খুন হয়ে যেতে পারেন শেখ হাসিনা।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আগামি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে যে চাপা গুমোট অস্থিরতা বিরাজ করছে, তার অন্ত ঘটতে পারে একটি মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের মাধ্যমে। বর্তমানে সরকারি ও বিরোধি দলের মধ্যে এই নিয়ে সংকট নিরসনে মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের মধ্যস্থতা বিফলে গিয়েছে। এমনকি যে চীন কোনদিন অন্য দেশের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি, সেও বর্তমান সংকটের ব্যাপারে মুখ খুলেছে। মোদ্দা কথা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশে ও বিদেশে ব্যাপক উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
আওয়ামি লিগের দেশ পরিচালনায় যে সীমাহীন ব্যার্থতা সেটাকে আড়াল করে রাখলেও বলা যায় যে, সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস,সংবিধান ও বিচার বিভাগকে শ্রদ্ধার অযোগ্য, আর নব্য বাকশাল স্থাপনের কারণে আওয়ামি লিগের জনপ্রিয়তা এখন শুন্যের কোঠায়। আর চারতপ্রেমের যে নজির তারা স্বাধীন বাংলাদেশে শুরু করেছে, তার তুলনা শুধু হতে পারে পলাশি পুর্ব মীর জাফরের সাথেই।
এমতাবস্থায় আগামি নির্বাচনে আওয়ামি লিগের ক্ষমতাসীন হবার আর কোন সুযোগ নেই।
কিন্ত ইতিমধ্যেই অখন্ড ভারতের স্বপ্নদ্রস্টারা আওয়ামি লিগকে যে করেই হোক ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় দেখতে আগ্রহি। এবং কুটনৈতিক নির্লজ্জতার সব সীমা ছাড়িয়ে ভারত সরকার সরাসরিই বলে গিয়েছে যে তারা আওয়ামি লিগকেই আবার ক্ষমতায় দেখতে আগ্রহি।
কিন্তু মুখে বললেই তো আর হয়ে গেলো না। হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার সব কিছু লেজে গোবরে করে ফেলেছে। এমনকি দেশের প্রধান প্রধান মিডিয়াগুলি ভারতকে দেয়া সব অন্যায় সুযোগ সুবিধা গুলির ব্যাপারে মুখে কুলুপ এটে থাকলেও, হাসিনা ও তার মন্ত্রিবর্গের বালখিল্যতার কারণে সেগুলির দিকে এখন সাধারণ মানুষের নজর পড়েছে। একে তো দুঃশাসন, তার উপর নব্য রাজাকারি করার ধৃস্টতা? ব্যাস ! চাপা ক্ষোভে ফুসছে জনতা। যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে বগত ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে।
ভারত কোনমতেই চায় না যে আওয়ামি লিগের এই ক্ষমতার দৈর্ঘ্যে কোন রকম ছেদ পড়ুক। তাই যে করেই হোক তারা চায় দল হিসাবে যেন আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আবারও আসে। তাই এই ব্যাপারে যা যা করার তারা সেটা করবে।
পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, যেই প্রেক্ষাপটে ইন্দিরা গান্ধির মৃত্যু হয়েছিল, সেই একই ধরণের প্রেক্ষাপট বাংলাদেশেও চরমভাবে বিরাজমান। সেই সময় শিখদের আলাদা রাস্ট্রের দাবিতে তাদের পবিত্রতম শহর অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে ইন্দিরার আদেশে সেনা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। সাথে ভারতের অর্থনৈতিক সংকটও ছিল প্রবল। এই দুই কারণে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের জন্য নির্বাচনি বৈতরনি পার হওয়া অসম্ভব ছিলো।
এমতাবস্থায় কংগ্রেসের বাঘা বাঘা নেতাদের পরিকল্পনায় খুন হয় ইন্দিরা। তাও শিখ ধর্মীয় দেহরক্ষির গুলিতে। ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মারে কংগ্রেস। ইন্দিরার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের সাধারণ মানুষের সহানুভুতি পায় তারা। আরেক দিকে শিখদের সশস্র বিদ্রোহকেও বিশ্বাসঘাতকতা বলে সাধারণ ভারতীয়দের কাছে প্রমান করতে সমর্থ্য হয় তারা। নিজেদের আড়াল করে রাখতে তারাই রাজনীতিতে পুরাই অনভিজ্ঞ এবং অনুৎসাহি রাজিব গান্ধিকে নির্বাচনে দাড় করিয়ে সহানুভুতির পুরা ফায়দা লোটে কংগ্রেস। এবং আবারও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।
যে কংগ্রেস তাদের দলিয় স্বার্থে ইন্দিরাকে খুন করাতে পারে, তাদের পক্ষ্যে তাদেরই একান্ত আজ্ঞাবহ কৃতদাস এবং তাদের অর্থে লালিত শেখ হাসিনাকে খুন করানো কোন ব্যাপারই না।
