somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বিতীয় ইন্টারভিউ

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইন্টারভিউ বেপারটা সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় , ঠিক আমার কাছেও । গত কাল ছিল আমার একটি ইন্টারভিউ । সেটাই শেয়ার করবো আজ , তার আগে আমার প্রথম ইন্টারভিউ এর কথা বলি ।

প্রথম ইন্টারভিউ টা ছিল বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তে ২০১০ সালে টেকনিক্যাল ডিভিশন এর । অনেক কঠিন একট পরীক্ষা ছিল । প্রাথমিক বাছাইয়ের ১৩০০+ এর মধ্যে শারীরিক , মানসিক , কাগজপত্র যাচাই শেষে আমরা মোট ১০৬৩ জন মূল লিখিতি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করলাম । ৫০ নম্বর এর পরীক্ষা , ছোট প্রশ্ন ৫০ টি ( এক লাইন এ উত্তর দিতে হবে ) ১ ঘন্টা সময় । পরীক্ষার শুরুতেই এক অফিসার আমাকেই প্রথম ওয়ার্নিং দিল আশ পাশে কি দেখি , আর একবার দেখলে পাছার উপর লাথি মেরে বের করে দেবে :P । আর কোন দিক না তাকিয়ে উত্তর দেওয়া শুরু করলাম । প্রথম প্রশ্ন তেই বাধলো খটকা । প্রথম প্রশ্ন ''ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক কে ?'' বইয়ে পড়েছিলাম এমন '' বঙ্গবন্ধুর হয়ে স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন জিয়াউর রহমান '' । ব্যাস এই লাইন টায় লিখেদিলাম । আস্তে আস্তে সব গুলো উত্তর দিয়ে গেলাম চিন্তা ভাবনা করে । আবার বেধে গেলাম ইংরেজির ৫ টা প্রশ্ন , কি দিয়েছে কিছুই বুঝলাম না । হাতে আর ১০ মিনিট সময় । পরীক্ষায় আবার নেগেটিভ মারকিং ছিল ১/১ , মানে একটা ভুলের জন্য একটা সঠিক উত্তর কাটা যাবে । ইংরেজি থেকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিলাম । এর পর সবার আগে খাতা জমা দিলাম আমি । এর পর ওই অফিসার আবার আমাকে বলে '' কি বেপার পরীক্ষা শেষ , পাইবা তো লাড্ডু '' । মনে মনে কইলাম হ লাড্ডুই জেন পায় আর সেই লাড্ডু তোমার মাথায় ভাঙ্গবো । হল থেকে বের হয়ে আসলাম , রেজাল্ট ২ ঘন্টা পর , অপেক্ষা করতে লাগলাম যদি টিকে যায় । ২ ঘন্টা পর রেজাল্ট এর পালা , আমাদের সবাইকে পুরাতন বিমান বন্দর এর মাঠে দাড় করালো । তার নাম ধরে ডাকবে কে কে টিকেছে , আর বলে দিল মাত্র ১৬ জন কে টিকিয়েছে । এইটা শোনার পর আর ওখানে থাকতে ইচ্ছা করলো না , বাধ্য হয়ে থাকতে হলো । ১৬ নম্বর থেকে নাম ডাকা শুরু করলো । প্রথম দশ জন কে ডাকলো , আমি তাদের মধ্যে নেই । ওই দশ তো খুব খুশি , হবারই কথা । কোন একটা কারনে পরের নাম গুলো ডাক ছিলনা । কিছুক্ষন পর ওই সেই অফিসার বাকি ছয় জন এর নাম ডাকবে । এই জন্য কিছুক্ষন ডাকা অফ ছিল । উনি আবার বললেন তিনি যে প্রথম হয়েছে তার নাম আগে ডাকবেন । ১ম জন কে ডাকলো , আমি সে না । ২য় , ৩য় চলে গেল । আমি তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে চাঁদ খোজার চেষ্টা করছি । যায় হোক ৪র্থ নামটি ছিল আমার :D আমার নাম বলার সাথে সাথে অফিসার এর দিকে তাকিয়ে দাত বের করে হেসে ফেললাম উনিও মুচকি হাসি দিল :D । নাম্বার পেয়েছিলাম ৪২ । এর পর মেডিক্যাল পরীক্ষা , আনফিট হয়ে বাদ গেল ৮ জন । যে প্রথম হয়েছিল সেও বাদ । এর পর আমাদের ৮ জন কে একটি ঘরে নিয়ে গেল , সাথে ৪ জন অফিসার । নানা রকম প্রশ্ন , প্রেম করি কিনা, নেশা করিনা , চাকরি পাওয়ার জন্য কাউকে টাকা দিয়েছি কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি । দুই জন তো ভয়ে বলেই দিল '' একজন সিগারেট খায় , আর এক জন এর মামা নাকি কোন অফিসার এর সাথে লিংক করেছে :P । দুই জন কেই বাদ করে দিল । থাকলাম ছয়জন , এবার ভাইভা । দুই জন এর পরেই আমাকে ডাকল । আবার সেই অফিসার এর সামনে পরলাম । তবে এবার আর শেষ রক্ষা হলো না । আমার প্রশ্ন করলো বাংলাদেশ এ ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর কয়টা ? বললাম ৩ টা , উনি দুইটার নাম জানতে চাইলেন আমি বললাম দুইটার নাম । উনি বললেন 'গুড' । এবার উনি জানতে চাইলেন ''সে ভাত খায় '' ইংরেজি কি হবে ? আমি খুব দ্রুত বলে দিলাম ''He eat rice'' :( । প্যাচ টা লেগে গেল । উনি জিজ্ঞাসা করলেন ঠিক বলেছি কিনা ! আমি মাথা নেরে বললাম 'হ্যা' । উনি জানালেন ভুল , হবে ''He eats rice'' . Third person singular number এর শেষে ''S'' যুক্তি হয় । এইটা একদম মাথায় ছিলনা তখন । আমি বাদ ,সাথে আর ৪ জন , টিকেছিল ১ জন যে লিখিত পরীক্ষায় ৩য় হয়েছিল । পাইলট হবার আশা শেষ । :(

