somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানা দেশের ফুটবল কৌশল: জার্মানি

০২ রা জুন, ২০১০ রাত ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবারের পর্বে জার্মানি।


জার্মানিকে নিয়ে অনেক অভিযোগ শোনা যায়। তারা নাকি শিল্প বুঝে না। যান্ত্রিক ফুটবল খেলে। এটা কেমন কথা!
তারা কি মাঠের মধ্যে যন্ত্রপাতি নিয়ে ঢুকে পড়ে নাকি??
নিশ্চয় তা নয়।
মাঠে অন্যদলের মতো এরাও ১১ জন খেলোয়াড় নিয়েই নামে।

তাহলে এদের সাথে অন্য দলের পার্থক্য কোথায়?
কেনই বা এমন অপবাদ?

জবাব দেয়ার আগে একটু জার্মানির সাফল্য দেখা যাক।
১৯৫৪ সালের পর থেকে যে কয়টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে শুধু মাত্র ১৯৭৮ এ তারা ২য় রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়।

এছাড়া বাকি আর ১৩টি বিশ্বকাপের সাফল্য দেখুন:
৩ বার চ্যাম্পিয়ন।
৪ বার রানার্স আপ।
২ বার তৃতীয় স্থান।
১ বার চতুর্থ স্থান।
৩ বার কোয়ার্টার ফাইনাল।

চলুন আরো কিছু তথ্য জানা যাক।

১৯৭৪ সালে ২য় বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে তারা হারিয়েছিল তৎকালীন ত্রাস নেদারল্যান্ডকে। (১ গোলে পিছিয়ে থেকে ম্যাচ জিতে)

১৯৯০ সালে ৩য় বারের মত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ফাইনালে হারিয়ে দেয় ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে।

জার্মানি আর ইতালির মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া ১৯৭০ এর সেমিফাইনাল কে কী বলা হয় জানেন আশা করি?
উত্তর: "Game of the Century"

এবার আশা যাক আসল উত্তরে।
কেন যান্ত্রিক ফুটবলের কথা বলে রীতিমত অপমান করা হয়?
কারণ, জার্মানির ১১ জন খেলোয়াড় আসলে এক একটা যন্ত্র।

ক্লান্তি, পরিবেশ, মানসিক চাপ, প্রতিপক্ষের সুনাম-ঐতিহ্য কোন কিছুই এই ১১ জন কে স্পর্শ করেনা।

কোন ১১ জন??
জার্মানির যে কোন সময়ের ১১ জন ফুটবলার!!
যন্ত্রের মত তারা শুধু একটা কাজ করে যায়, আক্রমণ! আক্রমণ!! আক্রমণ!!!

পিছিয়ে পড়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জার্মানি জয় ছিনিয়ে এনেছে। তাও আবার কোন লুতুপুতু দলের বিরুদ্ধে নয়। একেবারে সেই সময়কার সেরা দলের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে।

শারীরিক ক্ষমতাকে এরা ভালো ভাবে ব্যবহার করে। ব্রাজিলে যেমন স্থানীয়রা শরীর বাঁচিয়ে খেলার কৌশল বের করে, জার্মানি যেন ঠিক তার উল্টো! [ পারলে যেন মারামারি শুরু করে।]

একটা উদাহরণ দেই।

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-স্পেন যখন আক্রমণে যায় তখন প্রতিপক্ষ দ্বিধান্বিত থাকে এই ভেবে যে, ঠিক কোন দিক থেকে আক্রমনটা শেষ পরিণতি লাভ করবে।
যে দলের পায়ে বল নেই তারা তো আর বসে বসে ললিপপ খাবে না। ম্যান মার্কিং করা, সাপোর্টিং রান নষ্ট করা, ফেইক রান এ পা না দেয়া, জকিং করা এ রকম আরো অনেক ট্যাকনিকাল বিষয় ভাবতে হয় দ্বিধান্বিত অবস্থায়।

প্রতিপক্ষ যখন জার্মানি তখন কি হয়?

দ্বিধান্বিত হওয়ার দরকার নেই। আক্রমণের শেষ পরিণতি কোথায় হচ্ছে সে জায়গাটা জার্মানি পারলে আঙুল তুলে দেখিয়ে দেয়। সাথে এটাও বলে দেয়, "পারলে ঠেকাও"!!!

যুদ্ধক্ষেত্রের ট্যাংক এর মত গুড়িয়ে দিয়ে ঢুকে যায় প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে। আবার নিজেদের পজেশনে বল রাখাটাও পারে ভালো মতই।

আপনি এ খেলায় কোন সৌন্দর্য্যের আশা করলে ভুল করবেন। কারণ আপনি ব্যতিক্রমী কিছু খুঁজে পাবেন না। যন্ত্রের মত একই কাজ করে যাবে এই দল।

গতি, শারীরিক ক্ষমতা, সব সময় দৃঢ় মনোবল, সোজা-সাপটা নিয়ম-কানুন, আক্রমণাত্বক খেলা, আর শক্তিশালী রক্ষণ এই সব কিছুর সম্মেলন হচ্ছে জার্মান ফুটবল। যাদের কাছে জয়টাই সবচেয়ে বড়।

যে কোন বড় দলের জন্য তারা সব সময়ই হুমকি। আর অতীতেও এ করে তারা দেখিয়েছে বেশ ভালো ভাবেই।

তবে এবারের বিশ্বকাপে জার্মানদের অবস্থা কেমন যেন নাজুক মনে হচ্ছে। বিশেষ করে বালাক না থাকাটা অন্যান্যদের মনে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলতে পারে।

যত যাই কিছু হোক, তারা জার্মান!! ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠেও যারা
সমান তালে লড়াই করতে পারে।

সুন্দর খেলা তো অনেকেই খেলে।
একটা দেশ অন্তত থাকুক যাদের খেলা দেখে আমরা শিল্পমানের তুলনামূলক বিচার করতে পারবো।

নানা দেশের ফুটবল কৌশল : ব্রাজিল

নানা দেশের ফুটবল কৌশল : আর্জেন্টিনা

নানা দেশের ফুটবল কৌশল : ইতালি

পরের পর্বে থাকবে ইংল্যান্ড। (শেষ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১০ রাত ১:১৩
১৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×