
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পলাশীর যুদ্ধের মীরজাফরের দলের মতো বাংলাদেশেও দেশবিরোধী অতি নিম্ন শ্রেণীর নিকৃষ্ট একটি দল তৈরি হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর খানসামা, চৌকিদার, ঝাড়ুদার ও মেথর হিসেবে কাজ করতো উক্ত দল। উক্ত দলের সদস্য নাম - রাজাকার। রাজাকার অত্যন্ত ভয়ংকর ও নিকৃষ্ট একটি কাজ করে আর তা হচ্ছে তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ধরিয়ে দিতো। এছাড়া বাড়ি বাড়ি থেকে কিশোরী থেকে শুরু করে নানা বয়সের নারীদের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতো। ১৯৭১ এ রাজাকার ছিলো। আজও রাজাকার আছে। ভবিষ্যতেও রাজাকার থাকবে। এইগুলো বংশ পরম্পরা চলতেই থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছিলো মেজর জিয়াউর রহমান সাহেবের ১১ নং সেক্টর। ময়মনসিংহ জেলায় লোকজন “রাজাকারকে বলতো লেজাকার”। আঞ্চলিক ভাষার কারণেই লেজাকার নামটি প্রচলিত হয়। আজও ময়মনসিংহ এলাকার লোকজন উক্ত দলের লোকজনকে লেজাকার নামেই চিনে ও জানে। লেজাকারের কোনো জাত নেই, লেজাকারের কোনো ধর্ম নেই। লেজাকারের মাঝে কোনো মনুষ্যত্ব নেই। লেজাকার দেখতে আপাদমস্তক মানুষের মতো হলেও আদতে এরা কোনো মানুষই না।
কোনো মুক্তিযোদ্ধা কোনো লেজাকারের সাথে যুদ্ধ করেনি। ১৯৭১ এর যুদ্ধ হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মাঝে। যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে চলে গিয়েছে, রেখে গিয়েছে তাদের লেজাকারদের। আজও ১৯৭১ এর যুদ্ধ পরাজয়ের দায়ভার বহন করে চলছে লেজাকার গং এবং প্রতিশোধ নিতে সচেষ্ট আছে। সকল প্রকার দেশ বিরোধী কাজে লিপ্ত আছে লেজাকার গং। লেজাকার সামান্য কোনো দলের বিরুদ্ধে কাজ করে থেমে থাকে না। লেজাকার কাজ করে দেশের বিরুদ্ধে। লেজাকার কাজ করে দেশের অর্থনীতির বিরুদ্ধে। লেজাকার কাজ করে দেশের আইন ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধের অনেক অনেক জানা অজানা গল্প আছে। অনেক গল্প লেখা হয়েছে, অনেক গল্প লেখা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক অনেক চিঠিপত্র নানান পত্র পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু লেজাকারদের কোনো চিঠিপত্র কোথাও আজও প্রকাশিত হয়নি। অথচ লেজাকার গং শিক্ষিত লোকজন। শিক্ষিত লেজাকার গং কোনো চিঠিপত্র লিখেনি? আজ লেজাকার গং মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রশ্ন করছে। শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করছে। অথচ তারা নিজেদের নিয়ে কোনো গল্প করে না। নিজেদের কোনো চিঠিপত্র উপন্যাস এমনকি নিজেদের চরিত্র নিয়েও এরা কথা বলে না!
শিরোনাম “লেজাকারের চিঠি”! - না, লেজাকারের কোনো চিঠি নেই, লেজাকারের কোনো গল্প নেই। লেজাকারের নিজেকে নিয়ে লেখার মতো কিছু নেই। লেজাকারের নিজেকে নিয়ে গর্ব করে বলার মতোও কিছু নেই। যা আছে সবই কলঙ্ক আর কলঙ্ক। আর এই কলঙ্ক বহন করেই চলতে হবে কলঙ্কিত এই জীবন। জীবনের পর জীবন, কালিমালিপ্ত কলঙ্কিত নিকৃষ্ট জীবন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


