somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বার্ধক্যের কষ্ট না দিয়ে প্রাণীদের দ্রুত মেরে ফেলা উত্তম নয় কি ?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেক প্রাণীভোজী বা ভিগানিজমের ব্যাপারে দ্বিধাদণ্ডে থাকা মানুষের কাছে এই প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে হয়। প্রশ্নটাকে যদি আরও বিস্তারিতভাবে যদি বলতে যাইঃ

"যেসব প্রাণী আমরা খাই সেসব প্রাণীগুলো অনেক দিন বাচে আর একটা দীর্ঘসময় তাদেরকে বার্ধক্যের কষ্টে ভুগতে হয়। নানা রোগবালাই তাদের আক্রমন করে। অনেক কষ্ট পেতে হয়। প্রাণীদের কষ্ট বা Suffering এ যদি এখানে মুখ্য হয় তাহলে কি আমাদের উচিত না তাদের দীর্ঘসময় কষ্ট না দিয়ে কম সময়ে সহজে মেরে ফেলা ? "


প্রাণীভোজীরা যারা জীবন কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রাণী খাওয়ার প্রতি আকৃষ্ট থাকে। আর সেইসব প্রাণীর জন্যই তারা এই যুক্তিটি দেখায়। ধরে নিলাম একজন ভ্রমনকারি যিনি সাড়া পৃথিবী ঘুরেছেন, উনিই মাছ ও প্রাণীসহ সব মিলিয়ে ৫-৬ শত প্রজাতির বেশি প্রাণীর স্বাদ পেয়েছেন। পৃথিবী জুড়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ প্রজাতি আর তারা সবাই বার্ধক্যের কষ্টে ভুগে। এমনকি মানুষও।


এই যুক্তি যদি গ্রহণ করা হয়, তাহলে একে পৃথিবীর সকল প্রাণীর ক্ষেত্রে গ্রহণ করা লাগবে। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে

১। যেসব প্রাণী আমরা খাচ্ছি শুধু সেসব প্রাণীর ক্ষেত্রেই কেন এই যুক্তি? যেখানে পৃথিবীর প্রায় ৯৯% প্রাণীকে আমরা না খাওয়ার ইচ্ছা রাখি, না খেতে পারবো।

২। বার্ধক্যের সমস্যা তো মানুষেরও আছে। আর আমাদের মস্তিস্তের গঠন যদি চিন্তা করি আমাদের ব্যথা অনুভব করার ক্ষমতাও অনেক বেশি। তাহলে মানুষ বার্ধক্যে চলে আসলে কি তাদেরও হত্যা করা উচিত ? আর পুষ্টির ওজুহাতে খাওয়া উচিত?


অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রাণীভোজীরা উত্তরে স্বাস্থ্যের কথা বলে।"যেসব প্রাণী আমরা স্বভাবত খাই সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত আর ক্ষতিকর উপাদান তার মধ্যে নেই" - সাধারন প্রাণীভোজীদের গড় উত্তর। অথচ ভিগানরা বারবারই প্রাণীভোজীরা যেসব প্রাণী খেয়ে থাকে তার সবগুলোই কোন না কোন স্বাস্থ্য সমস্যা ও পরিবেশ দূষণের কথা বলে এসেছে । অপচয়ের সাথে, দারিদ্র্যের সাথে, অনাহার, রোগ-বালাই, নিষ্ঠুরতার সাথে সম্পর্কের কথা বলে।

অনেকের একটা ভুল ধারনা হচ্ছে তারা মনে করে, প্রকৃতি সর্বদা আমাদের পক্ষে। প্রকৃতি আমাদের উপকারের, প্রকৃতি মঙ্গলের। অথচ এটা মোটেই সবসময় সত্য নয়। প্রকৃতি কখনো নির্মম হয়, আবার কখনো কল্যাণের হয়। প্রাণীর মধ্যে অপকার তো আছেই, অনেক উদ্ভিজ জিনিসও আমাদের জন্য ক্ষতিকর ও পরিত্যাজ্য ; যতই প্রাকৃতিক হোক না কেন।

বার্ধক্য এবং বার্ধক্যের কারনে কষ্ট এটাও প্রকৃতির নির্মম বাস্তবতা। বনে-জঙ্গলে, সমুদ্র গভীরে এমন অসংখ্য, অগণিত জীব আছে যারা এই নির্মম বাস্তবতার স্বীকার হচ্ছে, হয়েছে, জীব বিলুপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত হবে। আর সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করারও নেই। আর সবচেয়ে বড় কথা আমাদের কোন অধিকার নেই কোন সংবেদনশীল প্রাণী বেচে থাকবে কি বেচে থাকবে না সেটা নির্ধারণ করার। তাদের মরে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই, তারা এই জগতকে আরও দেখতে চায়। তাই আমরা যখন তাদের হত্যা করার চেষ্টা করি তারা আত্মরক্ষা করে। একজন সাধারণ বৃদ্ধ মানুষও জীবন থেকে কষ্ট পেলেও তাদের কেউ বার্ধক্যের কষ্টের জন্য কেউ তাদের হত্যা করবে সেটা মেনে নিতে পারে না । তারাও তাদের জগতকে আরও দেখতে চায় । আমরা বেশি হলে আমাদের সাধ্যমত জ্যৈষ্ঠ মানুষ ও প্রাণীদের কষ্টকে প্রশমন করতে পারি। তাদের রোগ নিরাময়ের ব্যবস্থা করতে পারি। মিথ্যা অজুহাতে তাদের হত্যা নয়।।

আরও পড়ুন
ভিগানদের সম্পর্কে ভুল ধারনা (কিউ অ্যান্ড এ) পর্ব ১
আমাদের ক্যানিন দাত আছে, এর মানে কি এই নয় যে প্রকৃতি আমাদের মাংস খাওয়ার পক্ষে ?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×