somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্পর্শ (ক্যাম্পাস প্রেম ও কট খাওয়া বিষয়ক মাঝারিগল্প)

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মরতে মরতে বেঁচে গেলাম। শিট! ব্যাপারটা যে এরকম দাঁড়াতে পারে তা কল্পনাও করিনি। তনুর অবস্থা এখনও ভাল নয়। হায় তনু!

তনু। পৃথিবীতে কোনকিছু যে এতটা পারফেক্ট হতে পারে তা তনুকে না দেখলে বোধহয় কারো বিশ্বাস হবে না। অন্য ডিপার্টমেন্টের টিচার থেকে শুরু করে লেডিস হোস্টেলের গার্ড মামা পর্যন্ত সবারই প্রিয় এই তনু। আমি যখন থার্ড ইয়ারে তখন তনু সবে ক্যাম্পাসে পা রেখেছে। প্রথম দেখাতেই ওর প্রেমে পড়ি আমি। তখনি ঠিক করে ফেলেছিলাম সব ঠিক থাকলে একেই বিয়ে করব।

আমি মৃদুল (ছদ্মনাম)। সরকারী ছাত্রসংগঠনের যে কয়জন কিছুটা পড়াশোনা করে আমি তাদের একজন। আমাদের ভার্সিটিটাও একটু ব্যতিক্রম। শহরের ঠিক মাঝখানে কৃষি বিষয়ক কোন ভার্সিটি পৃথিবীর আর কোথাও আছে কি না আমার জানা নেই। এখানকার ছাত্র-রাজনীতিও আর দশটা প্রতিষ্ঠানের মত নয়। মুলত অঞ্চল ভিত্তিক গ্রুপিং-ই এখানে প্রাধান্য পায়। এই যে, নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে ক্যাম্পাস পলিটিক্স শুরু করে দিয়েছি। ঐ যে কী যেন বলে ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, আর আমি তো শিক্ষিত চাষী। হা হা হা।

যাই হোক যা বলছিলাম। তনুর চেহারার বর্ণনা আমি দেব না। অনেক চেষ্টা করেও আমি পারিনি ওর তুলনা খুঁজে পেতে। এক কথায়, আমি এত সুন্দরী আর কাউকে দেখিনি। ওর কোন খুঁত নেই। অবশ্য ওর মনে একটা দুঃখ আছে। অনেক চেষ্টা করেও মেডিকেলে চান্স পায় নি ও। তারপর যেটা প্রায় নিয়মে দাঁড়িয়েছে গত কয়েক বছর যাবত, মেডিকেলে ভর্তিতে ব্যর্থ হয়ে আর সবার মত কৃষিতে যোগদান। কিন্তু আমার চোখে সে জাস্ট পারফেক্ট।
প্রথম থেকেই আমি ওকে চাচ্ছিলাম। মানে ঐ ভাবে আর কী। হে হে। আমার রেজাল্ট মুটামুটি। নিজের একটা পালসার বাইক আছে। ক্যাম্পাসে একটা ভাই ভাই ভাব নিয়ে চলি। ও'র ব্যাচের এক জুনিয়রের সাহায্যে কায়দা করতে খুব বেশী কষ্ট হয়নি। মেয়েও উচ্চাকাঙ্খি। সুন্দরী মেয়েরা যেমন হয় আর কী। ক্যাম্পাসে যদি একটু ভাব নিয়ে চলা যায়। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নোট পাতি যদি রুমে পৌঁছে যায় ক্ষতি কী। আমার মত নেতার সাথে চলা একরকম প্রটেকশনও বটে। আর চাঁদার টাকায় চাইনিজ চাওমিন তো আছেই।

দুপক্ষই খুশি এই লেনদেনে। রেকশার হুড তুলে অথবা কলাবাগানের অন্ধকার চাইনিজে টুকটাক। টুকটাক। আসলে মন ভরছিল না। হঠাত সুযোগটা চলে এল। আমাদের গ্রুপেরই এক জুনিয়রের হাতে মার খেয়ে বসল এক কম বয়সী টিচার। শুরু হল স্যারদের আন্দোলন। ক্লাস প্রায় বন্ধ। প্রথমবারের মত পড়লাম চিপায়। সরকারের শেষ সময়, তাই দল থেকেও সাপোর্ট কমে আসল। সাথে উপদেশ পেলাম কিছুদিনের জন্য গ্রুপ সুদ্ধ আত্নগোপনের। আসলে ঐ টিচারের নাকি অবস্থা বেশ খারাপই।

তনুর হাতেও অবসর। বললাম চল বেরিয়ে আসি।
"আর কে কে যাবে?"
"আমার দু'চারজন বন্ধু-বান্ধব।"
"এর মাঝে আমি কীভাবে যাই?"
"ব্যাপার না। আমি থাকতে তুমি পুরা সেফ।"
"ওমা, তোমার সমস্যা আছে নাকি?" বলেই মুখ চেপে হাসি। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম। মাঝে মাঝে এমন কিছু বলে ও আমাকে চুপ করিয়ে দেয়।

অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে অবশেষে রাজি করালাম। এর আগেও অনেক নেতা ক্যম্পাসের জিএফ দের নিয়ে ঘুরে এসেছে। এটা ওপেন সিক্রেট। অবশেষে আমার সুযোগ চলেই এল। ও আমার মতলব না বোঝার মত মেয়ে না। তারমানে ব্যাপারটা আপোষেই হচ্ছে। আমি সত্যিই খুব খুশি।