এবার আসি দ্বিতীয় ইন্টারভিউ এর কথায় । দ্বিতীয় ইন্টারভিউ হয়ে গেল গতকাল । একটি বায়িং/ সেলিং অফিস এর বায়িং ডিপার্টমেন্ট এর একাউন্ট সেকশন এ । তবে এবার আর কোন পরীক্ষা দিতে হয় নি । মামার সাথে লিংক করেছি , মামার বন্ধুর অফিস । তাই সরাসরি ভাইভা তে ডেকেছে । উনি সাধারণ কয়েকটি প্রশ্ন করে জিজ্ঞাসা করলেন অবসর সময়ে কি করি ? বললাম ফেসবুকিং করি । এইটা শোনার পর উনি আমার দিকে ১ মিনিট চোখ বড় করে তাকিয়ে রইলেন । আমি কিছু বুঝলাম না । উনি আমাকে আসতে বললেন আমি উঠে চলে এলাম । বাইরে এসে মামা কে ফোন দিলাম , মামা জিজ্ঞাসা করলো কি কি জিজ্ঞাসা করেছে আমাকে ? মামা কে বললাম উনি তেমন কিছুই জিজ্ঞাসা করেনি , সুধু জিজ্ঞাসা করলেন আমি অবসর সময়ে কি করি ?

মামা - তা তুমি কি বললে ?
আমি - যা করি সেটাই বললাম । ফেসবুকিং ।
মামা - তুমি কই এখন ?
আমি - অফিস এই বসে আছি । কবে জইন করতে হবে শুনবো না ?
মামা - শুনতেও হবে না জইন ও করতে হবে না । ওখান থেক চলে আসো ।
আমি - কেন মামা ?
মামা - কারন উনি ফেসবুক পছন্দ করেন না । ২ বছর আগে উনি একটা ফেইক আইডির প্রেমে পরে ছ্যাকা খাইছে ।
আমি - বলো কি মামা ?
মামা - কেন তুমি কি অফিস এ ঢোকার আগে দেখোনি বড় করে লেখা আছে ''Facebook not allowed'' ।

শেষ মেস এইটাও হইলো না -_-
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×