অসিত যতই বীরপুরুষ হোক না কেনো! শ্রেয়া যদি একবার বলে শপিং করবে তাহলে তার পা কাপতে বাধ্য। না অসিতের পা বিল দেওয়ার জন্য বা টাকা গচ্ছা দেওয়ার জন্য কাপে না। অসিত জানে শ্রেয়ার শপিং করা মানে সম্পূর্ণ নরসিংদী দুই থেকে তিন বার চক্কর দেওয়া।
মেয়েটা পারেও বটে। শপিং করতে কোন ক্লান্তি নেই। সারা মুখ চোখ বেয়ে শুধু আনন্দ বয়ে যায়। অসিতকে পিছন পিছন থাকলেও হবে না। সাথে সাথে থাকতে হবে। এটা কেমন হলো? এটা কিনবো? তুমি দাম বলো। আরো কত কি!
ইন্ডেক্স প্লাজা থেকে শুরু হয়। ইন্ডেক্সের নিচতলার প্রতিটি দোকানদার শ্রেয়ার মুখ চিনে। দোকানে দোকানে ঘুরবে, কাপর দেখবে কিন্তু পছন্দ হবে না। মাঝে মাঝে দোকানদার বলে, “আপা কি শুধু দেখতেই আসছেন?”
শ্রেয়া বলে, “দেখছি, পছন্দ হলে অবশ্যই কিনবো।”
“এই অসিত দ্যাখো তো এটা কেমন?”
“সুন্দর। খুব সুন্দর। তোমাকে মানাবে খুব। নিয়ে নেও।” অসিত বলে খুব প্রফুল্ল ভাবে। তাকে মনমরা হয়ে থাকলে চলবে না। থাকতে হবে হাসি খুশি। যেন শপিং করতে তার খুব ভালো লাগছে।
শ্রেয়া বলে, “ দ্যাত, যাও তোমার কোন পছন্দই নাই।”
অসিত জানে, এ দেখাই শেষ দেখা নয়। ইন্ডেক্সের পাট ঘুটিয়ে হেটে রওনা দিবে কালি বাজার। কালি বাজারের সামনের থ্রি পিছ মার্কেটের এপাশ থেকে ওপাশ তিন বার চক্কর দিবে। যথারীতি পিছনে অসিত। হাতে মোবাইল থাকলে হবে না। মন্দিরের উপরে দুইটা দোকান আছে। সেখানে যেতেই হবে।
তবে প্রায়ই মন্দিরের সাথের দোকান থেকে জামা পছন্দ হয়। ওদের কালেকশন নাকি ইসলাম পুরের। পছন্দ হলেও সমস্যা। দাম হয়। ঠকে যাওয়ার মেয়ে তো শ্রেয়া নয়।
শ্রেয়া দাম জিজ্ঞাস করে, “ কত রাখবেন?”
দোকানদার বলে, “এটা নতুন কালেকশন আপা। ৪২০০ ট্যাকা পরবো।”
শ্রেয়া বলে, “৬০০ ট্যাকা পারবেন?” বলেই উঠে চলে যাওয়ার ভান করে।
দোকানদার পিছন থেকে ডেকে বলে, “ আপা ৪০০০ হলে নিয়া যাইয়েন।”
শ্রেয়াও কম যায় না। সে বলে “তাহলে ৮০০ ট্যাকা রাখেন।”
অসিত হলে তো প্রথম ঠেলাই ১৫০০ টাকা বলতো।
কিন্তু আশ্চর্যের কথা দোকানদার শেষমেশ ৮৫০ টাকায় দিয়ে দেয়।
মাঝে মাঝে শ্রেয়ার শপিং দুই দিন ব্যাপী হয়।
(চলবে)