এই পৃথিবী, বিশ্ব জগত এবং মানুষের জন্য প্রকৃত সত্য বা মহাসত্য কি? আল্লাহ কোরআনে বলেছেন তিনি বিশ্ব জগতকে মহাসত্যের উপর তৈরী করেছেন। পরকালে মানুষকে এই সত্যের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে সে সত্য জানত না। বরং যারা জাহান্নামী হবে তারাও স্বীকার করতে বাধ্য হবে যে তারা সত্য জানত কিন্তু মানত না। জীবনের সত্য এমনই হওয়া উচিত যা সবাই নিশ্চিত ভাবে জানে, তা নাহলে শেষ বিচারের দিন মানুষ অজ্ঞতার অযুহাতে সাস্তি থেকে বাঁচতে চাইবে। এজন্যই রাসুল(স.) যখন আরবের মুশরিকদের মাঝে ইসলামের দাওয়াত শুরু করেন তখনও কেউ বলতে পারেনি যে তিনি মিথ্যা বলছেন। সবাই স্বীকার করেছে যে তিনি সত্য বলছেন কিন্তু সবাই সেই সত্য মেনে নিতে পারেনি। একবার এক কোরাইশ সরদার রাসুল(স.) এর সাথে কথা বলে এসে অন্য কুরাইশদের বলেছিল - দেখ সে যা বলছে তা যদি সে বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে অবশ্বই তার আদর্শ বিশ্ব বিজয়ী হবে এবং তার ফলে কুরাইশ বংশের মর্যাদাই বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং তাকে বাঁধা দিয়ে লাভ নাই বরং তাকে তার কজ করে যেতে দেয়াই ভাল। অর্থাৎ এই সত্য মেনে নিতে পারলে যে বিশ্ব বিজয়ী হওয়া যাবে এ’পর্যন্ত তারা বুঝত। কিন্তু তার পরও অনেক কুরাইশ সরদার তা মানতে পারেনি। কি সেই সত্য যা সবাই জানে অথচ মানতে পারে না? রাসুল(স.) যদি আজকে বাংলাদেশে আসতেন তাহলে বাংলায় তিনি কি এমন কথা বলতেন যা সবাই বুঝত কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক তা মেনে নিয়ে জীবন বদলে ফেলত আর অধিকাংশই মানতে পারত না। আমরা তো জানি তিনি একটি মাত্র কালেমা বা বাক্য দ্বারা তার দাওয়াত শুরু করেছিলেন - 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ'। কি অর্থ তিনি এই একটি মাত্র বাক্য দ্বারা প্রকাশ করেছিলেন যা মেনে নেয়া এবং না নেয়ার মাঝে এত পার্থক্য? বাংলায় এই কথাটা কিভাবে বলা যায়?
আমি অনেকদিন এই বিষয়ে চিন্তা করেছি। আমাদের সমাজে আমরাতো এই কলেমার বহু প্রচলন দেখি। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে প্রায় ১০০ ভাগ মানুষই এই কালেমার কথা জানে। আমাদের এখানে বহু আলেম ওলামা বহু ইসলামী সংগঠন আছে যারা শুধু এই কালেমাই নয় বরং পুরো কোআনের উপর বহু পড়াশুনা প্রতিনিয়ত করছেন। বহু আলোচনা, ওয়াজ, সেমিনার এবং পত্র পত্রিকায় লেখালেখী হচ্ছে, বহু বই প্রকাশিত হচ্ছে ইসলাম এবং তার বিভিন্ন দিক ও বিষয় নিয়ে। কিন্তু রাসুল(স.) একটি মাত্র বাক্য এবং কোরআনের প্রাথমিক কিছু আয়াতের মাধ্যমে আরবের মরুচারী বেদুয়ীনদের যে শিক্ষা দিয়েছিলেন যার ফলে তাদের জীবন আমুল বদলে গিয়েছিল আমরা এত লেখা পড়া জ্ঞান চর্চার মাধ্যমেওতো সেই শিক্ষা দিতে বা পেতে পারছি না। আমাদের জীবনতো বদলে যাচ্ছে না। রাসুল(স.) একটি মাত্র বাক্য দিয়ে বিশ্ব মানবতার সকল সমস্যার সমাধান পেশ করেছিলেন। বলেছিলেন এটি মেনে নাও তাহলে তোমাদের জাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এবং তোমরাই বিশ্ব বিজয়ী হবে। আরবের সেই অশিক্ষিত বেদুইন লোকেরা আল্লার রাসুলের(স.) সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রমান করেছিল যে সত্যিই মনবতার সকল সমস্যার সমাধান এই কথার মধ্যে আছে আর যারা এটি মেনে নেবে তারাই বিশ্ব বিজয়ী হবে। তাহলে আমরা কেন পারছি না? হাজার বার এই কালেমার জিকির, ইসলামের উপর এত আলোচনা এত বই পুস্তক লেখা এবং পড়ার পরও আমরা বিশ্ব বিজয়ীতো নয়ই বরং নিজেদের জীবনের সমস্যগুলোর সমাধানও কেন পাচ্ছি না? কেন আমাদের সমস্যা শুধু বেড়েই চলেছে আমাদের অধপতনের ধারা দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে? আমি বহু দিন, বহু রাত এই প্রশ্নগুলো নিয়ে ভেবেছি এবং সবসময় আমার মনে হয়েছে আমরা আমাদের অতি পরিচিত কিছু একটা বিষয় ধরতে পারছি না। কালেমার যে অর্থ আমরা করছি ‘আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই’ এখানেই কিছু গলদ রয়ে যাচ্ছে। এই অর্থ আমাদের মাঝে তেমন কোন চেতনা তৈরী করছে না - রাসুল(স.) বলার পর তাঁর সময়কার আরবদের মাঝে যেরকম চেতনা হয়েছিল। তাহলে বাংলায় কথাটা কিভাবে বলতে হবে যাতে আমাদের মাঝে সেই রকম প্রতিকৃয়া হয়? আমরা সবাই বুঝতে পারি জীবনের মহাসত্য?
এ'ধরনের আরো বহু গুরুত্বপুর্ণ বিষয় নিয়ে সংকলিত হয়েছে মহাসত্যের পরিচয় ওয়েবসাইট। বিস্তারিত জানতে মুল সাইটে রেজিস্ট্রশন করে সবগুলি অধ্যায় পড়ুন এবং ফোরামে গিয়ে আপনার সুচিন্তিত মতামত দিন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