এমনিতেই ইউনুস ইস্যুতে বিশ্বের শক্তিশালি লবির বিরাগভাজন হয়ে আছেন হাসিনার। তার পর সেই আগুণে ঘি দিতে রাশিয়ার সাথে অস্র চুক্তি করে এসেছেন। ফলে হাসিনার মর্মান্তিক বিদায়ে সেই লবিতে তেমন কোন উচ্চবাচ্য হবে না। তাছাড়া বিশ্ব শক্তি এই অঞ্চলে যে কোন পদক্ষেপে ভারতের বিরোধীরা করবে না। কারণ চীনকে ঠেকাতে এবং ভারতের বিশাল বাজারে শক্ত অবস্থান আরো শক্তিশালি করতে ভারত তোষন তাদের নীতিরই অংশ মাত্র। তাই হাসিনাকে চিরতরে সরিয়ে দিতে ভারত যদি কোন পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তাদের পুরো সম্মতি থাকবে।
আর পিলখানা হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীতে যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে, শেখ হাসিনার কিছু হলে তারাও প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। তাছাড়া এই তো দুইদিন আগেই ভারতের ইস্টার্ণ কমান্ডের সর্বাধিনায়ক লে যে সর্বজীত সিং এসে তিন বাহিনী প্রধানের সাথে দেখা করে গিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ভারতের প্রতিটা মানুষই দেশপ্রেমের অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। আমাদের নেতা নেত্রিদের মত বিনা স্বার্থে তারা কোন দেশ ভ্রমন করে না।
আর হাসিনা খুন হলে খুব সহজেই প্রচার করা যাবে যা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার অপরাধে হাসিনাকে জীবন দিতে হয়েছে। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অনেক শ্রদ্ধা আর আবেগের অংশ সেহেতু আওয়ামি লিগের সব দোষত্রুটি একেবারেই অগ্রাহ্য করে দেশের মানুষ আবারও আওয়ামি লিগকেই ভোট দিবে। সঙ্গে তো ভারতবান্ধব মিডিয়া, সুশিল সমাজ, সাংবাদিক, সম্পাদক, লেখক, নাটক পাড়ার লোকজন, কলামিস্ট এদের সমস্বরের হুক্কা হুয়া তো থাকবেই। তখন শিখন্ডি হিসাবে হাসিনা পুত্র জয় বা শেখ মুজিব তনয়া শেখ রেহানাকে প্রধানমন্ত্রি পদে দাড় করানো হবে।
ফলে আওয়ামি লিগের ক্ষমতায় থাকার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। সেই সাথে ভারত তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আরো ৫ বছর সুযোগ পাবে। তবে কখন কাকে দিয়ে এই কাজটি করানো হবে, সেই পরিকল্পনার কথা কেউ কোনদিন জানতে পারবে বলে মনে হয় না।
তাই নির্বাচন নিয়ে সর্বদল গ্রাহ্য একটি সমঝোতা না হলে, শেখ হাসিনার প্রাণনাশের আশংকা উড়িয়ে দেবার মত নয়।
হাসিনার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে আওয়ামি লিগ ও ভারত দুইই লাভবান হতে পারবেন। আর এই ব্যাপারে আওয়ামি লিগের পুরানো কিন্তু বঞ্চিত অপমানিত নেতাদের সম্পৃত্ত করে ইতিমধ্যেই একটি পরিকল্পনা যে হয়ে যায়নি, তাই নিশ্চয়তা দেয়া যায় না।
বাংলাদেশ এই ধরণের সব ষড়যন্ত্র এবং রক্তপাত থেকে মুক্ত থাক, কায়মনবাক্যে সেই প্রার্থনাই করছি।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
তুই পাগল তোর বাপে পাগল
রাতে অর্ধেক কাউয়া ক্যাচাল দেইখ্যা হুর বইল্যা— মোবাইল ফোনের পাওয়ার বাটনে একটা চাপ দিয়া, স্ক্রিন লক কইরা, বিছানার কর্নারে মোবাইলটারে ছুইড়া রাখলাম।
ল্যাপটপের লিড তুইল্যা সার্ভারে প্রবেশ। বৃহস্পতিবারের রাইত... ...বাকিটুকু পড়ুন
যত দোষ নন্দ ঘোষ...
"যত দোষ নন্দ ঘোষ"....
বাংলায় প্রচলিত প্রবাদগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’। যে যত দোষ করুক না কেন, সব নন্দ ঘোষের ঘাড়েই যায়! এ প্রবাদের সহজ অর্থ হচ্ছে, দুর্বল মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আমাদের বাহাস আর লালনের গান
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হৈচৈ হচ্ছে, হৈচৈ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। একটা পক্ষ আগের সরকারের সময়ে হৈচৈ করত কিন্তু বর্তমানে চুপ। আরেকটা পক্ষ আগে চুপ ছিল এখন সরব। তৃতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ থাকে না কেউ থেকে যায়
চমকে গেলাম হঠাৎ দেখে
বহুদিনের পরে,
নীল জানালার বদ্ধ কপাট
উঠলো হঠাৎ নড়ে।
খুঁজিস না তুই আর খুঁজিনা
আমিও তোকে আজ,
আমরা দু'জন দুই মেরুতে
নিয়ে হাজার কাজ।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আরও একটি কবর খোঁড়া
গোরস্থানে গিয়ে দেখি
আরও একটি কবর খোঁড়া
নতুন কেউ আজ মরেছে
এমন করে বাড়ছে শুধু
কবরবাসী, পৃথিবী ছেড়ে যাবে সবাই
মালাকুল মওত ব্যস্ত সদাই
কখন যে আসে ঘরে
মৃত্যুর যে নেই ক্যালেন্ডার
যে কোন বয়সে আসতে পারে
মৃত্যুর ডাক,... ...বাকিটুকু পড়ুন