদের জন্য খানিক গোলমেলে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। যাই হোক, আসি মূল কথায়। এই মুভির গল্প খানিকটা দুর্বল মনে হতে পারে অনেকের কাছেই, কারণ এখানে শুধুমাত্র একটি চরিত্রের রূপান্তর নিয়েই আপনাকে কাটিয়ে দিতে হবে পুরোটা সময়। তাই, ডিসি ফ্যান না হলে আসলে মুভিটা গল্পে আপনাকে হতাশ করবে। তবে, যদি মনে হয়, খানিক ধৈর্য ধরে এটা নিয়ে একটু ভেবে দেখার সময় করতে পারেন। তবে হয়তো, অনেক কিছুই খোলাসা হয়ে যাবে। আসলে, এটা ইন্ট্রো ঘরানার চলচ্চিত্র। এখানে পরিচয় পর্বে পর্বেই সময় শেষ। হয়তো সুদূর ভবিষ্যতে বাকি আলাপ হবে। অনেকটা, "আবার হবে তো দেখা, এ দেখাই শেষ দেখা নয়তো' এর মত অবস্থা। অভিনয় আর সিনেমাটোগ্রাফি আপনাকে হতাশ করবে না নিঃসন্দেহে। কারণ, হিথ লেজারের জোকারের অস্কার প্রাপ্ত সেই চরিত্রকে উপস্থাপন নিয়ে প্রচুর জল্পনা কল্পনা আর হতাশার গল্প শেষে জোয়াকিন ফিনিক্স যে খুব একটা হতাশ করেছে তা বলবো না। বরংচ এত আশা আর হতাশার বেড়াজালে বেশ সার্থকতার সাথেই এই চরিত্রটি উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছেন বৈকি। যাহোক, এটা ছিল আমার ব্যক্তিগত মতামত। আশা করি চলচ্চিত্রটি দেখার পর আমার রিভিউয়ের ইন্ট্রো-এর কার্যকারিতা খুঁজে পাবেন।

চলচ্চিত্রটির আই এম ডি বি লিংকঃ জোকার(২০১৯)

এবার তবে যাচ্ছি, যারা ইতিমধ্যে দেখেছেন, তারা তাদের মতামত দিতে ভুলবেন না। আর যারা এখনো দেখেননি, সময় করে দেখে নিবেন। নিরাশ হবেন না আশা করি।

অনেকদিন পর লিখতে বসলাম। ভুল ত্রুটি হলে, মেরে কেটে ভাসিয়ে দিবেন না আশা করি। পরবর্তী রিভিউতে যেন উৎসাহ নিয়ে ফিরে আসতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:৩৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×