somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক জন বি এস এফ জওয়ানের আত্মকথন।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অর্জুন রাও এর মেজাজ ভীষণ খারাপ তার সঙ্গী বাহাদুর সিং এর উপর। ব্যাটার নামই বাহাদুর! কাজের বেলায় ভীতুর ডিম। ঐ ব্যাটার জন্যই শিকার টা হাত ছাড়া হয়ে গেল।
আরে, চিৎকার শুনেই কি গুলি চালিয়ে দিতে হবে নাকি? তাও আবার মেয়ে ছেলের চিৎকার!
অর্জুন রাও ভাবে মেয়েটা খাসা মাল ছিল। বয়সও কম! কাটা তারের বেড়ায় আটকেই তো ছিল। শুধু ধরে আমাদের সীমানার ভেতরে নিয়ে গেলেই হতো। ২-৩ দিন সেই মজায় কাটানো যেতো!
তারপর ভাবা যেতো যে গুলি করবো না কি আসামের ঐ সর্দারনীর কাছে দিয়ে দেবো। অবশ্য বেশী জওয়ানরা টের পেয়ে গেলে কোন মেয়েই আর সর্দারনীর কাছে দেয়ার মতো অবস্থায় থাকে না। তখন ওটা এমনিতেই মরে যায়। গুলিও করতে হয় না।
ঐ বাহাদুর ব্যাটায় আসলেই গাধা। চিৎকার শোনার সাথে সাথেই ১০-১২ টা গুলি মেরে দিয়েছে! নতুন জওয়ান নিয়ে এই সমস্যা।
গাধাটা তো লাশ আনতে গিয়েও আরেক কান্ড করলো। মেয়েছেলের এত্ত গুলা গুলি খাওয়া লাশ দেখে ভয়েই অজ্ঞান! শেষ পর্যন্ত অর্জুন রাও কেই লাশ টা টেনে আনতে হয়েছে।
অর্জুন রাও ভাবে আজ কাল সীমান্তে মেয়েছেলে সহজে পাওয়াই যায়না। যাও একটা পাওয়া গিয়েছিল ঐ গাধাটার জন্য তাও গেল। অর্জুন রাও ভাবতে থাকে গরম থাকলে লাশ দিয়েও কাজ চালিয়ে দেয়া যেতো কিন্তু গাধাটা এত্তগুলো গুলি মেরেছে যে লাশে হাত লাগানরও জো নেই আর...
যাক কি আর করা। অর্জুন রাও ভাবে এখন সীমান্তে কম বয়সী কোন ছেলে পেলে ওটাকেই দিয়ে কাজ চালাতে হবে।
হঠাৎ অর্জুন রাও এর মনে পড়ে যায় মাসখানেক আগের কথা। ৩ টা রাখাল ছেলেকে ওরা ৫ জন মিলে ধরে এনেছিল। তারপর...
কাজ শেষে মজা হয়েছিল আরও বেশী! ৩ টা কে সীমান্তের কাছে নিয়ে অর্জুন রাও বলেছিল, “যা, তেরে দেশ মে ভাগ যা!”
৩ টা যখন দৌড়াতে শুরু করে তখন ওদের কে টার্গেট বানিয়ে শুটিং প্রাকটিস করে ও এবং রাহুল বোস। অর্জুনের দৃঢ় বিশ্বাস ও নিজে ২ টাকে ফেলেছিল। কিন্তু রাহুল তা মানতেই রাজি না! রাহুলের দাবি ও ২ টা কে ফেলেছে! ৩ টা কেই ফেলার পর ওরা কাছে গিয়ে আরও গুলি করে সব আলামত নষ্ট করার জন্য।
অর্জুন ভাবে এই বাঙ্গালী গুলা আর কিছু না পারলেই লাশের জন্য চিল্লাতে পারে! তাই মাঝে মাঝে ওদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্যই লাশ ফেরত দিতে হয়।
আরে বাবা আমরা তো তোদের উপকারই করছি। ছোট্ট একটা দেশ তোদের আর এত্ত মানুষ। আমরা মেরে একটু কমালে তোদেরই তো ভালো!
মানবাধিকার সংস্থা গুলোর কথা মনে পড়ে অর্জুন রাও এর হাসি পেল। ওরা নাকি বের করেছে ২০১০ সালে বি এস এফ নাকি ৭৪ টা বাঙ্গালী কে মেরেছে! ৭৪ জন কে নিয়ে সেকি লাফালাফি ওদের! আসল সংখ্যা জানলে কি করতো কল্পনা করার চেষ্টা করলো অর্জুন রাও।
একথা ভাবতে ভাবতে অর্জুন রাও নিজের রাইফেলে হাত বুলাতে থাকে। ওর এই রাইফেলে চাকু দিয়ে কাটা ১৭ টা দাগ আছে। দাগ গুলোয় আদর করে হাত বুলায় অর্জুন। ওর আগের রাইফেলে দাগ ছিল ৩১ টা। প্রতিবার একটা করে গরুখেকো বাঙ্গালী মারার পর অর্জুন রাও রাইফেলে একটা করে দাগ কেটেছে। হুহ! ৭৪, ৭৪ কোন সংখ্যা হল? ভাবে অর্জুন রাও।
কয়েক বছর আগের কথা মনে হয়ে অর্জুন রাও এর চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। এক অপারেশনে কুত্তা বি ডি আর গুলা ১৩-১৪ জন বিএস এফ জওয়ানকে মেরে ফেলেছিল। কুত্তা গুলো বেশী বেড়েছিল বলে ওদের একটু শিক্ষা দিতেই বীর বি এস এফ জওয়ানরা বাঙ্গাল দেশের ভেতরে ঢুকেই ওদের শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু দেখা গেল বি ডি আর কুত্তা গুলা শুধু ঘেউ ঘেউই করেনা! কামড়ও দিতে জানে!
এর পর থেকে ওরা আর অবশ্য আর কামড় দিতে পারেনি। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেই ওদের বিষ দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এখন আর ওদের কিছু করার সামর্থ্য নেই। একথা ভেবে অর্জুন রাও এর মুখে আবার হাসি ফিরে আসে।

এতসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ অর্জুন রাও এর চোখ চক চক করে ওঠে! শিকার দেখতে পেয়েছে সে! একটা পুরো পরিবার মনে হচ্ছে। ফিরে যাচ্ছে না ভেতরে আসছে? সেটা ব্যাপার না। ব্যাপার হল সাথে একটা মেয়েছেলে আছে! মুচকি হাসতে হাসতে অর্জুন রাও তার রাইফেলের ট্রিগারে চাপ বাড়াতে থাকে...





তারপর দিন বাংলাদেশের কোন এর খবরের কাগজে নিউজ বের হয়ঃ “কুড়িগ্রাম সীমান্তে আবারও বি এস এফ এর গুলি। এক পরিবারের ৩ জন নিহত। নিহতদের সাথে আরও কেউ ছিল কিনা তা এখনও জানা যায় নি। নিহতদের লাশ বি এস এফ নিয়ে গেছে। লাশ ফেরত চেয়ে বি ডি আর পতাকা বৈঠক এর আহ্বান করেছে...


Inspired By:
বিএসএফের গুলি কেড়ে নিল ফেলানীর বিয়ের স্বপ্ন
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:২৪
২১টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×