জাপানে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের রিঅ্যাক্টরে বিস্ফোরণের পর থেকেই মাথায় একটা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে, প্রস্তাবিত রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক যেখানে অনেক দেশ আবার নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট তৈরির ব্যাপারে রাশিয়ার সাথে চুক্তিও হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। কিন্তু বাংলাদেশ অতি মাত্রায় ভূমিকম্প প্রবণ একটি দেশ একথা আমাদের মাথায় রাখা উচিত।
২০০৭ সালের জুন মাসে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেয়। ২০৫০ সাল পর্যন্ত ৮টি উন্নয়নশীল দেশকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে জাতিসংঘ। তার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। সে সময় আইএইএ-এর দুইজন প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসেন। তারা কারিগরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করার আশ্বাস দেন। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট তৈরির ব্যাপারে রাশিয়া অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ। ভারত, বুলগেরিয়া, ইরান ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে এটা একটা আশার কথা। কিন্তু ক্ষতিকর দিকটাও আমাদের সবার আগে ভেবে দেখা উচিত। জাপানের মত একটা ঘটনা হলে কি হবে আমাদের?
যদিও গত ১৭ তারিখে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, প্রস্তাবিত রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এমনভাবে তৈরি করা হবে যাতে সেটি ১০ মাত্রার ভূমিকম্পও সহ্য করতে পারে। কয়েকটি দেশ যখন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিচ্ছে তখন বাংলাদেশে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে কোনো ঝুঁকি থাকবে কি না- জানতে চাইলে ওসমান বলেন, "এত কম খরচে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সুযোগ আমরা পাবো না, তাই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হবেই।"জাপানের বিপর্যয়ের পর জার্মানি তাদের পুরনো সাতটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। জার্মানি বা অন্যান্য দেশে দ্বিতীয় প্রজন্মের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হবে তৃতীয় প্রজন্মের। এতে দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।"
কিন্তু এত কিছুর পরেও একটা কথা থাকে, বিপদ যখন আসে তখন সঙ্গি-সাথী সাথে নিয়েই আসে। তাই সরকারের উচিত সমস্ত দিক ভালো করে বিচার বিবেচনা করে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া। বিশেষ করে বিকল্প কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করা যা পরিবেশ উপযোগী। জলবিদ্যুৎ,বায়ু বিদ্যুৎ,সৌর বিদ্যুতের মত পরিবেশ উপযোগী বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের বেশি মনযোগী হওয়া দরকার। আমাদের এখন বিদ্যুৎ যতটা দরকার তার চেয়ে বেশি দরকার আমাদের নিরাপদ ভবিষ্যত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