একটা হাইএস মাইক্রো ভাড়া করে আমরা পাঁচজন রওনা দিলাম। সাথের আর সবারই উদ্দেশ্য আত্মগোপন। আর আমি.....আসলে এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে পারার নামই রাজনীতি। হোটেল আগে থেকেই বুক করা ছিল। রাতে সবাই একসাথে বার-বি-কিউ আর খুব হই-হুল্লোড় করে রুমে চলে গেলাম। আমার আর তনুর একই রুমে থাকার ব্যবস্থা। এটা দেখে কিছুক্ষণ আমার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকা ছাড়া এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি তনু।

ফোর প্লে আমরা গত এক বছরে ঢাকায়ই অনেক বার করেছি। তাই ইজি হতে সময় লাগল না। আমি এর বিস্তারিত বর্ণনা দিচ্ছি না। আমার লেখাটাকে কোন ট্যাগ দেয়ার ইচ্ছা নেই। ওর চোখে কামনা দেখে আমি যখন চুরান্ত পর্যায়ে যাচ্ছি, ও আমাকে থামিয়ে দিল। "প্লিজ আজ না।" ওর চোখগুলো ছল ছল। সেখানে কাতর মিনতি। হায়রে এতদূর এসে এখন এসব কী বলে। আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা একটা গন্ডি থেকে বের হতে পারে না। এটা ওর নিষ্ফল চেষ্টা, তা ও নিজেও জানে। ওর কোন মিনতি কাজে লাগল না। আমার ওসব শোনার মত অবস্থা আসলে ছিল না। প্রথম না হলেও তনু ছিল আমার জন্য স্পেশাল।

আমার এতদিনের সাধনা অবশেষে সফল। আমার চোখ বন্ধ হয়ে ছিল, তখনও আমার শেষ হয়নি। হঠাত ওর অস্বাভাবিক গোঙ্গানি শুনে চোখ খুলে যাকে দেখলাম তাকে যেন আমি চিনি না। ছটফট করছে তনু। চোখমুখ ফুলে ফেটে যাওয়ার দশা। শ্বাসকষ্টের কারণে পুরো শরীর নীল হয়ে আসছে তনুর। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। উঠতে যাব, পারলাম না। বিছানা থেকে মেঝেতে পড়ে গেলাম। নিশ্বাস নিতে পারছি না। হাত পা বাঁকা হয়ে আসছে। আর তীব্র ব্যাথার সাথে সমগ্র শরীরে প্রচন্ড চুলকানী। ঠোঁট ভারী হয়ে যাচ্ছে ফুলে। বুঝতে পারছি তনুর মত একই অবস্থা হচ্ছে আমারও।
ভাবছিলাম এটা কী পাপের শাস্তি? সাথে আসা সুমনকে একটা ফোন দিতে চেষ্টা করছিলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই।

জ্ঞান ফিরল একটা প্রাইভেট হাসপাতালে। সুমনের কাছে শুনলাম এর পরের গল্প। আমার কল পেয়ে সুমন পাঁচ মিনিট হ্যালো হ্যালো করেও কিছু শুনতে না পেয়ে আমাদের রুমের সামনে চলে আসে। ডাকাডাকি করেও কোন সাড়া না পেয়ে তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে দেখে আমরা দুজনই অজ্ঞান। তাড়াতাড়ি এম্বুলেন্স ডেকে এই ক্লিনিকে নিয়ে আসে। প্রথমে ডাক্তার দেখে কিছুই বুঝতে পারছিল না। শুধু বলল খারাপ ধরনের কোন এলার্জির কারণে এরকম হতে পারে। তনুর অবস্থা বেশী খারাপ হওয়ায় আইসিইউ তে ভর্তি করা হয়েছে।

দশমিনিট পর ডাক্তার এল আমার কেবিনে। আমার সাথে একা কথা বলতে চায়।

"কেমন লাগছে এখন?"
"ভাল, তনু কেমন আছে?"
"আপনার ওয়াইফের অবস্থা একটু ক্রিটিক্যাল। তবে আশঙ্কামুক্ত। আর একটু দেরী করলে কী হত বলা যায় না। কালকের মধ্যে ভাল হয়ে যাবে আশা করছি।" বুঝলাম সুমনরা এখানে আমাদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।
"থ্যাংকস।"
"যতটুকু বুঝতে পারছি, এটা আপনাদের হানিমুন ছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম সামুদ্রিক কোন খাবার থেকে এই এলার্জি।"
"কিন্তু আমরাতো কাল রাতে চিকেন খেয়েছি।"
"হুম। আমি শুনেছি। তারপরই চিটাগং এ টেষ্ট করতে পাঠিয়েছিলাম। আমার সন্দেহই ঠিক। স্যরি।"
"মানে?"
"দেখুন আপনাদের নতুন সংসার। কিন্তু বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। এটা আর দশটা এলার্জির মতই। কিন্তু কখনও তা প্রাণঘাতিও হতে পারে।"
"সরাসরি বলুন ডক্টর।" আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছিল।
"আপনাদের এলার্জির কারণ আপনারা নিজেরাই। প্রতি পঞ্চাশ মিলিয়ন কাপলের মাঝে একজোড়া মানুষের এটা হতে পারে। এরকম কাপলরা ঘনিষ্ঠ হলেই এলার্জিতে আক্রান্ত হয়। আপনারা আর কখনও শারীরিকভাবে মিলিত হতে পারবেন না। নাহলে আবার এরকম হবে। এর কোন ওষুধ নেই।"
আমি কোন জবাব খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শুধু কাল রাতে দেখা তনু চোখের সামনে ভাসছিল। হায়রে এরই নাম কপাল। ধুস শালা!! সারাজীবন প্লেটনিক প্রেম করে আমার কম্ম নয়।



আগের গল্পঃ ১)লোভী , ২)ইচ্ছে পূরণ, ৩)সাজকন্যা
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×